X
মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪
২৪ বৈশাখ ১৪৩১

আসামে বিজেপি’র ডিটেক্ট, ডিলিট, ডিপোর্ট ফর্মুলা সচল হচ্ছে?

রঞ্জন বসু, দিল্লি প্রতিনিধি
৩১ আগস্ট ২০১৯, ০৩:১২আপডেট : ৩১ আগস্ট ২০১৯, ০৫:১২

প্রথমত কথিত অবৈধদের চিহ্নিত তথা ডিটেক্ট করা, দ্বিতীয়ত তাদের বিভিন্ন নাগরিক সুযোগ-সুবিধা কেড়ে নেওয়া তথা ডিলিট করা এবং তৃতীয়ত তাদেরকে তাড়িয়ে বাংলাদেশে পাঠানো তথা ডিপোর্ট করা; আসামে এটাই হলো বিজেপির রাজনৈতিক ফর্মুলা।  ৩১ আগস্ট চূড়ান্ত নাগরিক তালিকা প্রণয়নের মধ্য দিয়ে এর প্রথম ধাপ (ডিটেক্ট) শুরু হতে যাচ্ছে। তবে বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, এই ফর্মুলা খুব মসৃণভাবে বাস্তবায়নের কোনও সুযোগ নেই। পর্যবেক্ষকদের একটা বড় অংশ মনে করেন, আসামের নাগরিক তালিকা সংশোধনের নেপথ্যে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারের একটা বড় উদ্দেশ্য ছিল সেখান থেকে মুসলিম বাঙালিদের বাংলাদেশে পাঠানো। তবে সংবাদমাধ্যমসূত্রে জানা গেছে, তালিকায় এখনও স্থান না পাওয়া ৪১ লাখ অধিবাসীর বড় অংশটি বাংলা ভাষাভাষী হিন্দু জনগোষ্ঠীর মানুষ, যাদের মধ্যে বিজেপির বিপুল সংখ্যক ভোটার রয়েছে। তাদেরকে তাড়িয়ে দিলে রাজনৈতিকভাবে বিজেপি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।  আর বাংলাদেশও আসামের নাগরিক তালিকার বিষয়টি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবে দেখে। ঢাকার দাবি অনুযায়ী, সেখানে কোনও অবৈধ বাংলাদেশি নেই। তাই ভারত চাইলেই এই বিপুল সংখ্যক মানুষকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে সক্ষম হবে না। সবমিলে তালিকা থেকে বাদ পড়া মানুষদের নিয়ে সেখানকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

আসামে বিজেপি’র ডিটেক্ট, ডিলিট, ডিপোর্ট ফর্মুলা সচল হচ্ছে?

শনিবার সকালে ঘড়িতে দশটা বাজতে না-বাজতেই ভারতের উত্তর- পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসাম হুমড়ি খেয়ে পড়বে নিজেদের মোবাইল ফোনে, কিংবা ল্যাপটপ বা ডেস্কটপে। যাদের কাছে ইন্টারনেটের সুবিধা নেই, তারা গিয়ে ভিড় করবেন নিকটবর্তী ‘এনআরসি সেবাকেন্দ্রে’ ঝুলিয়ে দেওয়া তালিকা দেখতে। পড়িমড়ি করে তারা শুধু জানতে চাইবেন একটাই প্রশ্নের উত্তর, জাতীয় নাগরিকপঞ্জীর চূড়ান্ত তালিকায় (এনআরসি) তাদের নাম থাকছে কি থাকছে না!

আসাম বহুকাল ধরেই জাতিসত্ত্বার দ্বন্দ্বে বিদীর্ণ এক ভৌগোলিক ভূখন্ড। ব্রহ্মপুত্র বা বরাকের অববাহিকায় জাতি-ভাষা-ধর্ম নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘাতের ইতিহাসও অনেক বছরের পুরনো। আশির দশকের আসাম আন্দোলন, বাঙালি খেদাও কিংবা নেলির মুসলিম গণহত্যার নির্মম মাইলস্টোনগুলো পেরিয়ে এই সংঘাত এখন এক চূড়ান্ত মাত্রায় পৌঁছেছে এনআরসি তালিকাকে ঘিরে। বছরখানেক আগে যখন এনআরসি-র দ্বিতীয় খসড়া তালিকা প্রকাশিত হয়েছিল তা থেকে বাদ পড়েছিল রাজ্যের প্রায় ৪১ লাখ বাসিন্দার নাম – যাদের প্রায় সবাই ছিলেন বাংলা ভাষাভাষী হিন্দু বা মুসলিম। গত কয়েক মাসের ভেতর তাদের মধ্যে থেকে আরও কয়েক লক্ষ লোক যদি নিজেদের ভারতীয় নাগরিক বলে প্রমাণ করেও থাকতে পারেন, তার পরেও লক্ষ লক্ষ লোকের রাতারাতি রাষ্ট্রহীন হওয়ার আশঙ্কা থাকছে পুরো মাত্রাতেই।

