X
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪
২০ বৈশাখ ১৪৩১

৫ থেকে ১০ বছরের মধ্যে বিদ্বেষমূলক পোস্ট বন্ধ করবে ফেসবুক

বিদেশ ডেস্ক
১১ এপ্রিল ২০১৮, ১৫:৫২আপডেট : ১১ এপ্রিল ২০১৮, ১৫:৫৫

ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে দুনিয়ার বিভিন্ন স্থানে বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগ থেকে মুক্তি পেতে চাইছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ। এ লক্ষ্যে নতুন একটি প্রযুক্তির উন্নয়নে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি। এ প্রযুক্তির ফলে যে কেউ সামাজিক যোগাযোগের এই মাধ্যমটিতে কোনও পোস্ট করার আগেই সেটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে যাচাই করা হবে। এতে ওই পোস্টে বিদ্বেষমূলক কোনও উপাদানের অস্তিত্ব পাওয়া গেলে সেটি আর পোস্ট করার সুযোগ থাকবে না। অর্থাৎ, সমাজে ঘৃণা ছড়ায় এমন বক্তব্য ফেসবুকে প্রকাশের আগেই সেটি ডিলিট করে দেবে প্রতিষ্ঠানটি। তবে এই প্রযুক্তির উন্নয়নে আরও ৫ থেকে ১০ বছরের মতো সময় লাগবে। মঙ্গলবার মার্কিন সিনেটের বাণিজ্য এবং বিচার বিভাগীয় কমিটির সামনে সাক্ষ্য দেওয়ার আগে ফেসবুকের এমন পরিকল্পনার কথা জানান জাকারবার্গ।

৫ থেকে ১০ বছরের মধ্যে বিদ্বেষমূলক পোস্ট বন্ধ করবে ফেসবুক সিনেটের বাণিজ্য বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান জন থানে জাকারবার্গের কাছে জানতে চান, বৈধ রাজনৈতিক বক্তব্য বনাম বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের মূল্যায়নে ফেসবুক কী ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে? উত্তরে জাকারবার্গ বলেন, বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের শিকড় উপড়ে ফেলতে প্রযুক্তির ওপর নির্ভর করা ফেসবুকের জন্য কঠিন।

জাকারবার্গের কাছে মিয়ানমারের গণহত্যাকে উস্কে দেওয়ার জন্য ফেসবুকের ভূমিকাকে দোষারোপ করে জাতিসংঘের তদন্তকারীদের এক প্রতিবেদনের উল্লেখ করেন ভারমন্টের সিনেটর প্যাট্রিক জে লেয়াহি। ২০১৬ সালে ফেসবুকে এক বার্মিজ সাংবাদিককে হত্যার হুমকি ছড়িয়ে পড়ার বিষয়েও আলোকপাত করেন এই সিনেটর। প্যাট্রিক জে লেয়াহি বলেন, আপনার বিদ্যমান শনাক্তকরণ ব্যবস্থার মধ্যেও এই হুমকি ছড়িয়ে পড়েছিল। এটা খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছিল। তারপর এ নিয়ে একের পর এক উদ্যোগ নেওয়া হয়। ফেসবুক থেকে এটি সরিয়ে ফেলার আহ্বান জানাতে নাগরিক সমাজও এ ঘটনায় যুক্ত হয়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কেন এটি সরিয়ে ফেলা হয়নি?

মিয়ানমারের সহিংসতাকে ‘ভয়ানক ট্র্যাজেডি’ হিসেবে উল্লেখ করেন জাকারবার্গ। তিনি বলেন, এ ধরনের ঘটনা যেন ভবিষ্যতে আর না ঘটে সেজন্য তার কোম্পানি সুনির্দিষ্টভাবে তিনটি পদক্ষেপ নিয়েছে।

তিনি বলেন, ঘৃণাত্মক বক্তব্যের সঙ্গে ভাষার বিষয়টি জড়িত রয়েছে। ফলে ফেসবুক বার্মিজ ভাষায় পারদর্শী আরও কয়েক ডজন ব্যক্তিকে নিয়োগ দিচ্ছে যারা কনটেন্ট পর্যালোচনায় সক্ষম।

মার্ক জাকারবার্গ বলেন, স্থানীয় ভাষায় পারদর্শী ব্যক্তিদের ছাড়া এসব কিছু পদক্ষেপ নেওয়া কঠিন। এ ব্যাপারে আমরা আমাদের প্রচেষ্টা জোরদার করছি।

