X
রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫
২২ আষাঢ় ১৪৩২
অভিযুক্ত দেবলীনা সুর

‘বৃহন্নলা’য় এবার গান বিতর্ক!

ওয়ালিউল মুক্তা
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, ১৬:০০আপডেট : ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, ১৪:০৫

প্রথমে গল্প, এরপর গান নিয়ে বিতর্কের অভিযোগে প্রশ্নবিদ্ধ হলো চলচ্চিত্র 'বৃহন্নলা'। অভিযোগ উঠেছে ২০১৪ সালের শ্রেষ্ঠ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারঘোষিত এ চলচ্চিত্রটির একটি গান ভারতীয় ছবি থেকে হুবহু নকল করা। শুধু হিন্দি কথাগুলোকে বাংলায় রূপান্তর করা হয়েছে। অথচ গীতিকার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে গানটির গায়িকা দেবলীনা সুরের নাম!

মুরাদ পারভেজ ও দেবলীনা  সুর ২০০৯ সালে ভারতীয় হিন্দি ভাষার ‌'রেইনকোট'-এ প্রায় একই কথার একটি গান ব্যবহার করা হয়েছিল। যার সুরটিও বেশ কাছাকাছি। ভারতের প্রশংসিত সংগীত পরিচালক দেবজ্যোতি মিশ্রর সংগীতায়োজন ও সুরে গানটির কথা ছিল এরকম- ‘পিয়া তোরা ক্যায়সা আভিমান/সাঘান সাওয়ান লায়ি/কাদাম বাহার/মাথুরা সে ডোলি লায়ে/চারো কাহার।’

আর ‘বৃহন্নলা’ ছবিতে ব্যবহৃত গানের কথা হলো- ‘প্রিয় তোর কিসের অভিমান/ সঘন শ্রাবণ এল পায়ে পায়ে/ মথুরার পালকি এল চাদর গাঁয়ে/ এল না এল না প্রিয় সখা আমার/ আঙিনা হলো সুনসান।’

আরও মজার বিষয় হচ্ছে, ২০১৪ সালে ‘বৃহন্নলা’র এ গানটি নির্মাণের সময় বেশ ঘোষণা দিয়ে এর প্রচারণা চালোনো হয়েছে। সেসময় দেশের প্রায় সবগুলো সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম ছিল এমন- ‘নতুন চলচ্চিত্রে দেবলীনার কথা-সুরে গান।’

সে সময় বিভিন্ন পত্রিকায় দেবলীনার মন্তব্য ছিল এ রকম- ‘কলকাতায় রবীন্দ্রসংগীতের ওপর পড়াশোনা করে দেশে এসেছি এক বছর হলো। ভাবলাম নিজের একক অ্যালবাম করবো। এ কারণে ইমন সাহা দাদার শরণাপন্ন হই। তখন তিনি বলেন একটি গানের দুটি লাইন লিখে দে। আমি দুই লাইন লিখে দিলে, তিনি বলেন পুরোটাই লিখে দে। পরে এটি বৃহন্নলাতে রাখা হয়। এভাবেই গানটির সৃষ্টি।’

‘রেইনকোট’ ছবির গানটি:

বিষয়টি নিয়ে মুরাদ পারভেজ, ইমন সাহা ও দেবলীনা সুরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। এরমধ্যে দেবলীনা এখন দেশের বাইরে আছেন। পরিচালক মুরাদ পারভেজ ফোন ধরেননি। আর গানটির সংগীত পরিচালক ইমন সাহা দিলেন নতুন তথ্য।

তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এটা কোনওভাবেই নকল কিছু নয়। এটি তিন-চার  শ’ বছর আগের একটি বন্দিস। তাই ছবিটি সেন্সরে জমা দেওয়ার সময় গানটির সুর প্রচলিত দেওয়া আছে। আর গানের কথার বাংলা অনুবাদক ও কণ্ঠশিল্পী হিসেবে নাম গেছে দেবলীনার।’

তিনি আরও বলেন, ‘‘এই বন্দিসটি আমি শিখেছি এ আর রাহমান স্যারের কাছে যখন পড়তে যাই। এখনও প্রায়ই এই বন্দিসটি আমি গাই। সে সময় ‘বৃহন্নলা’র ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোরের কাজ করছিলাম আমি আর মুরাদ পারভেজ। মুরাদ আমার কণ্ঠে বন্দিসটি শুনেই বললো এটি তার ছবিতে ব্যবহার করতে হবে। তখন আমি ভারতে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, এই বান্দিস ব্যবহার করতে কপিরাইটের কোনও সমস্যা নেই। এটি তিন-চার  শ’ বছর আগের প্রচলিত বন্দিস। অথচ এই সাধারণ বিষয়টি নিয়ে অযথা বিতর্ক হচ্ছে। কেউ কিছু না জেনেই যা ইচ্ছে তাই বলছে। অথচ যেসব নিয়ে বলা উচিত, সেসব নিয়ে কারও কোনও মাথা ব্যাথা নেই।’’
‘বৃহন্নলা’ ছবির গানটি:






কিন্তু, ইমন সাহার এ দাবির বিপরীতে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। ছবির পরিচিতিতেও গীতিকার হিসেবে রাখা হয়েছে দেবলীনার নাম! এমনকি মুরাদ পারভেজ ও দেবলীনা নামে তৈরি ইউটিউব চ্যানেলে গানটি আপলোড করা হয়েছে। যেখানে মুরাদ গীতিকার হিসেবে দেবলীনার নাম ব্যবহার করেছেন। আর সেখানে দেবলীনার দাবিও একই। তিনি গানটির গীতিকার ও সুরকার।

উল্লেখ্য, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০১৪ ঘোষণার একদিনের মাথায় বিতর্কের মুখে পড়ে এ বছরের নির্বাচিত শ্রেষ্ঠ ছবি ‘বৃহন্নলা’র পরিচালক-প্রযোজক মুরাদ পারভেজ। এ ছবির জন্য শ্রেষ্ঠ কাহিনিকার ও শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা হিসেবেও পুরস্কার পেতে যাচ্ছেন তিনি। অথচ সেই পরিচালক-চিত্রনাট্যকারের বিরুদ্ধেই গল্প ‘চুরি’র গুরুতর অভিযোগ উঠেছে কলকাতা থেকে। তাদের দাবি, ‘বৃহন্নলা’র প্রায় পুরো গল্পই নেওয়া হয়েছে সৈয়দ মুস্তফা সিরাজের ছোট গল্প ‘গাছটি বলেছিল’ থেকে।

/এম/এমএম/

সম্পর্কিত
বিনোদন বিভাগের সর্বশেষ
হেড অব স্টেট: প্রিয়াঙ্কা বন্দনায় মাধবন   
হেড অব স্টেট: প্রিয়াঙ্কা বন্দনায় মাধবন   
হৈমন্তী শুক্লার কণ্ঠে আবারও বাংলাদেশের গান  
হৈমন্তী শুক্লার কণ্ঠে আবারও বাংলাদেশের গান  
প্রকৃতিকন্যা মিম
প্রকৃতিকন্যা মিম
সামনে এলো সালমানের নতুন সিনেমার ফার্স্টলুক
সামনে এলো সালমানের নতুন সিনেমার ফার্স্টলুক
গোয়েন্দা সিরিজ নির্মাণে ফেরদৌস ওয়াহিদ
গোয়েন্দা সিরিজ নির্মাণে ফেরদৌস ওয়াহিদ