অনেকে মনে করছেন আসামে কাদের আইনগতভাবে যাবতীয় নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিয়ে থাকার অধিকার আছে, তার একটা ‘এসপার-ওসপার’ করে দেবে এই জাতীয় নাগরিকপঞ্জী। অন্য এক দল পর্যবেক্ষকের অভিমত – সংঘাতের অবসান তো দূরস্থান, লাখ লাখ রাষ্ট্রহীন নাগরিককে নিয়ে এক নতুন রাজনৈতিক, সামাজিক ও কূটনৈতিক যুদ্ধের সূচনা করবে এই এনআরসি। চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদে ঠিক কী কী ঘটতে পারে বা বিশ্লেষকরা কী ধরনের ঘটনাপ্রবাহের পূর্বাভাস করছেন, নিচে তা তুলে ধরা হলো।

এনআরসি-তে বাদ পড়া মানুষগুলোর কী গতি হবে?

অনলাইনে প্রকাশ-করা বা সেবাকেন্দ্রে ঝুলিয়ে দেওয়া তালিকায় যাদের নাম থাকবে না, তাদের অবশ্য সঙ্গে সঙ্গেই বিদেশিদের জন্য বন্দী শিবিরে (ডিটেনশন সেন্টার) পুরে দেওয়া হবে কিংবা বাংলাদেশে ‘পুশব্যাক’ করা হবে, ব্যাপারটা তেমন নয়। আসাম সরকার জানাচ্ছে, নানা নথিপত্র পেশ করেও যারা নিজেদের ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে পারেননি, তাদের ‘ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে’ আবেদন করার সুযোগ থাকবে। আসাম জুড়ে এই ধরনের প্রায় একশোটি ট্রাইব্যুনাল এর মধ্যেই কাজ করছে – আগামী এক সপ্তাহের ভেতর চালু করা হবে আরও একশোটি। মাস কয়েকের ভেতর মোট হাজারখানেক ট্রাইব্যুনালে এই ‘চিহ্নিত’ বিদেশিদের আবেদনের শুনানি হবে। ট্রাইব্যুনালেও আবেদন ব্যর্থ হলে তাদের সুযোগ থাকবে উচ্চতর আদালতে – অর্থাৎ হাইকোর্ট বা সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার। রাজ্যের যে সব গরিব প্রান্তিক মানুষজন এতদিনেও ঠিকমতো কাগজপত্র দিতে পারেননি, বা প্রতি বছরের বন্যায় যাদের ঘরের সর্বস্ব ভেসে যায় – তারা ট্রাইব্যুনালে বা হাইকোর্টে গিয়ে নতুন নথিপত্র পেশ করে এনআরসি-র রায় উল্টে দিতে পারবেন এমনটা কেউই আশা করছেন না বলা চলে। ফলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, আজ শনিবারই মোটামুটি স্থায়ীভাবে রাষ্ট্রহীনের তকমা লেগে যাচ্ছে আসামের লাখ লাখ মানুষের কপালে।

আসামে ও ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারে ক্ষমতায় আছে যে বিজেপি, এই এনআরসি-র ব্যাপারে তাদের একটা ফর্মুলা আছে। দলের প্রভাবশালী সাধারণ সম্পাদক রাম মাধব এটাকে বলেন ‘থ্রি ডি ফর্মুলা’ – যে তিনটে ‘ডি’ হল ডিটেক্ট, ডিলিট ও ডিপোর্ট। এদিন এনআরসি-র চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে এই বিদেশি শনাক্তকরণ বা ‘ডিটেক্ট’ করার প্রক্রিয়া সাঙ্গ হচ্ছে বলা চলে। এর পর শুরু হবে ‘ডিলিট’ – অর্থাৎ ভারতের ভোটার তালিকা, রেশন কার্ড, আধার বা জাতীয় পরিচয়পত্রের রেজিস্টার কিংবা প্যানকার্ড বা আয়কর দাতাদের তালিকা থেকে একে তাদের নাম বাদ দেওয়া বা ‘ডিলিট’ করার প্রক্রিয়া। সুতরাং ভারতের মাটিতে থেকেও এই মানুষগুলো একে একে তাদের যাবতীয় নাগরিক সুযোগ-সুবিধা হারাতে থাকবেন। ভোট দিতে পারবেন না, নিকটবর্তী রেশন দোকান থেকে সরকারি ভর্তুকিতে চাল-ডাল পাবেন না – সরকারি চাকরি-বাকরি পাওয়ার তো কোনও প্রশ্নই নেই। বৈধভাবে ভারতে কাজ করে রুটিরুজি জোগাড়ের অধিকারও হারাবেন তারা। রাতারাতি ‘অবৈধ’ ঘোষিত হওয়ায় তাদের ঠাঁই হবে ফরেনার্স ডিটেনশন সেন্টারে – যদিও এযাবত আসামের মাত্র ছটি সেন্টারে মাত্র কয়েকশো লোককে রাখারই ব্যবস্থা আছে।

