রাশিয়ার ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের ধাক্কা ইউরোপকেই সামলাতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকোভ। রবিবার (২৯ জুন) প্রকাশিত এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, এসব 'অবৈধ' নিষেধাজ্ঞা রাশিয়া সামলে নিতে পারবে। ব্রিট্রিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া নিষেধাজ্ঞা এক রকম দ্বিধারী তলোয়ারের মতো। যাদের কাঁধে বন্দুক রেখে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, তারাই এর ভয়াবহ ধাক্কা টের পাবেন। তবে আমি আবারও মনে করিয়ে দিতে চাই, এসব নিষেধাজ্ঞাকে আমরা অবৈধ বলেই মনে করি।
রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের ক্রেমলিন প্রতিনিধি পাভেল জারুবিনের প্রশ্নের জবাবে পেসকোভ বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) আরও নিষেধাজ্ঞা জারি করবে বলে তিনি নিশ্চিত। তবে এসবে কোনও লাভ নেই, কারণ রাশিয়ার কাছে এসব নিষেধাজ্ঞা গা-সওয়া হয়ে গেছে।
ইউক্রেনে ২০২২ সালে সামরিক আগ্রাসন শুরুর প্রতিক্রিয়ায় পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এতে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার শিকার দেশ হয়ে ওঠে রাশিয়া।
পশ্চিমা নেতাদের ধারণা ছিল, এসব চাপের ফলে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন শান্তির পথে ফিরে আসবেন। তবে এসবে কোনও কাজ হয়নি। বরং দেখা গেছে, ২০২২ সালে রাশিয়ার অর্থনীতি সংকুচিত হলেও ২০২৩ এবং ২০২৪ সালে তা ইইউর চেয়ে বেশি হারে বেড়েছে।
এর আগে শুক্রবার দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নিজেও বলেছিলেন, তাদের ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা দিলে ইউরোপই তার ভুক্তভোগী হবে। বিগত বছরের আর্থিক প্রবৃদ্ধির তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, গত বছর রুশ প্রবৃদ্ধি ছিল ৪ দশমিক ৩ শতাংশ যেখানে ইউরো জোনের প্রবৃদ্ধি ছিল কেবল শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ।
ইউরোপীয় কমিশন চলতি মাসের ১০ তারিখে রাশিয়ার ব্যাংক, সামরিক এবং জ্বালানি খাতে আঘাত হানতে নতুন নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব দিয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র এখন পর্যন্ত এসব নিষেধাজ্ঞা কঠোর করার বিষয়ে একটু সবুর করার নীতি অবলম্বন করছে।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁসহ ইউরোপীয় নেতারা বারবার বলেছেন, কঠোর নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে রাশিয়াকে যুদ্ধ শেষ করতে বাধ্য করা সম্ভব।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পেসকভ বলেন, শুধু বাস্তবসম্মত যৌক্তিক আলোচনার মাধ্যমেই রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতা প্রচেষ্টা সম্ভব।