X
রবিবার, ০৫ মে ২০২৪
২২ বৈশাখ ১৪৩১

মিয়ানমারের রোহিঙ্গা বিষয়ক তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদন ‘ত্রুটিপূর্ণ’: এইচআরডব্লিউ

বিদেশ ডেস্ক
০৫ জানুয়ারি ২০১৭, ১১:৫৮আপডেট : ০৫ জানুয়ারি ২০১৭, ১৯:৪২
image

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গাদের ওপর নিরাপত্তাবাহিনী কোনও ধরনের নিপীড়ন চালায়নি বলে দেশটির সরকার গঠিত তদন্ত কমিশন যে প্রতিবেদন দিয়েছে, তাকে ‘পদ্ধতিগতভাবে ত্রুটিপূর্ণ’ বলে উল্লেখ করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।
রোহিঙ্গাদের ওপর পুলিশি নির্যাতনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর চার পুলিশ কর্মকর্তাকে আটক করে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ। এর পরদিন বুধবারই সরকারি তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। একইদিনে ওই প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে এইচআরডব্লিউ।
মিয়ানমার সরকার জানিয়েছে, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার জন্য বিশ্বব্যাপী যে চাপ সৃষ্টি হয়েছে, তার বিপরীতেই ওই তদন্ত কমিশন গঠিত হয়।
মিয়ানমারের রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ওই তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, “মংডুর ‘বাঙালি’ অধিবাসীদের সংখ্যা, মসজিদ ও ধর্মীয় স্থাপনাই প্রমাণ করে সেখানে কোনও গণহত্যা বা নিপীড়নের ঘটনা ঘটেনি।”
উল্লেখ্য, মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের পৃথক জাতিসত্তা বা মিয়ানমারের নাগরিক বলে পরিচয় দিতে নারাজ। রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক ‘বাঙালি’ অবৈধ অভিবাসী বলে উল্লেখ করে আসছে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ।  
কমিশন দাবি করেছে, মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, অবৈধ আটক, নির্যাতন ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগের বিষয়ে যথাযথ প্রমাণ পাওয়া গেলে, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে তারা প্রস্তুত রয়েছে।
ধর্ষণের বিষয়ে তদন্তের সময় গ্রামবাসী ও স্থানীয় নারীদের সঙ্গে কথা বলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার মতো যথেষ্ট প্রমাণ পায়নি বলেও প্রতিবেদনে দাবি করেছে তদন্ত কমিশন।

উল্লেখ্য, ওই কমিশনের প্রধান এমন একজন সাবেক সেনা কর্মকর্তা, যাকে মার্কিন কর্তৃপক্ষ কালো তালিকাভুক্ত করেছে।

এই প্রতিবেদনের বিপরীতে এইচআরডব্লিউ একে ‘পদ্ধতিগতভাবে ত্রুটিপূর্ণ’ বলে উল্লেখ করে বলেছে, ‘এটি পূর্ব-নির্ধারিত উপসংহারে পৌঁছানোর এক ধ্রুপদী উদাহরণ। আন্তর্জাতিক চাপ নিরসনের জন্য যেখানে দেখানো হয়, অবস্থা অতোটা খারাপ নয়।’

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ৪৮৫ জন বেসামরিকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, কিন্তু কোনও বিবরণ জানানো হয়নি।

উল্লেখ্য, গত বছর অক্টোবরের ৯ তারিখে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ এলাকায় সন্ত্রাসীদের সমন্বিত হামলায় ৯ পুলিশ সদস্য নিহত হওয়ার পর তার দায় চাপানো হয় রোহিঙ্গাদের ওপর। আর তখন থেকেই শুরু হয় সেনাবাহিনীর দমন প্রক্রিয়া।

জাতিসংঘের মতে, মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের জের ধরে সংঘর্ষে রাখাইন রাজ্যে নিহতের সংখ্যা অন্তত ৮৬ জন। এখন পর্যন্ত ঘরহারা হয়েছেন ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ। পালাতে গিয়েও গুলি খেয়ে মরতে হচ্ছে তাদের। মিয়ানমারে ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাস করে। রাখাইন রাজ্যে এমন উদ্বেগজনক পরিস্থিতি সৃষ্টির পরেও চলমান দমন প্রক্রিয়ার সঙ্গে নিজেদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি অস্বীকার করে দায় এড়াতে চাইছে দেশটির সরকার। রোহিঙ্গারা নিজেরাই নিজেদের বাড়িঘর পোড়াচ্ছে বলেও দাবি করছে মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ।

এর আগে ‘জাতিগত নির্মূল প্রক্রিয়ার’ ধারাবাহিকতায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ঘরবাড়িতে আগুন লাগিয়েছে বলে একাধিকবার অভিযোগ করে এইচআরডব্লিউ। স্যাটেলাইট থেকে প্রাপ্ত ছবি বিশ্লেষণ করে তারা এ দাবি জানায়।

সূত্র: আল-জাজিরা।

/এসএ/

সম্পর্কিত
তাইওয়ান প্রণালিতে আবারও চীনা সামরিক বিমান শনাক্ত
চীনের দক্ষিণাঞ্চলে সড়ক ধসে নিহত ৩৬
লাইয়ের অভিষেক পরবর্তী চীনা সামরিক মহড়া নিয়ে সতর্ক অবস্থানে তাইওয়ান
সর্বশেষ খবর
বাজেটে প্রতিবন্ধীদের মাসিক ভাতা ৫ হাজার করাসহ ১১ দাবি
বাজেটে প্রতিবন্ধীদের মাসিক ভাতা ৫ হাজার করাসহ ১১ দাবি
দ্বিতীয় সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভ, আটক ২ সহস্রাধিক
দ্বিতীয় সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভ, আটক ২ সহস্রাধিক
মিল্টন সমাদ্দারের আরও ৭ দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ
মিল্টন সমাদ্দারের আরও ৭ দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ
বাংলাদেশের গ্রুপে দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড ও উইন্ডিজ
নারীদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপবাংলাদেশের গ্রুপে দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড ও উইন্ডিজ
সর্বাধিক পঠিত
মাঠ প্রশাসনে বিতর্কিত কর্মকর্তাদের লাগাম টানবে সরকার
মাঠ প্রশাসনে বিতর্কিত কর্মকর্তাদের লাগাম টানবে সরকার
রবিবার থেকে স্কুল-কলেজ খোলা, শনিবারও চলবে ক্লাস
রবিবার থেকে স্কুল-কলেজ খোলা, শনিবারও চলবে ক্লাস
জাল দলিলে ৫০ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ!
জাল দলিলে ৫০ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ!
মিল্টন সমাদ্দারের তিন মামলার বাদীরই মুখে কুলুপ
মিল্টন সমাদ্দারের তিন মামলার বাদীরই মুখে কুলুপ
স্বর্ণের ভরিতে বাড়লো ১ হাজার টাকার বেশি
স্বর্ণের ভরিতে বাড়লো ১ হাজার টাকার বেশি