পূর্ব পাকিস্তান তথা আজকের স্বাধীন বাংলাদেশের মুক্তির সংগ্রামকে কেন্দ্র করে সংঘটিত ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর সিমলাতে চিরবৈরী দুই দেশের মধ্যে বিভিন্ন সমঝোতা হয়েছিল। সিমলা চুক্তি নামের ওই ঐতিহাসিক সমঝোতায় কাশ্মির-এ শান্তি ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল দুই পক্ষ। সমঝোতার প্রতীক হিসেবে ১৯৮৬ সালে চালু হয়েছিল দুই দেশের একমাত্র রেল যোগাযোগের মাধ্যম 'সমঝোতা এক্সপ্রেস'। কাশ্মিরে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হয়নি। চলমান যুদ্ধ-বাস্তবতায় নিত্যকার নিয়ম মেনে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় পাকিস্তান থেকে ভারতের উদ্দেশে ছেড়ে যায়নি ট্রেনটি। কিস্তান রেলওয়ের অ্যাডিশনাল জেনারেল ম্যানেজার জানিয়েছেন, উদ্ভূত নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না-ঘটে, সেজন্য ট্রেনের পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
১৯৭২ সালের ২ জুলাই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টো ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী সিমলায় এক ঐতিহাসিক বৈঠকে মিলিত হয়ে (২৮ জুন হতে ) দীর্ঘ আলোচনার পর একটি শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর করেন। এই চুক্তিতে দুই দেশের মধ্যকার সব বৈরিতার অবসান, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বন্ধুত্ব ও সৌহার্দ্যমূলক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা এবং কাশ্মিরে শান্তি স্থাপনের ব্যাপারে সম্মত হয় দুই পক্ষ। চুক্তির অধীনে ভারত সকল যুদ্ধবন্দিকে বিনাবিচারে পাকিস্তানে ফেরত পাঠায়।
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিদ্যমান উত্তেজনার মধ্যে এবার দুই দেশের মধ্যে চলাচলকারী সমঝোতা এক্সপ্রেসের পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে পাকিস্তান। লাহোর থেকে ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যে আটারি এলাকা পর্যন্ত চলাচল করে এই দূরপাল্লার ট্রেন।চুক্তি মেনে ১৯৭৬ সালের ২২ জুলাই দুই দেশের মধ্যে চালু হয় প্রথম রেল যোগাযোগের মাধ্যম 'সমঝোতা এক্সপ্রেস'। তবে কাশ্মিরকে কেন্দ্র করেই দুই পক্ষের উত্তেজনা সেই যোগাযোগ প্রক্রিয়াকে থমকে দিয়েছে।
বুধবার ভারতের তরফে জানানো হয়েছিল, উত্তেজনা থাকলেও এই ট্রেন ভারত থেকে নির্ধারিত সময়েই ছাড়বে। নর্দার্ন রেলওয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, বুধবার রাত ১১টা ২০ মিনিটে দিল্লি থেকে আটারিগামী সমঝোতা এক্সপ্রেসে যাত্রা করেছেন ২৭ যাত্রী। তাদের মধ্যে তিনজন পাকিস্তানি ও ২৪ জন ভারতীয় নাগরিক।' তবে পাকিস্তানের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, পরবর্তী নির্দেশ না-আসা পর্যন্ত সমঝোতা এক্সপ্রেসের পরিষেবা বন্ধ রাখা হবে।