X
সোমবার, ০৬ মে ২০২৪
২২ বৈশাখ ১৪৩১

সিরিয়ায় কঠিন সমীকরণের মুখে তুরস্ক

বিদেশ ডেস্ক
০৪ নভেম্বর ২০২১, ২০:০১আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২১, ২০:০২

কয়েক মাস ধরে তুরস্কের নেতারা সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে কুর্দি বাহিনীর বিরুদ্ধে নতুন সামরিক অভিযান পরিচালনার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছেন। কিন্তু ওই অঞ্চলে রাশিয়া ও মার্কিন সেনাদের উপস্থিতির কারণে খুব সাবধানী অবস্থায় রয়েছে আঙ্কারা, এতে খুব কঠিন সমীকরণে পড়েছে তুর্কি প্রশাসন। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই জটিল সমীকরণ তুরস্কের উচ্চাকাঙ্ক্ষা বাধায় পড়তে পারে এবং পিছিয়ে যেতে পারে বড় ধরনের অভিযান। 

আঙ্কারাভিত্তিক ফাউন্ডেশন ফর পলিটিক্যাল, ইকনোমিক অ্যান্ড সোশ্যাল রিসার্চের গবেষক ওমর ওজকিজিলচিক বলেন, একটি অভিযান অনিবার্য। কিন্তু সময় নির্ভর করছে ওই অঞ্চলের সামরিক পরিস্থিতির চেয়ে কূটনীতির ওপর।

তার মতে, ওই অঞ্চলে তুরস্কের যে কোনও পদক্ষেপের ফলে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র প্রতিক্রিয়া দেখাবে। আঙ্কারা যে এলাকা থেকে কুর্দিদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে চায় সেখানে উভয় দেশেরই সামরিক উপস্থিতি রয়েছে।

গত কয়েক সপ্তাহে তুরস্ক হাজারো সেনা, অস্ত্র ও গোলাবারুদ ইদলিবে মোতায়েন করেছে। রাশিয়ার সঙ্গে তুরস্কের সমঝোতা না হলে তুর্কি বাহিনী হামলার শিকার হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

আগের অভিযানগুলোর মতোই তুরস্ক সিরীয় বিদ্রোহীদের ওপর নির্ভর করে অনেকটাই। গত কয়েক বছর ধরে এদের প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র দিয়ে আসছে তারা। আসাদবিরোধী সংগঠনটির এক মুখপাত্র মুস্তফা সিরাজি বলেন, দ্য সিরিয়ান ন্যাশনাল আর্মি অভিযানের জন্য প্রস্তুত এবং পরিস্থিতি চাইলে নিজেদের পূর্ণাঙ্গ সামরিক শক্তি অংশগ্রহণ করবে।

তিনি আরও জানান, তারা তুরস্কের সবুজ সংকেতের অপেক্ষায় রয়েছেন এবং কুর্দিদের বিরুদ্ধে যে কোনও স্থানে মোতায়েন হতে প্রস্তুত।

ওয়াশিংটন ইন্সটিটিউট ফর নিয়ার ইস্ট পলিসি’র তুর্কিশ গবেষণা কর্মসূচির পরিচালক সোনার চাগাপ্তায় জানান, তুরস্ক দীর্ঘ দিন ধরে দাবি করে আসছে সীমান্তের ৯১১ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে পিকেকে-সম্পর্কিত কুর্দিদের উপস্থিতি সহ্য করবে না। কুর্দিদের নিয়ন্ত্রিত ভূখণ্ড বিভাজিত হলে ভবিষ্যতে আসাদ সরকারের সঙ্গে দরকষাকষি আঙ্কারার জন্য সহজ হবে।

তার মতে, এই অভিযানের মূল কারণ হলো রোজাভা বা এসডিএফ নিয়ন্ত্রিত এলাকা নিয়ে তুরস্কের নীতি।  লক্ষ্য হলো এটিকে বিভক্ত করে ফেলা তা দীর্ঘমেয়াদী না হয়। যাতে করে সিরিয়ার সংঘাত নিয়ে বৈশ্বিক কোনও সমঝোতা হলে কুর্দিরা যেনও আসাদ সরকারের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় থাকে।

ওজকিজিলচিক বলছেন, কিন্তু কুর্দিদের কাছ থেকে ভূখণ্ড দখলে তুরস্কের উচ্চাকাঙ্ক্ষায় বাধা ওয়াশিংটন ও মস্কো।

