ট্রাম্প-মাস্ক বিরোধ আপাতত সুরাহা হওয়ার কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। অনলাইনে কাদা ছোঁড়াছুঁড়ির মধ্যে শুক্রবার (৬ জুন) সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, টেসলা মালিকের সঙ্গে কথা বলার ইচ্ছা নেই তার। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
প্রেসিডেনশিয়াল উড়োজাহাজ এয়ার ফোর্স ওয়ানের বাইরে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে ট্রাম্প বলেন, মাস্ককে নিয়ে আমি ভাবছি না। আমি আশা করি, টেসলা নিয়ে তিনি ভালো থাকবেন।
তবে মাস্কের সঙ্গে সরকারি চুক্তিগুলো পর্যালোচনা হবে বলেও আভাস দিয়েছেন তিনি। সরকারকে প্রয়োজনীয় সব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন, আমরা সব যাচাই করব। এখানে অনেক অর্থের কথা বলা হচ্ছে।
টেসলার প্রতি সমর্থন জানাতে মার্চে একটি গাড়ি নিয়েছিলেন ট্রাম্প। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক হোয়াইট হাউজের এক কর্মী জানিয়েছেন, ট্রাম্প নামপ্রকাশে গাড়িটির মালিকানা ত্যাগ করবেন।
এদিকে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাস্কের কাছে কয়েকজন জানিয়েছেন, টেসলা মালিকের মাথা ঠান্ডা হতে শুরু করেছে। ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের চেষ্টা করবেন বলে ঘনিষ্ঠদের কাছে আভাস দিয়েছেন তিনি।
ট্রাম্প-মাস্কের সুসম্পর্কে আনুষ্ঠানিকভাবে টানাপড়েন শুরু হয় মার্কিন প্রেসিডেন্টের কর বিল নিয়ে টেসলা মালিকের মন্তব্যের জেরে।সরকারি দায়িত্ব ছাড়ার এক সপ্তাহ পার না হতেই ওই বিলের বিষোদ্গার করা শুরু করেন তিনি। প্রথমে জবাব না দিলেও, কয়েকদিন পর মাস্কের কথায় হতাশা প্রকাশ করেন ট্রাম্প। এর প্রতিক্রিয়ায় মাস্ক বলে বসেন, ট্রাম্পকে তিনিই জিতিয়েছেন। তিনি এমনকি ট্রাম্পের অভিশংসন এবং নতুন রাজনৈতিক দলের বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জনমত গড়ে তোলার চেষ্টা করেন। ওদিকে ট্রাম্প হুমকি দিয়ে বলেন, মাস্কের সব সরকারি চুক্তি ও প্রণোদনা বাতিল করে দিলে রাষ্ট্রের কয়েকশ’ কোটি ডলার বেঁচে যাবে।
এরপর থেকেই চলছে বিশ্বের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর রাষ্ট্রের প্রধান এবং বিশ্বের শীর্ষ ধনীর কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি।
মাস্কের ক্ষিপ্ত হওয়ার পেছনে তার বন্ধুর মনোনয়ন বাতিলের ঘটনাটিও প্রভাব রেখে থাকতে পারে বলে তার ঘনিষ্ঠদের বরাতে জানা গেছে। সরকারি পদ থেকে মাস্ক ইস্তফা নেওয়ার পরদিনই মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থার প্রধানের জন্য মনোনীত জ্যারেড আইজ্যাকম্যানের নাম বাতিল করেন ট্রাম্প।
মাস্কের হাই-প্রোফাইল মিত্রদের বেশিরভাগই পুরো বাদানুবাদের সময় মুখে কুলুপ এঁটে ছিলেন। তবে বিনিয়োগকারী জেমস ফিশব্যাক বলেছেন, প্রেসিডেন্টের কাছে টেসলা মালিকের ক্ষমা প্রার্থনা করা উচিত।
মাস্ক-ট্রাম্প দ্বন্দ্ব শিগগিরই মিটে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন হাউজ স্পিকার মাইক জনসন। টেসলা মালিকের সঙ্গে নিয়মিত টেক্সটিং চালিয়ে যাচ্ছেন বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
সিএনবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জনসন বলেছেন, রকেট নির্মাণ নিয়ে আমরা তো আর মাস্কের সঙ্গে তর্ক করতে যাই না। একইভাবে আমি আশা করব, আইন তৈরি ও অনুমোদনের বিষয়ে তিনিও আমার সঙ্গে বিবাদে জড়াবেন না।