X
বুধবার, ০৮ মে ২০২৪
২৫ বৈশাখ ১৪৩১

মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন উপকূল থেকে শতাধিক সন্দেহভাজন রোহিঙ্গা গ্রেফতার

বিদেশ ডেস্ক
১৬ নভেম্বর ২০১৮, ১৫:৫১আপডেট : ১৬ নভেম্বর ২০১৮, ১৫:৫৭
image

ইয়াঙ্গুন উপকূলে একটি নৌকা থেকে শতাধিক আরোহীকে গ্রেফতার করেছে মিয়ানমারের অভিবাসন কর্তৃপক্ষ। নৌকার আরোহীরা রাখাইনের রোহিঙ্গা মুসলিম বলে সন্দেহ করছে তারা। ধারণা করা হচ্ছে, সাগরপথে ঝুঁকি নিয়ে ভীনদেশে পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করছিলো রোহিঙ্গারা। এ ব্যাপারে তদন্ত করছে মিয়ানমার পুলিশ। মিয়ানমারের এক অভিবাসন কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এসব কথা জানিয়েছে।

রোহিঙ্গাবাহী নৌকা (ফাইল ফটো)
গত বছরের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে নতুন করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রায় ৭ লাখ মানুষ। সম্প্রতি জাতিসংঘের প্রতিবেদনে রোহিঙ্গা নিপীড়নের ঘটনায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে দায়ী করা হয়েছে। এছাড়া বেসামরিক সর্বোচ্চ নেতা অং সান সু চিরও সমালোচনা করে বলা হয়েছে রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞ ঠেকাতে নিজের নৈতিক অবস্থান ও রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা প্রয়োগ করতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। মিয়ানমারে নাগরিকত্বহীন অসহায় রোহিঙ্গাদের কেউ কেউ সাগরপথে থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায় পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করে থাকে। বিশেষ করে নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত শুষ্ক মৌসুমে সাগর যখন শান্ত থাকে তখন তারা নৌকায় করে এসব দেশে যাওয়ার চেষ্টা করে। অনেকসময় মানবপাচারকারীদের খপ্পড়ে পড়তে হয় তাদের। গত সপ্তাহে মিয়ানমারের কর্মকর্তা ও ত্রাণকর্মীরা জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে রোহিঙ্গাদের নৌকায় করে মালয়েশিয়ায় পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করতে দেখা গেছে।

শুক্রবার (১৬ নভেম্বর) সকালে মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন শহরের প্রায় ৩০ কিলোমিটার দক্ষিণের এলাকায় একটি নৌকা আটকে দেয় দেশটির অভিবাসন কর্তৃপক্ষ। নৌকাটিতে ১০৬ জন আরোহী ছিল। কিয়াউকতান এলাকার অভিবাসন কর্মকর্তা কিয়াউ হটে রয়টার্সকে টেলিফোনে এসব কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘সম্ভবত তারা রাখাইন থেকে এসেছে।’ রোহিঙ্গাদেরকে বরাবরের মতোই বাঙালি সম্বোধন করে তিনি বলেন, ‘সম্ভবত তারা রাখাইনের বাঙালি।’

পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসির সদস্য আয়ে মিয়া মিয়া মিও ফেসবুকে একটি নৌকার ছবি দিয়েছেন। সেখানে নারী, পুরুষ ও শিশুদের দেখা যাচ্ছে। মিয়া মিও জানান, নৌকায় ৫০ জন পুরুষ, ৩১ জন নারী ও ২৫ জন শিশু রয়েছে।

উল্লেখ্য, প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে রোহিঙ্গারা রাখাইনে থাকলেও মিয়ানমার তাদের নাগরিক বলে স্বীকার করে না। উগ্র বৌদ্ধবাদকে ব্যবহার করে সেখানকার সেনাবাহিনী ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে স্থাপন করেছে সাম্প্রদায়িক অবিশ্বাসের চিহ্ন। ছড়িয়েছে বিদ্বেষ। ৮২-তে প্রণীত নাগরিকত্ব আইনে পরিচয়হীনতার কাল শুরু হয় রোহিঙ্গাদের। এরপর কখনও মলিন হয়ে যাওয়া কোনও নিবন্ধনপত্র,কখনও নীলচে সবুজ রঙের রশিদ,কখনও ভোটার স্বীকৃতির হোয়াইট কার্ড, কখনও আবার ‘ন্যাশনাল ভেরিফিকেশন কার্ড’ কিংবা এনভিসি নামের রং-বেরঙের পরিচয়পত্র দেওয়া হয়েছে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানুষকে। ধাপে ধাপে মলিন হয়েছে তাদের পরিচয়। ক্রমশ তাদের রূপান্তরিত করা হয়েছে রাষ্ট্রহীন বেনাগরিকে। ২০১২ সালে রাখাইনে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়লে সমুদ্র পথ পাড়ি দিয়ে মিয়ানমার ছেড়ে পালায় হাজার হাজার রোহিঙ্গা। এই পালানো ২০১৫ সালে চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে। সে বছর আন্দামান সাগর পাড়ি দিয়ে ২৫ হাজার রোহিঙ্গা থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া পৌঁছায়। অনেকেই অতিরিক্ত যাত্রীবাহী সেসব নৌকা ডুবে সমুদ্রেই প্রাণ হারান।

/এফইউ/
সম্পর্কিত
এই বর্ষায় নির্ধারিত হবে মিয়ানমার জান্তা ও বিদ্রোহীদের পরিণতি?
লাদাখ সীমান্তে বিরোধচীনের সঙ্গে আলোচনায় আশাবাদী রাজনাথ সিং
তাইওয়ান প্রণালিতে আবারও চীনা সামরিক বিমান শনাক্ত
সর্বশেষ খবর
পিএসজিকে হারিয়ে ফাইনালে ডর্টমুন্ড
চ্যাম্পিয়নস লিগপিএসজিকে হারিয়ে ফাইনালে ডর্টমুন্ড
রাজস্থানকে হারিয়ে প্লে অফের আশা বাঁচিয়ে রাখলো দিল্লি
রাজস্থানকে হারিয়ে প্লে অফের আশা বাঁচিয়ে রাখলো দিল্লি
ঢাকা আসছেন মার্কিন অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু
ঢাকা আসছেন মার্কিন অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু
প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচন আজ
প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচন আজ
সর্বাধিক পঠিত
ব্যারিস্টার সুমনকে একহাত নিলেন চুন্নু
ব্যারিস্টার সুমনকে একহাত নিলেন চুন্নু
ছুড়ে দেওয়া সব তীর সাদরে গ্রহণ করলাম: ভাবনা
ছুড়ে দেওয়া সব তীর সাদরে গ্রহণ করলাম: ভাবনা
শনিবার স্কুল খোলা রাখার প্রতিবাদে শিক্ষকদের কর্মবিরতি ঘোষণা
শনিবার স্কুল খোলা রাখার প্রতিবাদে শিক্ষকদের কর্মবিরতি ঘোষণা
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি, বিএনপির প্রস্তুতি কী?
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি, বিএনপির প্রস্তুতি কী?
আসছে ব্যয় কমানোর বাজেট
আসছে ব্যয় কমানোর বাজেট