কুর্দি নিয়ন্ত্রিত দুটি পকেট হলো তাল রিফাত ও মানবিজ, এখান থেকে আফরিনে অভিযান চালানো হয়। এখানে অবস্থান করছে রুশ বাহিনী। আরেকটি টার্গেট হলো কোবানে। এখানেও অভিযান চালাতে হলে রাশিয়ার সবুজ সংকেত লাগবে। দখল সম্প্রসারণে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যমাত্রা হতে পারে রাস আল-আইন। এখানকার বিমানঘাঁটি রাশিয়া ব্যবহার করে এবং মার্কিন সেনারা টহল দেয়। ইরাক সীমান্তের কাছে ৯০০ মার্কিন সেনা এসডিএফকে সহযোগিতা করছে।

তুরস্কে দায়িত্ব পালন করা সাবেক মার্কিন দূত জেমস জেফ্রি মনে করেন, ওই অঞ্চলে মিত্র এসডিএফকে জটিলতায় ফেলবে এমন পদক্ষেপ ওয়াশিংটন আগের মতো অগ্রাহ্য করবে না। ট্রাম্প প্রশাসনের মতো মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এসডিএফের ওপর তুর্কি হামলা মেনে নেবেন না।

তিনি বলেন, এমন পদক্ষেপের ফলে মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় পড়তে পারে তুরস্ক। দেশটির অর্থনীতির অবস্থার বিচারে এর প্রভাব হবে গুরুতর।

নিষেধাজ্ঞা ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র ক্ষুব্ধ হলে তুরস্কের এফ-১৬ যুদ্ধবিমান কেনার প্রচেষ্টা ভেস্তে যেতে পারে।

জেফ্রে মনে করেন, তাল রিফাত এলাকায় তুরস্কের অভিযান হয়ত যুক্তরাষ্ট্র ক্ষুব্ধ করবে না। কারণ এই এলাকাটিতে ওয়াইপিজির প্রভাব বেশি। যুক্তরাষ্ট্র এদেরকে এসডিএফ থেকে ভিন্ন সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করে। কিন্তু কোবানেতে অভিযান চালাতে আঙ্কারাকে রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতা করতে হবে।

মার্কিন দূতের মতে, এই সমঝোতার বিনিময়ে রাশিয়া দক্ষিণপূর্ব ইদলিবের এমফোর হাইওয়ে চাইতে পারে। রুশরা সিরিয়ায় তুরস্ক আরও ভূখণ্ড দখলে নিক তা চায় না। আসাদও এর চরমবিরোধী। সূত্র: আল জাজিরা

 

/এএ/
সম্পর্কিত
কোন পথে এগোচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ?
মিসরে চলমান যুদ্ধবিরতির আলোচনা, গাজায় বোমা ফেলছে ইসরায়েল
দ্বিতীয় সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভ, আটক ২ সহস্রাধিক
সর্বশেষ খবর
সুন্দরবনে আগুন ছড়ানো রুখতে দেওয়া হয়েছে বেরিকেট
সুন্দরবনে আগুন ছড়ানো রুখতে দেওয়া হয়েছে বেরিকেট
এই ৬ বীজ নিয়মিত খেলে সুস্থ থাকতে পারবেন দীর্ঘদিন
এই ৬ বীজ নিয়মিত খেলে সুস্থ থাকতে পারবেন দীর্ঘদিন
লখনউকে বড় হারের লজ্জা দিয়ে শীর্ষে কলকাতা
লখনউকে বড় হারের লজ্জা দিয়ে শীর্ষে কলকাতা
ন্যাশনাল ব্যাংকে নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠন, নিয়োগ পেলেন ১০ জন 
ন্যাশনাল ব্যাংকে নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠন, নিয়োগ পেলেন ১০ জন 
সর্বাধিক পঠিত
‘টর্চার সেলে’ নিজ হাতে অপারেশনের নামে পৈশাচিক আনন্দ পেতো মিল্টন, জানালেন হারুন
‘টর্চার সেলে’ নিজ হাতে অপারেশনের নামে পৈশাচিক আনন্দ পেতো মিল্টন, জানালেন হারুন
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে যা বললেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে যা বললেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী
নিজেদের তৈরি ভেহিকেল পেরুকে উপহার দিলো সেনাবাহিনী
নিজেদের তৈরি ভেহিকেল পেরুকে উপহার দিলো সেনাবাহিনী
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন বৃষ্টি হবে
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন বৃষ্টি হবে
সব জেনেও পুলিশকে কিছু জানাননি মিল্টনের স্ত্রী
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ডিবি হারুনসব জেনেও পুলিশকে কিছু জানাননি মিল্টনের স্ত্রী