ইসরায়েলি বিমান হামলার পর আতঙ্ক আর ক্ষোভে ফুঁসছে ইরান। কেউ চায় পাল্টা হামলা, আবার কেউ ভয় পাচ্ছেন দীর্ঘমেয়াদি সংকটে দেশ অচল হয়ে পড়বে। অনেকেই আশ্রয়ের খোঁজে ভাবছেন প্রতিবেশী তুরস্কে পালিয়ে যাওয়ার কথা। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতের ইসরায়েলি হামলার শব্দে কেঁপে ওঠে তেহরানসহ ইরানের একাধিক শহর। নাতাঞ্জ শহরের বাসিন্দা ৩৯ বছর বয়সী মারজিয়ে বলেন, একটা বিকট শব্দে ঘুম ভাঙে। আতঙ্কে আমরা সবাই রাস্তায় বেরিয়ে পড়ি। খুবই ভয় পেয়েছিলাম।
মারজিয়ে আরও বলেন, আমি আমার সন্তানদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। যুদ্ধ শুরু হলে তাদের নিরাপদ রাখবো কী করে?
ইসরায়েল জানিয়েছে, তারা ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাসহ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কারখানা এবং সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে।
হামলার পরদিন সকালে ব্যাংকে ভিড় করেন আতঙ্কিত ইরানিরা। দক্ষিণাঞ্চলীয় শিরাজ শহরের বাসিন্দা ও সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা মাসউদ মোসাভি বলেন, আমি তুর্কি লিরা কিনে পরিবার নিয়ে স্থলপথে তুরস্কে যাব। বিমান চলাচল বন্ধ, তাই এটাই একমাত্র উপায়। আমি যুদ্ধের ঘোর বিরোধী। নিরপরাধ মানুষের মৃত্যু চাই না।
একই সময়ে তেহরানে কয়েকজন মানি এক্সচেঞ্জার বলেন, তারা স্বাভাবিক দিনের চেয়ে বেশি ব্যস্ত ছিলেন। তবে অতিরিক্ত আতঙ্ক ছিল না বলেও জানান।
নাগরিকদের কেউ কেউ ইসরায়েলের হামলার নিন্দা করলেও, অনেকে আবার সরকারের কঠোর জবাবের পক্ষে। তেহরানের এক বাসিন্দা বলেন, আমাদের জবাব দিতেই হবে। না হলে তারা আমাদের অস্ত্র কেড়ে নেবে। তখন আমরা পুরোপুরি আত্মসমর্পণ করব।
তবে অনেকে মনে করছেন, পারমাণবিক কর্মসূচির কারণে দেশটির ওপর সংকট ও চাপ বেড়েই চলেছে। উত্তরাঞ্চলীয় চালুস শহরের শিক্ষক মোহাম্মদ রেজা বলেন, এই কর্মসূচির জন্য আমাদের অনেক মূল্য দিতে হচ্ছে। এখন আবার সামরিক হামলা। আমরা আর কষ্ট চাই না।
পবিত্র কোম শহর থেকে ফোনে আলি নামের এক ব্যক্তি বলেন, আমার বাবা ইরান-ইরাক যুদ্ধে শহীদ হয়েছেন। আমিও প্রাণ দিতেই প্রস্তুত। আমরাও পারমাণবিক কর্মসূচির অধিকার রাখি। আমেরিকা ও ইসরায়েল এই অধিকার কেড়ে নিতে পারবে না।