কাতারের বিরুদ্ধে সৌদি আরবের নেতৃত্বে চারটি আরব দেশের কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে অবরোধ আরোপের দুই মাস পার হয়েছে। চারটি দেশ সংকট সমাধানে ১৩টি শর্ত দিয়ে আলোচনায় আহ্বান জানালেও কাতার আরব দেশগুলোকে একরোখা বলে আখ্যায়িত করেছে। কুয়েত, তুরস্ক, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র সংকট সমাধানে মধ্যস্ততা করার চেষ্টা করলেও এখন পর্যন্ত সমাধানের কোনও ইঙ্গিত দৃশ্যমান হয়নি।
৫ জুন সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও মিসর কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে। এতে করে কাতার জল, স্থল ও আকাশপথে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। সন্ত্রাসবাদে সহযোগিতার অভিযোগে সৌদি নেতৃত্বের অভিযোগে এ অবরোধ আরোপ করা হয় কাতারের বিরুদ্ধে। যদিও কাতার এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
সর্বশেষ কাতারের বিরুদ্ধে অবরোধ আরোপকারী ৪ দেশ শর্ত সাপেক্ষে সংকট সমাধানে আলোচনায় বসতে রাজি হওয়ার কথা জানানো হয়েছে। আলোচনায় বসার আগে কাতারকে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদে অর্থায়ন ও সমর্থন বন্ধের প্রতিশ্রুতি, অন্য দেশের পররাষ্ট্র বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার প্রতিশ্রুতি এবং ১৩টি শর্তের বিষয়ে জবাব দিতে হবে। ২৯ ও ৩০ জুলাই কাতার ইস্যুতে বাহরাইনে বৈঠকের পর এই ঘোষণা আসে।
এর আগে জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে আরব দেশগুলো সন্ত্রাসবাদে জড়িত আখ্যায়িত করে কাতার সংশ্লিষ্ট ১৮ ব্যক্তি ও গোষ্ঠীকে কালোতালিকাভুক্ত করেছে। এ তালিকার প্রতিক্রিয়ায় কাতারের যোগাযোগ বিষয়ক পরিচালক শেখ সাইফ বিন আহমেদ আল-থানি বলেছেন, এ কালো তালিকার কোনও ভিত্তি নেই। কাতারের সার্বভৌমত্ব নস্যাৎ করার জন্যই তালিকা করা হয়েছে।
অবরোধ চলাকালে সৌদি আরবের বিরুদ্ধে ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ পবিত্র হজের রাজনীতিকরণের অভিযোগ তুলেছে কাতার। দেশটির জাতীয় মানবাধিকার সংস্থা (এনএইচআরসি) দাবি করেছে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য পূরণের হাতিয়ার বানিয়েছে রিয়াদ। এ নিয়ে জাতিসংঘের কাছে অভিযোগও দিয়েছে তারা।
চলমান অবরোধে কাতারের অর্থনীতি ও দেশের মানুষের জীবনে খুব বেশি প্রভাব পড়েনি বলে দাবি কাতারি সংবাদমাধ্যমের। অনেক কাতারি মনে করছেন, এই অবরোধের ফলে কাতার আরও শক্তিশালী হয়েছে এবং নিজের সামর্থ্য সম্পর্কে অবগত হতে পেরেছে।
অবরোধে পণ্য আমাদানির ক্ষেত্রে কাতার ওমানের বন্দর ব্যবহার করে নতুন সমুদ্র পথ চালু করেছে। এর মধ্য দিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আসছে তুরস্ক, ইরান ও ভারত থেকে। এমনকি বিমান পথেও পণ্য আমদানি করছে কাতার। সূত্র: আল-আরাবিয়া, কাতার পেনিনসুলা।
/এএ/