X
সোমবার, ০৬ মে ২০২৪
২৩ বৈশাখ ১৪৩১

রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নয়, তাদের বাংলাদেশ থেকে আনা হয়েছে: সেনাপ্রধান মিন অং

বিদেশ ডেস্ক
১২ অক্টোবর ২০১৭, ১৫:২৪আপডেট : ১২ অক্টোবর ২০১৭, ১৬:৪৭
image

রোহিঙ্গাদের আবারও বাঙালি আখ্যা দিয়ে মিয়ানমারের সেনাপ্রধান বলেছেন, উপনিবেশের কালে ব্রিটিশ শাসকরা তাদের প্রতিবেশী বাংলাদেশ থেকে তাদের নিয়ে এসেছে। মার্কিন রাষ্ট্রদূত স্কট মার্সেলের সঙ্গে এক বৈঠকে এই মন্তব্য করেন তিনি। বৃহস্পতিবার তার ফেসবুক পেজে এমনটা জানানো হয়েছে। ডি-ফ্যাক্টো সরকার শাসিত মিয়ানমারে সেনাপ্রধান মিন অংকেই সবচেয়ে ক্ষমতাবান ব্যক্তি বিবেচনা করা হয়ে থাকে। ক'দিন আগে রোহিঙ্গাদের 'বাঙালি' প্রমাণে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন তিনি।
মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং

সাম্প্রতিক সহিংসতার শিকার হয়ে পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় তাকে খুব একটা বিচলিত হতে দেখা যায়নি। রোহিঙ্গাদের ‘বাঙালি’ বলে অভিহিত করে তাদের দুর্ভাগ্যের জন্য তিনি ব্রিটিশদের দায়ী করেন। বলেন, ‘বাঙালিদেরকে ব্রিটিশরাই মিয়ানমার নিয়ে আসে। তারা আমাদের দেশি নয়। এমনকি তারা রোহিঙ্গাও নয়। তারা শুধুই বাঙালি।’

জাতিসংঘের মানবাধিকার দফতর থেকে জানানো হয়, মিয়ানমারের সরকারি বাহিনী রোহিঙ্গাদের উপর নিধনযজ্ঞ চালিয়েছে। তাদের বাড়ি ও ফসল পুড়িয়ে দিয়েছে। ২৫ আগস্ট হামলার পর চালানো সরকারি বাহিনীর নিধনযজ্ঞে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন প্রায় পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা। বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ৬৫ জন মানুষের সঙ্গে জাতিসংঘ-কর্মীদের আলোচনার ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। মিয়ানমার ২৫ আগস্টে নিরাপত্তা চৌকিতে আরসার হামলাকে রোহিঙ্গাবিরোধী অভিযানের কারণ বললেও ওই প্রতিবেদনে দেখা গেছে এর আগে থেকেই সেখানে জাতিগত নিধনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে দেশটির ডি ফ্যাক্টো সরকারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চির। গত বছর নির্বাচনে জয়লাভ করে দায়িত্ব নিলেও আদতে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর হাতেই সব ক্ষমতা রয়েছে। মিন অং হ্লায়াং বলেন, ‘বাঙালিরা আরসার নেতৃত্বে হামলা চালিয়েছে। নিজেরা বাঁচতে পারবে না জেনেই তারা পালিয়ে যাচ্ছে।’
আগেও রোহিঙ্গা প্রশ্নে একই অবস্থান নিয়েছেন মিন অং। ১৬ সেপ্টেম্বর (শনিবার)  নিজের সরকারি ফেসবুক পেজে তিনি  রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের জাতিগোষ্ঠী বলে মানতে অস্বীকৃতি জানিয়ে তাদের বিরুদ্ধে একতাবদ্ধ হওয়ার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান। তার দাবি, রোহিঙ্গারা কখনও মিয়ানমারের জাতিগত গোষ্ঠী ছিল না; এটি ‘বাঙালি ইস্যু’। 

মানবাধিকার সংগঠনগুলোর দাবি, সৃষ্ট এই পরিস্থিতির জন্য মিন অং ব্যক্তিগতভাবে দায়ী। তিনি সবসময়ই চেয়েছেন রোহিঙ্গারা ফিরে যাক। মিন অং বলেন, বাঙালিরা বাংলায় ফিরে যাক। তারা হয়তো অন্য দেশেও পালিয়ে গেছে। সেখানেও হয়তো নাগরিকত্ব দাবি করেছে। তিনি দাবি করেন, বাংলাদেশে পালিয়ে যাওয়া রোহিঙ্গাদের সংখ্যা ‘অনেক বাড়িয়ে’ বলা হচ্ছে। আর এর পেছনে অনেক সংবাদমাধ্যম অপপ্রচার চালাচ্ছে।

১৮২৪ সাল থেকে ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত মিয়ানমার শাসন করে ব্রিটিশরা। অ্যাংলো-বার্মিজ যুদ্ধের পর ভারতে বার্মা নামে একটি প্রদেশ তৈরি করে ব্রিটিশরা। ভারত থেকেই সেখানে শাসনকার্য চালাতো তারা। ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি ব্রিটিশদের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে মিয়ানমার। ইতিহাসবিদরা মনে করেন, উপনিবেশের অনেক আগেই মুসলিমরা রাখাইন রাজ্যে বসবাস শুরু করে। ব্রিটিশ শাসনামলে এই সংখ্যাই শুধু বৃদ্ধি পেয়েছিলো।

 

 

/এমএইচ/বিএ/
সম্পর্কিত
রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলা চালাতে ওআইসির সহযোগিতা চাইলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
১২ ঘণ্টার মাথায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আরেক যুবককে হত্যা
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যুবককে হত্যা
সর্বশেষ খবর
যশোরে বার অ্যাসোসিয়েশন ভবন নির্মাণের আশ্বাস আইনমন্ত্রীর
যশোরে বার অ্যাসোসিয়েশন ভবন নির্মাণের আশ্বাস আইনমন্ত্রীর
সুন্দরবনে আগুনে ৫ একর এলাকার ক্ষতি
সুন্দরবনে আগুনে ৫ একর এলাকার ক্ষতি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের গাছে ঝুলছিল যুবকের লাশ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের গাছে ঝুলছিল যুবকের লাশ
বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম নগরীতে ভেঙে পড়েছে গাছ-খুঁটি, কয়েক স্থানে জলাবদ্ধতা
বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম নগরীতে ভেঙে পড়েছে গাছ-খুঁটি, কয়েক স্থানে জলাবদ্ধতা
সর্বাধিক পঠিত
অভিযোগের শেষ নেই মাদ্রাসায়, চলছে শুদ্ধি অভিযান
অভিযোগের শেষ নেই মাদ্রাসায়, চলছে শুদ্ধি অভিযান
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে যা বললেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে যা বললেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী
কোন পথে এগোচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ?
কোন পথে এগোচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ?
এই ৬ বীজ নিয়মিত খেলে সুস্থ থাকতে পারবেন দীর্ঘদিন
এই ৬ বীজ নিয়মিত খেলে সুস্থ থাকতে পারবেন দীর্ঘদিন
পুলিশ-সাংবাদিক-আইনজীবী স্টিকারের ছড়াছড়ি, ব্যবস্থা নিতে মাঠে নেমেছে পুলিশ
পুলিশ-সাংবাদিক-আইনজীবী স্টিকারের ছড়াছড়ি, ব্যবস্থা নিতে মাঠে নেমেছে পুলিশ