ভারতীয় উপমহাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের দেশ মালদ্বীপ। প্রায় ১ হাজার ২০০ দ্বীপের সমন্বয়ে গঠিত একটি দ্বীপ রাষ্ট্র এটি। তবে দ্বীপগুলোর বেশিরভাগই জনবসতিহীন।
দ্বীপগুলোর কোনোটাই সমুদ্রপৃষ্ঠের চেয়ে ৬ ফুট উঁচুতে নেই। এদিকে, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়ছে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতাও। ফলে দেশটির অস্তিত্ব দিন দিন হুমকির মুখে পড়ছে।
দ্বীপ রাষ্ট্রটির অর্থনীতি মূলত পর্যটন নির্ভর। উন্নত ও আকর্ষণীয়ভাবে গড়ে তোলার কারণে পর্যটন শিল্পের প্রধান আকর্ষণ হয়ে উঠেছে দেশটির বেশ কয়েকটি দ্বীপ।
দীর্ঘকাল দেশটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন মামুন আব্দুল গাইয়ুম। ২০০৮ সালে নির্বাচনে তার পরাজয়ের পর থেকে দেশটিতে অস্থিতিশীল রাজনীতি বিরাজ করছে।
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
- নাম: মালদ্বীপ প্রজাতন্ত্র
- রাজধানী: মালে
- আয়তন: ৩০০ বর্গ কিলোমিটার
- জনসংখ্যা: ৩ লাখ ৯২ হাজার
- ভাষা: দিভেহী ও ইংরেজি
- গড় আয়ু: পুরুষদের ৭৭, নারীদের ৮১ বছর
নেতৃত্ব
প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহামেদ সলিহ
২০১৮ সালে তৎকালীন ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট আবদুল্লা ইয়ামিনকে নির্বাচনে হারিয়ে ক্ষমতায় আসেন তিনি। স্বৈরশাসক প্রেসিডেন্ট ইয়ামিনের চীনা বিনিযোগের প্রতি ঝোঁক ছিল। তবে, মোহামেদ সলিহের ডেমোক্র্যাটিক পার্টি ছিল কিছুটা ভারতপন্থী।
২০১৯ সালের সংসদীয় নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করেন প্রেসিডেন্ট সলিহ। দেশটির কমনওয়েলথ সদস্যপদ পুনরায় ফিরিয়ে আনেন তিনি।
সংবাদমাধ্যম
দেশটির বেসরকরি সংবাদমাধ্যম ও সম্প্রচারমাধ্যমগুলো বেশ চাপের মুখে থাকে। প্যারিসভিত্তিক সংস্থা ‘রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স’-এর তথ্যমতে প্রায় সময় দেশটির সাংবাদিকরা সহিংসতার শিকার হন।
২০১৬ সালে প্রণীত মানহানি অপরাধের আইন অনুসারে, কোনও প্রতিবেদন মানহানিকর বিবেচিত হলে সংশ্লিষ্ট সংবাদমাধ্যমকে কর্তৃপক্ষ শাস্তি দেওয়ার অধিকার রাখে।
দেশটির ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা
১২শ শতাব্দী: দেশটিতে ইসলাম ধর্ম প্রচার শুরু হয়।
১৫৫৮-১৫৭৩: পর্তুগিজ শাসন প্রতিষ্ঠা হয়। পরবর্তীতে দেশটির জনগণ পর্তুগিজদের উৎখাত করে।
১৭শ শতাব্দী: দ্বীপরাষ্ট্রটি প্রথমে সিলন (শ্রীলঙ্কা)-এর ডাচ এবং পরে ব্রিটিশদের দ্বারা শাসিত হয়।
১৮৮৭: আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিটিশদের অধীনে চলে যায়।
১৯৬৫: সালতানাত হিসেবে ব্রিটিশদের কাছ থেকে পূর্ণ স্বাধীনতা লাভ করে।
১৯৬৮: গণভোটের মাধ্যমে সুলতান ক্ষমতাচ্যুত হন। প্রেসিডেন্ট হন ইব্রাহিম নাসির।
১৯৭৮: প্রেসিডেন্ট নাসির অবসরে যান এবং মামুন আবদুল গায়ুম নতুন প্রেসিডেন্ট হন।
১৯৮০’র দশক: পর্যটন শিল্পের উন্নতির মাধ্যমে দেশটির অর্থনীতি সমৃদ্ধ হয়।
২০০৮: বিরোধীদলীয় নেতা মোহামেদ নাশিদের কাছে নির্বাচনে হেরে যান প্রেসিডেন্ট গায়ুম।
২০১২: অভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট মোহামেদ নাশিদকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়।
২০১৮: ইব্রাহিম মোহামেদ সলিহ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।