যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, আগামী সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। তবে তিনি মনে করেন, ইরানের সঙ্গে কোনও আনুষ্ঠানিক চুক্তির এখন আর প্রয়োজন নেই। কারণ ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। টাইমস অব ইসরায়েল এ খবর জানিয়েছে।
বুধবার নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে ন্যাটো সম্মেলনের ফাঁকে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, আমরা চুক্তি করতে পারি। কিন্তু আমার কাছে সেটা জরুরি নয়।
তিনি আরও বলেন, তারা যুদ্ধ করলো, লড়াই করলো, এখন তারা নিজেদের পথে ফিরে যাচ্ছে। চুক্তি হোক বা না হোক, তাতে আমার কিছু যায় আসে না।
ট্রাম্প দাবি করেছেন, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো যুক্তরাষ্ট্রের বোমা হামলায় ধ্বংস হয়ে গেছে। তিনি বলেন, এগুলো উড়ে গেছে, ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
তিনি জানান, মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ বলেছেন, ফরদো পারমাণবিক কেন্দ্রে যা ছিল, তা এখন পাহাড়ের নিচে চাপা পড়ে আছে, ধ্বংস হয়ে গেছে। হেগসেথের ভাষায়, ফরদোর কী হয়েছে জানতে চাইলে, আপনাকে বিশাল একটা কোদাল নিতে হবে এবং অনেক গভীরে খুঁড়তে হবে।
ট্রাম্প বলেন, আমি চাইলে তাদের (ইরান) কাছ থেকে একটা বিবৃতি আদায় করতে পারি যে, তারা আর পারমাণবিক বোমা তৈরি করবে না। আমরা হয়তো সেটা চাইবও। কিন্তু তারা এমনিতেই আর কিছু করতে পারবে না। ওদের অবস্থা শেষ।
তিনি আরও জানান, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে আলোচনা করেছেন, যাতে ইরানের জন্য একটি খসড়া চুক্তি প্রস্তুত রাখা হয়।
ট্রাম্প দাবি করেন, ইরানে হামলার সময় ইসরায়েলের ৫২টি যুদ্ধবিমান আকাশে থাকলেও তিনি ফোন করে সেই অভিযান বন্ধ করান। তিনি বলেন, আমি ওদের বলেছিলাম, ফিরে যাও। আমরা যা করতে চেয়েছিলাম, তা করে ফেলেছি। এখন আর যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন নেই।
ট্রাম্প বলেন, আমি ইরান ও ইসরায়েল উভয় দেশকেই সামলে নিয়েছি। ওরা এখন ক্লান্ত, বিশ্রাম চায়। দুজনেই বাড়ি ফিরে গেছে।
যুদ্ধ আবার শুরু হতে পারে কিনা, এমন প্রশ্নে ট্রাম্প বলেন, হতে পারে কোনও একদিন। খুব শিগগিরও হতে পারে। কিন্তু এখন সেটা হচ্ছে না।
তিনি জানান, ইরান ‘বীরত্বের সঙ্গে লড়েছে’। তবে যুদ্ধবিরতি কিছুটা হলেও তারা লঙ্ঘন করেছে। তবু তিনি মনে করেন, তারা আর পারমাণবিক কর্মসূচিতে ফিরে যাবে না।
রবিবার ইরানের বিভিন্ন পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, হামলার গতি ও গভীরতা এতটাই বেশি ছিল যে ইরান সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম স্থানান্তর করার সময় পায়নি।
তিনি বলেছেন, আমরা খুব দ্রুত এবং শক্তিশালী আঘাত করেছি। তারা সেগুলো সরাতে পারেনি। আর সেই উপাদান এত বিপজ্জনক ও কঠিন, ওটা সরানো সহজ নয়।
তিনি আরও জানান, মার্কিন বোমার আঘাতে যেসব স্থাপনা ধ্বংস হয়েছে, তা স্টিল ও গ্রানাইট দিয়ে তৈরি ছিল।
ট্রাম্প বলেছেন, ফরদো পারমাণবিক স্থাপনায় কী ঘটেছে, তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র একটি আনুষ্ঠানিক প্রতিবেদন প্রকাশ করবে।
যদিও ইরানের পক্ষ থেকে এখনও হামলার প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে নিশ্চিত কোনও তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। তবে ট্রাম্পের ভাষ্য অনুযায়ী ‘আমরা যা করতে চেয়েছিলাম, তা আমরা সম্পূর্ণ করেছি’।