তিনি বলেন, ঘৃণা ছড়ানো ব্যক্তিদের শনাক্ত করতে মিয়ানমারের নাগরিক সমাজের সঙ্গে কাজ করছে ফেসবুক। এটা এজন্য করা হচ্ছে যেন, নির্দিষ্ট কিছু কন্টেটের বদলে বরং বিদ্বেষ ছড়ানো ব্যক্তিদের অ্যাকাউন্টই বন্ধ করে দেওয়া যায়।

জাকারাবার্গ বলেন, মিয়ানমার এবং অন্যান্য যেসব দেশে এ ধরনের ইস্যু রয়েছে সেসব ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে এমন কিছু যেন না ঘটে সেজন্য ফেসবুকের একটি টিম সজাগ রয়েছে।

এর আগে গত সোমবার মিয়ানমারের ছয়টি এনজিও’র একটি দল মন্তব্য করে, দেশটিতে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ছড়িয়ে পড়ার ব্যাপারে ফেসবুকের ব্যবস্থাপনা ‘একেবারেই অপর্যাপ্ত’ ছিল।

ফেসবুকের মাধ্যমে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাবিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগ অনেক পুরনো। দেশটিতে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী ও উগ্রপন্থী বৌদ্ধদের জাতিগত নিধনযজ্ঞে ফেসবুকের ভয়াবহ ভূমিকা শনাক্ত করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার তদন্ত দল। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ও সংবাদমাধ্যমের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, রোহিঙ্গাবিদ্বেষী প্রচারণার মধ্য দিয়েই সেখানে নিধনযজ্ঞ পরিচালনার পাটাতন সৃষ্টি করা হয়। জাতিসংঘের তদন্তকারীরা বলেছেন, ওই প্রচারণার কাজে ফেসবুকই প্রধান মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।

মিয়ানমারের জাতিসংঘের তদন্তকারী ইয়াংহি লি জানান, মিয়ানমারে ফেসবুক সরকারি, বেসরকারি ও ব্যক্তিগত জীবনের বিশাল অংশ। সরকার জনগণের মধ্যে তথ্য প্রচার করার জন্য এটা ব্যবহার করেছে। তিনি বলেন, ‘ফেসবুক সরকারি বার্তা সরবরাহ করতো কিন্তু আমরা জানি কট্টর বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদীদেরও নিজস্ব ফেসবুক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। তারা রোহিঙ্গা অথবা অন্যান্য জাতিগত সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে প্রকৃত অর্থেই প্রচুর সহিংসতা ও ঘৃণা ছড়িয়েছে। আমাদের আশঙ্কা, ফেসবুক এখন একটি জন্তুতে পরিণত হচ্ছে। এটি তার আসল লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হয়ে গেছে।

মঙ্গলবার সিনেট কমার্স এবং জুডিশিয়ারি কমিটির সামনে সাক্ষ্য প্রদান শেষে বুধবার হাউস এনার্জি এবং কমার্স কমিটির যৌথ শুনানিতে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে জাকারবার্গের। সূত্র: ওয়াশিংটন এক্সামিনার।

/এমপি/
সম্পর্কিত
‘সরকারকে যারা চাপ দেবে তারা নিজেরাই যথেষ্ট চাপে রয়েছে’
যুক্তরাষ্ট্রের ‘নেসা সেন্টার’ প্রতিনিধি দলের ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাস পরিদর্শন
বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভ নিয়ে মুখ খুললেন বাইডেন
সর্বশেষ খবর
যশোরে আজ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
যশোরে আজ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে ফিরেছে অস্ট্রেলিয়া
টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে ফিরেছে অস্ট্রেলিয়া
গাজায় ৪০০ ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশের অনুমতি দিলো ইসরায়েল
গাজায় ৪০০ ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশের অনুমতি দিলো ইসরায়েল
সবজির কেজি এখনও ৬০ টাকার বেশি, ২০০ ছাড়িয়েছে ব্রয়লার
সবজির কেজি এখনও ৬০ টাকার বেশি, ২০০ ছাড়িয়েছে ব্রয়লার
সর্বাধিক পঠিত
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক
কামরাঙ্গীরচরে নতুন ভবন নির্মাণের অনুমতি দিলো ডিএসসিসি
কামরাঙ্গীরচরে নতুন ভবন নির্মাণের অনুমতি দিলো ডিএসসিসি
কুমিল্লায় বজ্রাঘাতে ৪ জনের মৃত্যু
কুমিল্লায় বজ্রাঘাতে ৪ জনের মৃত্যু
আরও কমলো সোনার দাম
আরও কমলো সোনার দাম
ব্যর্থতার অভিযোগে শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে আইনি নোটিশ
ব্যর্থতার অভিযোগে শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে আইনি নোটিশ