X
সোমবার, ০৬ মে ২০২৪
২৩ বৈশাখ ১৪৩১
রয়টার্সের প্রতিবেদন

শপথের দিনেই ট্রাম্পের অভিবাসনবিরোধী অ্যাকশন

বিদেশ ডেস্ক
২০ জানুয়ারি ২০১৭, ১১:৫৭আপডেট : ২০ জানুয়ারি ২০১৭, ১৫:৪৩
image

ডোনাল্ড ট্রাম্প আনুষ্ঠানিক দায়িত্বের প্রথম দিনেই অভিবাসন ইস্যুতে কড়াকড়ি আরোপের পরিকল্পনা করছেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মেক্সিকো সীমান্তে প্রাচীর নির্মাণ এবং ওবামা ঘোষিত নীতিমালায় পরিবর্তন আনাসহ বেশ কিছু ব্যাপারে নির্বাহী ‌আদেশ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন তিনি। ডোনাল্ড ট্রাম্পের সহযোগীদের উদ্ধৃত করে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স খবরটি নিশ্চিত করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের নির্বাহী আদেশ বাস্তবায়ন করতে কংগ্রেসের অনুমতির জন্য অপেক্ষা করতে হয় না।
ট্রাম্পের সহযোগীরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের সবচেয়ে শক্তিশালী হাতিয়ারগুলোর একটি এ নির্বাহী আদেশ। আর সে আদেশ ব্যবহার করতে ট্রাম্প বেশি সময় নেবেন না। বৃহস্পতিবার ট্রাম্পের মুখপাত্র সিন স্পিসার সাংবাদিকদের বলেন, ‘সত্যিকারের পরিবর্তনের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে তিনি যে কেবল প্রথমদিনই ব্যবস্থা ঘোষণা করতে যাচ্ছেন তা নয়, দ্বিতীয় এবং তৃতীয়দিনও একইরকম হবে। এবং আমি মনে করি, আগামী দিনগুলোতেও আপনারা তা দেখতে পাবেন।’
দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালনকালে ওবামাকে মাঝে মাঝেই নির্বাহী আদেশ ব্যবহার করতে দেখা গেছে। অভিবাসন ও পরিবেশ আইন ইস্যুতে রিপাবলিকান-নিয়ন্ত্রিত কংগ্রেস যখন ডেমোক্র্যাট ওবামাকে কোণঠাসা করে ফেলেছিল তখন নির্বাহী আদেশকে হাতিয়ার করেছিলেন তিনি। আর নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে ওবামার প্রয়োগ করা ব্যবস্থাগুলোই আবার পরিবর্তন করাটাই ট্রাম্পের মূল লক্ষ্য।
ট্রাম্পের অন্তর্বতী দলের এক সূত্রকে উদ্ধৃত করে রয়টার্স জানায়, সম্ভাব্য ২০০টিরও বেশি নির্বাহী আদেশ নিয়ে ট্রাম্পের উপদেষ্টারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন। এসব নির্বাহী আদেশ স্বাস্থ্যসুরক্ষা, জলবায়ু নীতিমালা, অভিবাসন, জ্বালানি এবং আরও অসংখ্য ইস্যু নিয়ে। তবে প্রাথমিকভাবে ট্রাম্প কতটি নির্বাহী আদেশ অনুমোদন দেবেন তা এখনও পরিষ্কার নয়।
কংগ্রেসে বিল পাস করানোর যে ধীর গতি তা এড়াতে দায়িত্বগ্রহণের পর সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টদেরকেও শুরুর শুরুর কয়েক সপ্তাহ নির্বাহী আদেশ প্রয়োগ করতে দেখা গেছে। কখনও সরকারি দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা না থাকা ট্রাম্পও সে কৌশল প্রয়োগ করে শুরুতেই নিজের কিছু বিজয় নিশ্চিত করে নেবেন।

প্রেসিডেন্টসংক্রান্ত ইতিহাস পর্যালোচনাকারী এবং প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক জুলিয়ান জেলিজার ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ প্রসঙ্গে বলেন, ‘তিনি (ট্রাম্প) দেখাতে চান তিনি ব্যবস্থা নেবেন এবং ওয়াশিংটনের অচলাবস্থা দেখিয়ে তাকে দমিয়ে রাখা যাবে না।

ওবামা ও ট্রাম্প
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্প ফেডারেল নিয়োগ স্থগিত করতে পারেন এবং শ্রম বিভাগের একটি বিধান যেন দেরিতে কার্যকর হয় সে ব্যবস্থা নিতে পারেন। ১২ টি দেশের মধ্যকার ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ বাণিজ্য চুক্তি থেকে সরে আসার ব্যাপারেও আনুষ্ঠানিক নোটিশ দেবেন তিনি। কানাডা এবং মেক্সিকোর সঙ্গে নর্থ আমেরিকান ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট নিয়েও নতুন করে আলোচনায় যাওয়ার কথা রয়েছে তার।

