যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন হয়তো ইউরোপের সুরক্ষায় কম মনোযোগ দিতে চাইছে, কিন্তু ন্যাটোর পূর্বপ্রান্ত সুরক্ষিত রাখা এবং বৈশ্বিক প্রভাব বজায় রাখতে তাদের সামরিক উপস্থিতি এখনও অপরিহার্য বলে মন্তব্য করেছেন এস্তোনিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী হানো পেভকুর।
সোমবার রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পেভকুর বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে বেশি মনোযোগ দিতে কিছু সেনা পুনর্বিন্যাস করতে পারে। কিন্তু ন্যাটো জোটে ইউরোপ থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের কোনও আলোচনা হয়নি।
পেভকুর বলেন, আমি বিশ্বাস করি না যে যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপ থেকে তাদের সেনা সরিয়ে নেবে।
গত ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ ন্যাটো মিত্রদের বলেছিলেন, কঠিন কৌশলগত বাস্তবতা যুক্তরাষ্ট্রকে ইউরোপের নিরাপত্তায় প্রাথমিকভাবে মনোযোগ দেওয়া থেকে বিরত রাখছে।
এ ধরনের মন্তব্য, ট্রাম্পের ন্যাটো সদস্যদের রক্ষা না করার হুমকি এবং ইউক্রেনকে সমর্থন কমিয়ে আনার ইঙ্গিত ইউরোপে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা নিয়ে শঙ্কা বাড়িয়েছে।
তবে পেভকুর বলেন, হেগসেথ ন্যাটোর গুরুত্বও উল্লেখ করেছেন। এজন্য যুক্তরাষ্ট্রকে উপস্থিত থাকতে হবে।
ইতালির নেপলস ও জার্মানির রামস্টাইনের মতো বড় মার্কিন ঘাঁটি ওয়াশিংটনকে বিশ্বজুড়ে শক্তি প্রদর্শনে সক্ষম করে। বর্তমানে ইউরোপে প্রায় ৮০ হাজার মার্কিন সেনা মোতায়েন রয়েছে।
পেভকুর বলেন, ন্যাটোর পূর্বপ্রান্তের সুরক্ষা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০১৪ সালে রাশিয়া ক্রিমিয়া দখলের পর থেকে এস্তোনিয়া, লাটভিয়া ও লিথুয়ানিয়ায় প্রায় নিরবচ্ছিন্নভাবে মার্কিন সেনা উপস্থিতি রয়েছে। ১৯৪০-এর দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নে অন্তর্ভুক্ত হওয়া এই বাল্টিক রাষ্ট্রগুলো ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর থেকে বিশেষভাবে সতর্ক হয়েছে।
এস্তোনিয়া আগামী চার বছরে জিডিপির ৫.৪শতাংশ প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যা ন্যাটো সদস্যদের মধ্যে সর্বোচ্চের কাছাকাছি। ন্যাটো সদস্যদের গড়ে জিডিডির মাত্র ২ শতাংশ ব্যয় করার কথা।
পেভকুর বলেন, ইউরোপের সামরিক সক্ষমতা পুনরুদ্ধারে জিডিপির ৪ শতাংশ ব্যয় প্রয়োজন, কিন্তু জুনে ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনে এটি অর্জন কঠিন হবে। অনেক দেশই ঋণের বোঝায় জর্জরিত এবং রাশিয়া থেকে দূরে অবস্থিত দেশগুলো প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়াতে কম আগ্রহী।
ট্রাম্প ন্যাটো দেশগুলোর জন্য জিডিপির ৫ শতাংশ প্রতিরক্ষা ব্যয়ের আহ্বান জানিয়েছেন। অন্যদিকে ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুটে বলেছেন, নতুন সামরিক সক্ষমতা লক্ষ্যমাত্রা জিডিপির ৩ শতাংশের বেশি প্রতিরক্ষা ব্যয় দাবি করে।