বাঙালি মুসলিমের চেয়ে বাঙালি হিন্দুদের ওপরই বেশি কোপ পড়বে?

গত বছরের ৩১ জুলাই এনআরসি-র যে দ্বিতীয় খসড়া তালিকা বের করা হয়েছিল, তাতে ৪১ লাখের কাছাকাছি মানুষের নাম বাদ পড়লেও সেখানে কোন ধর্মের মানুষ কতজন ছিলেন সেই সরকারি পরিসংখ্যান আজ পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি। তবে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত নানা খবর থেকে ধারণা করা হয়, ওই ৪১ লাখের মধ্যে ২৭ লাখেরও বেশি হিন্দু ও মোটামুটি ১৩ লাখের মতো মুসলিমের নাম ছিল। ‘হিন্দুত্ববাদী’ দল বিজেপির ঘোষিত অবস্থানই যেখানে বাংলাদেশ থেকে আগত হিন্দুদেরই শুধু নাগরিকত্ব দেওয়া – সেখানে এই তথ্য তাদের জন্য চূড়ান্ত অস্বস্তিকর বলেই এই পরিসংখ্যান আজ পর্যন্ত সরকারিভাবে প্রকাশ করা হয়নি, এমনটা মনে করারও পর্যাপ্ত কারণ আছে। অনেক পর্যবেক্ষকই মনে করছেন, এনআরসি প্রক্রিয়ার পেছনে মূল রাজনৈতিক লক্ষই ছিল আসামের বাঙালি মুসলিমদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া – অথচ কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল রাজ্যের বাঙালি হিন্দুদের চেয়ে বাঙালি মুসলিমরা তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি নথিপত্র দিতে পেরেছেন এবং নিজেদের নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে পেরেছেন। ফলে গোটা জিনিসটা বিজেপির কাছে ‘বুমেরাং’ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা আছে পুরো দস্তুর।

ঠিক এই কারণেই রাগে ফুঁসছেন আসাম বিজেপির ডাকাবুকো হিন্দু বাঙালি নেতা ও বিধায়ক শিলাদিত্য দেব। বলছেন, ‘যে হিন্দুরা ১৯৭১-র ১৪ মার্চের আগে ভারতে এসেছেন তারা আপনা থেকেই নাগরিকত্ব পাওয়ার যোগ্য। কিন্তু তাদের প্রতি এনআরসি কর্মকর্তাদের কোনও সহানুভূতি নেই, তারা পড়ে আছেন শুধু ৭১-র পরে আসা মুসলিমদের নিয়ে। ফলে গোটা ব্যাপারটাযেন একটা ‘ডকুমেন্টেশন এক্সারসাইজে’ পরিণত হয়েছে – নাগরিক শনাক্তকরণ আর নেই। মানে যে যেভাবে পারে একটা কাগজ বা দলিল ম্যানেজ করেই নাগরিক হয়ে যাচ্ছে – অথচ যারা পঞ্চাশ-ষাট বছর ধরে আসামে আছেন তারা কাগজ দেখাতে না-পেরে তালিকা থেকে বাদ পড়ছেন!’

