যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সোমবার জানিয়েছেন, দেশটি ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ইউএসএআইডি)-এর ৮৩ শতাংশ কর্মসূচি বাতিল করতে যাচ্ছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত জানুয়ারিতে একটি নির্বাহী আদেশে যুক্তরাষ্ট্রের সব বৈদেশিক সাহায্য স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন, যাতে তার প্রশাসন বিদেশে ব্যয় পর্যালোচনা করে ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ এজেন্ডার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়—এমন কর্মসূচিগুলো বাতিল করতে পারে। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
মার্কো রুবিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে বলেন, ৬ সপ্তাহের পর্যালোচনার পর আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে ইউএসএআইডি-এর ৮৩ শতাংশ কর্মসূচি বাতিল করছি।
তিনি আরও বলেন, ৫ হাজার ২০০টি চুক্তি এখন বাতিল করা হয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের মূল জাতীয় স্বার্থে কাজ করেনি (এবং কিছু ক্ষেত্রে ক্ষতিও করেছে)।
ইউএসএআইডি বিশ্বজুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের মানবিক সাহায্য বিতরণ করে থাকে। যার মধ্যে প্রায় ১২০টি দেশে স্বাস্থ্য ও জরুরি সহায়তা কর্মসূচি অন্তর্ভুক্ত। ইউএসএআইডি-কে তত্ত্বাবধানকারী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত ২৬ ফেব্রুয়ারি সংস্থাটির ৯২ শতাংশ কর্মসূচি তহবিল কাটার ইচ্ছা প্রকাশ করে এবং ৫ হাজার ৮০০টি অনুদান বাতিলের কথা জানায়।
মার্কো রুবিও সোমবার বিশেষভাবে ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি (ডোজ)-কে ধন্যবাদ জানান, যেখানে ধনকুবের ইলন মাস্ক সরকারি বিভাগগুলোর ব্যয় কমানো এবং চাকরিচ্যুতির উদ্যোগ নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ট্রাম্প ও তার মিত্ররা দীর্ঘদিন ধরে যুক্তি দিয়ে আসছেন যে বৈদেশিক সাহায্য অপচয়মূলক এবং যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থে কাজ করে না।
তবে ত্রাণ সংস্থাগুলো বলছে, বৈদেশিক সাহায্যের বেশিরভাগই বিদেশে স্থিতিশীলতা ও স্বাস্থ্য উন্নয়নের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থে কাজ করে। তারা সতর্ক করে বলেছেন, সাহায্য বাতিল হলে ঝুঁকিপূর্ণ মানুষের জীবন হুমকির মুখে পড়বে।
এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে, যেসব দেশ ইউএসএআইডি-এর সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল, তাদের জন্য এই পদক্ষেপ উদ্বেগজনক।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সিদ্ধান্ত বৈশ্বিক মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে এবং যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতিতে ট্রাম্প প্রশাসনের অগ্রাধিকারকে আরও স্পষ্ট করে তুলেছে।