X
মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪
২৩ বৈশাখ ১৪৩১

তিব্বতে মিলেছে ‘রহস্যময় আদিম মানুষের’ বসবাসের নজির

বিদেশ ডেস্ক
০২ মে ২০১৯, ১৪:২১আপডেট : ০২ মে ২০১৯, ১৭:৪৩

তিব্বতের মতো অত্যন্ত উঁচু স্থানে মানুষের আদিম প্রজাতি রহস্যময় 'ডেনিসোভান'দের বসবাস ছিল বলে প্রমাণ মিলেছে। বিজ্ঞান বিষয়ক সাময়িকী 'নেচার’-এ এমন দাবি করেছেন গবেষকরা। তাদের দাবি, এর আগে কখনোই ধারণা করা যায়নি যে এত উঁচুতে ডেনিসোভানরা বসবাস করতে পারতো। 

তিব্বতে মিলেছে ‘রহস্যময় আদিম মানুষের’ বসবাসের নজির

ডেনিসোভানরা ছিল মনুষ্য প্রজাতিগুলোর মধ্যে একটি রহস্যময় প্রজাতি, যারা এখনকার আধুনিক মানুষের আগে এশিয়ায় বসবাস করতো। ধারণা করা হয়, হাজার বছর আগে তারা পৃথিবীর অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ে। চরম প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকার ক্ষমতা একমাত্র বর্তমান মানব প্রজাতি হোমো স্যাপিয়েন্স-এর সাথেই এটি যুক্ত ছিল। আধুনিক মানুষের প্রাচীন এই পূর্বপুরুষ থেকে একটি জিন বর্তমান প্রজাতিতে এসেছে, যার মাধ্যমে আধুনিক মানুষ অনেক উঁচু কোনও স্থানে টিকে থাকার ক্ষমতা পেয়েছে। 

১৯৮০ সালে তিব্বতের মালভূমিতে ৩ হাজার ২৮০ মিটার উচ্চতায় বৈশিয়া কার্স্ট গুহাতে পাওয়া যায় ডেনিসোভা প্রজাতির নিচের চোয়ালের হাড়। কার্বন টেস্টের বদলে ইউরেনিয়াম-সিরিজ ডেটিং করা হয় অস্থিগুলোর বয়স বের করার জন্যে। চোয়ালের হাড়গুলো প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার বছরের পুরনো বলে দাবি করেন গবেষকরা।

এই গবেষণাপত্রের সহ-লেখক জার্মানির লিপজিগের বিবর্তনবাদী নৃতাত্ত্বিক গবেষণা সংস্থা ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইন্সটিটিউটের জিন জ্যাকস হাবলিন বলেন, ‘যখন আমরা বর্তমান মানুষের আদি প্রজাতি নিয়েনডারথাল বা ডেনিসোভা নিয়ে গবেষণা করেছি তখন দেখা গেছে যে তাদের চরম পরিবেশে টিকে থাকার ক্ষমতা বেশি ছিল না।’

তিব্বত মালভূমিতে পাওয়া ডেনিসোভান সাইট সম্পর্কে মি. হাবলিন বলেন, ‘এটি একটি মালভূমি এবং অবশ্যই সেখানে বাস করার মতো প্রচুর সম্পদ ছিল, আর তারা শুধু মাঝে মাঝে আসতো এমনও নয়।’

গবেষকরা এই জীবাশ্মে সংরক্ষিত কোনও ডিএনএ’র খোঁজ পাচ্ছিলেন না। তখন তারা ভিন্ন পদ্ধতিতে প্রোটিন সংগ্রহ করেন। সেই কৌশলকে বলা যেতে পারে প্রাচীন প্রোটিন বিশ্লেষণ।

আরেক গবেষক ডেনমার্কের ইউনিভার্সিটি অব কোপেনহেগেনের ফ্রিডো ওয়েলকার বলেন, ‘আমাদের প্রোটিন বিশ্লেষণ থেকে পাওয়া তথ্য বলে যে, নিচের চোয়ালের হাড়টি হোমিনিন গোত্রের কারোর, যারা ডেনিসোভা গুহা থেকে প্রাপ্ত ডেনিসোভানদের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত ছিল।"

এই আবিষ্কারটির মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা যায়, ডেনিসোভা গুহাবাসীদের এমন একটি জিন ছিল, যা জাইপোক্সিয়া বা অধিকতর উচ্চতায় অক্সিজেনের অভাবের বিরুদ্ধে কাজ করে। এতদিন এটি ঘিরে একটি রহস্য ছিল। কেননা, সাইবেরিয়ার গুহাটি সমুদ্র সমতল থেকে মাত্র ৭০০ মিটার উচ্চতায়।

এর আগে পর্যন্ত সাইবেরিয়ার ডেনিসোভা গুহাতে পাওয়া জীবাশ্ম থেকে হাড় ও দাঁতের কিছু নমুনায় এই প্রজাতি সম্পর্কে জানা যায়। কিন্তু সেখান থেকে পাওয়া ডিএনএ থেকে জানা যায় যে এরা মানবজাতির একটি স্বতন্ত্র শাখা ছিল। এখন বিজ্ঞানীরা অন্য একটি সাইট থেকে প্রথম ডেনিসোভা জীবাশ্ম চিহ্নিত করলো।

এখনকার দিনে শেরপা, তিব্বতি এবং এ অঞ্চলের পার্শ্ববর্তী জনগোষ্ঠীরও একই ধরনের জিনগত বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যা কি-না হোমোসাপিয়েন্সরা হাজার হাজার বছর আগে ডেনিসোভানদের সাথে মিশে গিয়ে অর্জন করেছিল।

/এমএইচ/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
টেকনাফে ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা
টেকনাফে ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা
ঝড়ে গাছ ভেঙে পড়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক বন্ধ ছিল এক ঘণ্টা
ঝড়ে গাছ ভেঙে পড়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক বন্ধ ছিল এক ঘণ্টা
‘স্বাভাবিক পরিবেশে বাঁচতে প্রত্যেককে গাছ রোপণ করতে হবে’
‘স্বাভাবিক পরিবেশে বাঁচতে প্রত্যেককে গাছ রোপণ করতে হবে’
ভিটামিন ডি কমে গেলে কীভাবে বুঝবেন?
ভিটামিন ডি কমে গেলে কীভাবে বুঝবেন?
সর্বাধিক পঠিত
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া
যেভাবে অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে এলো স্কুলছাত্র
যেভাবে অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে এলো স্কুলছাত্র
যে শিশুকে পাচারের অভিযোগে মিল্টনের বিরুদ্ধে মামলা
যে শিশুকে পাচারের অভিযোগে মিল্টনের বিরুদ্ধে মামলা
আজও ঝোড়ো হাওয়াসহ শিলাবৃষ্টির আভাস
আজও ঝোড়ো হাওয়াসহ শিলাবৃষ্টির আভাস