ইসরায়েলের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরসহ অন্তত ১০টি স্থান লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে ইরান। টাইমস অব ইসরায়েলের দাবি, হামলায় এখন পর্যন্ত ১১ জন আহত হয়েছেন।
ইরানের রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যমের বরাতে ব্রিটিশ সংবাদনাধ্যম বিবিসিতে বলা হয়, বিমানবন্দর ছাড়াও ইরানি হামলার লক্ষ্যে ছিল সাপোর্ট বেইজ, কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার এবং একটি জৈব গবেষণাগার।
ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা মাগেন ডেভিড অ্যাডম (এমডিএম) বলেছে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলে ১১ জন আহত হয়েছেন।
ইসরায়েলের জরুরি সেবা সংস্থার মুখপাত্র বলেছেন, ইসরায়েলের ১০টি স্থানে রকেট ও গোলা হামলা হয়েছে। কারমেল, হাইফা, তেল আবিব ও ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে এসব হামলা হয়েছে। দেশটির বেশির ভাগ এলাকায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
ইরানি সংবাদমাধ্যমে বলা হয়, দীর্ঘ পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির রেভল্যুশনারি গার্ডস।
এর আগে, ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম হারেৎজ জানিয়েছে, ইরানের দিক থেকে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষিপ্ত হওয়ার সংকেত শনাক্ত করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলার কয়েক ঘণ্টা পরই প্রতিক্রিয়া জানায় তেহরান।
ফরাসি বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্রের কারণে ইসরায়েল ব্যাপী সতর্ক সংকেত জারি হয়েছে এবং তেল আবিবসহ দেশের একাধিক স্থানে বিস্ফোরণের আওয়াজ পাওয়া গেছে।
ইরানের দিক থেকে ৩০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হয়েছে বলে এএফপির প্রতিবেদনে জানানো হয়। ক্ষেপণাস্ত্রগুলো শনাক্ত করে তা ধ্বংস করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
শনিবার ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনা নাতানজ, ইসফাহান এবং ফোর্দোতে হামলার কথা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিজেই ইরানকে দু সপ্তাহ সময় বেঁধে দেওয়ার দু-দিন পরই হামলা করে বসেন তিনি।
মার্কিন হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকি বলেছেন, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলার পর আত্মরক্ষার সব রকম বিকল্প ব্যবহারের অধিকার তাদের রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের হামলাকে অত্যন্ত গর্হিত কাজ উল্লেখ করে আরাকি প্রচ্ছন্ন হুমকির সুরে জানান, এই পদক্ষেপের চিরস্থায়ী ফল ভোগ করতে হবে।
ইরানি বার্তাসংস্থা তাসনিমকে দেশটির এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, শত্রুপক্ষের হামলায় ফোর্দোর একটি অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে ক্ষতির ব্যাপ্তি সম্পর্কে ইরানের পক্ষ থেকে স্পষ্ট কিছু জানানো হয়নি।
গত ১৩ জুন ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা ও সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে ইসরায়েলি হামলা থেকে চলমান সংকটের সূচনা। তেল আবিবের দাবি, ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন থেকে বিরত রাখতে এই অভিযান চলছে। অপরদিকে, বরাবরের মতো পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কথা অস্বীকার করে এসেছে ইরান।
ইরানি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে দেশটির সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, চলমান হামলায় অন্তত ৪৩০ জন মানুষ নিহত এবং সাড়ে তিন হাজারের বেশি আহত হয়েছে। অন্যদিকে, ইরানের পাল্টা হামলায় ইসরায়েলের অন্তত ২৪ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে নেতানিয়াহুর কার্যালয়।