ট্রাম্পের মুখপাত্র সিন স্পিসার বলেন, ‘আমি মনে করি খুব শিগগিরই আপনারা সেসব ঘটতে দেখবেন।’

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, দায়িত্বগ্রহণের পর প্রথম কয়েকদিনের মধ্যে ট্রাম্প মেক্সিকো সংলগ্ন দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্তে একটি প্রাচীর নির্মাণের নির্দেশ দেবেন বলে মনে করা হচ্ছে। ল্যাটিন আমেরিকা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনের প্রত্যাশায় যারা আসেন তাদের প্রবেশ সীমিত করতে ব্যবস্থা নেবেন তিনি। অভিবাসন ইস্যুতে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে তার উপদেষ্টারা যেসব পরামর্শ দিয়েছেন সেগুলোরই একটি এটি। ইসলামী উগ্রপন্থীদের শনাক্তে কঠোর কোনও ব্যবস্থা চালু না হওয়া পর্যন্ত নির্দিষ্ট দেশের মানুষদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরামর্শ দিয়েছেন ট্রাম্পের উপদেষ্টারা। নির্বাচনি প্রচারণা চলার সময় আমেরিকান মুসলিম নন এমন নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব করেছিলেন ট্রাম্প। তবে রয়টার্স জানিয়েছে, অভিবাসন ইস্যুতে ট্রাম্প যে নির্বাহী আদেশ দেবেন তা ধর্মের বদলে জাতীয়তার ভিত্তিতে হবে।

অন্য আরেকটি সম্ভাব্য নির্বাহী আদেশ হলো জলবায়ুর পরিবর্তন মোকাবেলার লক্ষ্যে ওবামার নেওয়া উদ্যোগ থামিয়ে দেওয়া। কার্বন নির্গতকরণ কমিয়ে আনতে ওবামা যেসব উদ্যোগ নিয়েছেন তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মিন্ত্রপরিষদ বিভাগগুলোকে বর্তমান কার্যক্রম প্রকাশ করতে  ও কাজ স্থগিত করতে এ আদেশ দেওয়া হতে পারে।

উল্লেখ্য, শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫ তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন ট্রাম্প। ইউএস ক্যাপিটলে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ওই শপথগ্রহণকে সামনে রেখে একদিন আগেই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সামরিক বিমানে করে ওয়াশিংটন পৌঁছান তিনি।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার শপথগ্রহণের পর শনিবার ভার্জিনিয়ার ল্যাংলিতে সিআইএ-এর সদর দফতর পরিদর্শন করার পরিকল্পনা করেছেন ট্রাম্প। নির্বাচনি প্রচারণার সময় সিআইএ এবং এর বিদায়ী প্রধানের কঠোর সমালোচনা করতে দেখা গেছে তাকে। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে জার্মানির নাৎসি বাহিনীর সঙ্গে তুলনা করেছেন তিনি। 

/এফইউ/বিএ/

 

সম্পর্কিত
ইসরায়েলকে অস্ত্রের চালান দেওয়া স্থগিত করলো যুক্তরাষ্ট্র?
মিসরে চলমান যুদ্ধবিরতির আলোচনা, গাজায় বোমা ফেলছে ইসরায়েল
দ্বিতীয় সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভ, আটক ২ সহস্রাধিক
সর্বশেষ খবর
আওয়ামী লীগ এখন শূন্য মুড়ির টিন: রিজভী
আওয়ামী লীগ এখন শূন্য মুড়ির টিন: রিজভী
বজ্রাঘাতে ৮ জেলায় ১০ জনের মৃত্যু
বজ্রাঘাতে ৮ জেলায় ১০ জনের মৃত্যু
ভিত্তিপ্রস্তরের ১৪ বছর পর চট্টগ্রাম নগর ভবন নির্মাণকাজের উদ্বোধন
ভিত্তিপ্রস্তরের ১৪ বছর পর চট্টগ্রাম নগর ভবন নির্মাণকাজের উদ্বোধন
লোকসভা নির্বাচন: তৃতীয় ধাপের ভোটে হেভিওয়েট প্রার্থী যারা
লোকসভা নির্বাচন: তৃতীয় ধাপের ভোটে হেভিওয়েট প্রার্থী যারা
সর্বাধিক পঠিত
অভিযোগের শেষ নেই মাদ্রাসায়, চলছে শুদ্ধি অভিযান
অভিযোগের শেষ নেই মাদ্রাসায়, চলছে শুদ্ধি অভিযান
এই ৬ বীজ নিয়মিত খেলে সুস্থ থাকতে পারবেন দীর্ঘদিন
এই ৬ বীজ নিয়মিত খেলে সুস্থ থাকতে পারবেন দীর্ঘদিন
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া
যেভাবে অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে এলো স্কুলছাত্র
যেভাবে অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে এলো স্কুলছাত্র