সুইডিশ পরিবেশবাদী গ্রেটা থুনবার্গকে বহনকারী ত্রাণবাহী জাহাজের জাহাজ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে ইসরায়েল। রবিবার (৮ জুন) দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জাহাজটিকে ইসরায়েলের একটি বন্দরে কড়া পাহাড়ায় নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের এক্স অ্যাকাউন্টে লিখেছে, সেলেব্রিটিদের সেলফি ইয়াটটি ইসরায়েলি উপকূলের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আরোহীরা শিগগিরই নিজ নিজ দেশে ফেরত যাবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।
ব্রিটিশ পতাকাবাহী ইয়াটের নাম ম্যাডেলিন। ফিলিস্তিনপন্থি মানবাধিকার সংস্থা ফ্রিডম ফ্লোটিল্লা কোয়ালিশন বা এফএফসির তত্ত্বাবধানে এই অভিযান পরিচালিত হচ্ছিল। ইসরায়েলি অবরোধ অমান্য করে গাজায় প্রতীকী পরিমাণ চাল ও শিশুখাদ্য সরবরাহের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সচেতনতা বৃদ্ধি করতে চেয়েছিল দলটি।
নিজেদের টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্টে এফএফসি জানিয়েছে, গন্তব্যে পৌঁছানোর ঠিক আগের রাতে তাদের জাহাজের নিয়ন্ত্রণ নেয় ইসরায়েল।
পরবর্তী সময়ে ইয়াটের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার বিষয় নিশ্চিত করে ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সব আরোহী অক্ষত ও নিরাপদ আছেন। তাদেরকে পানি ও স্যান্ডউইচ দেওয়া হয়েছে। নাটক আপাতত শেষ।
ম্যাডেলিনের ১২ জন আরোহীর মধ্যে থুনবার্গ ছাড়াও রয়েছেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য রিমা হাসান।
এক্সে রিমা হাসান জানিয়েছেন, স্থানীয় সময় রাত ২টার দিকে ফ্রিডম ফ্লোটিল্লার সদস্যদের আন্তর্জাতিক জলসীমা থেকে আটক করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
ম্যাডেলিনের বহন করা প্রতীকী পরিমাণ সামান্য খাদ্য গাজায় পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, ইয়াটে থাকা সামান্য খাবার যা সেলেব্রিটিরা সাবড়ে দেয়নি, তা যথাযথ পথে গাজায় পাঠানো হবে।
ম্যাডেলিনের পথরোধ করার কয়েকঘণ্টা আগে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়ে রেখেছিলেন ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাতজ।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার জবাবে গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। প্রায় ১৫ মাস যুদ্ধ চলার পর জানুয়ারিতে হামাসের সঙ্গে তাদের নাজুক এক যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়, যার স্থায়িত্ব ছিল মাত্র দুমাস। এরপর থেকেই আবারও গাজায় সামরিক অভিযান শুরুর পাশাপাশি কঠোর অবরোধ জারি করেছে তেল আবিব। তাদের অভিযোগ, ত্রাণ সহায়তা লুট করে নিজেদের পুনর্গঠিত করছে হামাস।
উল্লেখ্য, হামাসকে সমূলে নিশ্চিহ্ন করার মানসে অভিযান পরিচালিত হচ্ছে বলে বরাবরই দাবি করে এসেছে ইসরায়েল।
বর্তমানে গাজার খাদ্য সংকট এতোটাই মারাত্মক আকার ধারণের পথে রয়েছে যে, জাতিসংঘের আশঙ্কা সেখানকার প্রায় ২৩ লাখ মানুষ ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের মুখে পড়তে পারেন।
গাজায় ত্রাণ অবরোধের পক্ষে সাফাই গেয়ে কাতজ বলেছেন, ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য অবরোধের কোনও বিকল্প ছিল না। কাউকে গাজায় নৌ অবরোধ ভঙ্গ করার সুযোগ দেওয়া হবে না। আমাদের প্রধান উদ্দেশ্য হামাসের কাছে অস্ত্র হস্তান্তরের সুযোগ প্রতিহত করা।