বিজেপি নেতৃত্বের একাংশের এই বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট, এনআরসি থেকে সত্যিই যদি বড় সংখ্যায় বাংলাভাষী হিন্দুর নাম বাদ পড়ে তাহলে তারা একটা বিরাট ‘ব্যাকল্যাশ’ বা বিরূপ প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কা করছেন। আসামে যে ১৮% হিন্দু বাঙালি ভোটব্যাঙ্ক রয়েছে তাদের বিজেপির সমর্থক বলেই গণ্য করা হয় – এবং মাস তিনেক আগের সাধারণ নির্বাচনে রাজ্যের ১৪টির মধ্যে বিজেপি যে ৯টি আসন জিতেছিল, সেটাও এই হিন্দু বাঙালিদের ভরসায়। ভোটার তালিকা থেকে বাঙালি মুসলিমদের বাদ পড়া নিয়ে অবশ্য বিজেপি বিচলিত নয় – কারণ তাদেরকে কখনওই তারা নিজেদের সমর্থক বলে গণ্য করেনি, তাদের ভোট পাওয়ার চেষ্টাও করেনি।

এই রাষ্ট্রহীনদের কি তাহলে এখন বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা হবে?

সমাজ গবেষক, অ্যাক্টিভিস্ট ও ভারতের প্রাক্তন আমলা হর্ষ মান্দেরের কথায়, ‘এনআরসি নিয়ে নানা বিতর্ক-আলোচনা চলছে। কিন্তু ‘রুম ইন দ্য এলিফ্যান্ট’ বা ঘরের মধ্যে মস্ত হাতিটাকে যেন কেউ দেখেও দেখছে না!’ তিনি প্রশ্ন তুলছেন, এই যে লাখ লাখ লোককে অবৈধ বিদেশি বা আরও সটান বললে বাংলাদেশি বলে চিহ্নিত করা হল, তাদেরকে বাংলাদেশে পাঠানোর কোনও ব্যবস্থা না-করেই কীভাবে আপনি এত বড় পদক্ষেপ নিতে পারেন?’

বস্তুত এনআরসি বিতর্ক শুরু হওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশ যতই উদ্বিগ্ন হোক, আনুষ্ঠানিকভাবে তারা বরাবরই একে ভারতের ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়’ বলে বর্ণনা করে এসেছে। এমন কী, দিন দশেক আগে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ঢাকা সফরে গিয়ে তার বাংলাদেশী কাউন্টারপার্টকে পাশে নিয়েও ঠিক একই কথা বলেছেন। তবে এনআরসি যে আর শুধু ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় থাকছে না, সেই লক্ষণও ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। ভারতের নতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ একাধিকবার বলেছেন, এনআরসি থেকে যাদের নাম বাদ পড়বে তাদের আর কোথাও নয় – বাংলাদেশেই ফিরে যেতে হবে। বস্তুত এটাই হল বিজেপির তথাকথিত ‘থ্রি-ডি ফর্মুলা’র শেষ ডি – যেটা হল ডিপোর্ট। রাম মাধব যেটাকে বলছেন, ‘ডিটেক্ট ও ডিলিটের পর কী, অনেকেই আমাদের এই প্রশ্নটা করছেন। এখানে বিজেপির একটাই জবাব, সেটা হল ডিপোর্ট টু বাংলাদেশ!’

বাংলাদেশ তো অবৈধ ঘোষিতদের একজনকেও ফিরিয়ে নিতে রাজি নয়। সে ক্ষেত্রে এই লাখ লাখ মানুষকে কীভাবে ফেরানো হবে? বস্তুত এই মুহুর্তে ভারত যদি কাউকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে চায়, তাহলে তার দুটো পদ্ধতি চালু আছে। একটা হল পুশব্যাক – অর্থাৎ রাতের অন্ধকারে সীমান্তের কোনও একটা ফাঁকা জায়গায় নিয়ে গিয়ে বিএসএফ তাদের দিকে বন্দুক তাক করে ছুটে গিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়তে বলে। প্রাণভয়ে তারা দৌড় লাগায়, আবার বিজিবি ধরে ফেললে পাল্টা ভারতে ঢুকিয়ে দিতে চেষ্টা করে। গত দু-তিন বছরে রোহিঙ্গাদের নিয়ে এই ধরনের ‘লুকোচুরি’ পুশব্যাক আর পুশইন বেশ কয়েকবার ঘটেছে। দ্বিতীয় পদ্ধতিটা হল ডিপোর্টেশন। অর্থাৎ ভারতে যদি কোনও ব্যক্তি বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে শনাক্ত হন এবং বাংলাদেশি দূতাবাসের মাধ্যমে সে দেশে তার নাম-ঠিকানা যাচাই করে দেখা যায় যে সে সত্যিই সে দেশের – তাহলে তাকে উপযুক্ত চ্যানেলে যথাযথ নিয়ম অনুসারে সীমান্ত পার করিয়ে দেওয়া হয়।

কিন্তু এটা হয়তো দশ-বিশ বা তিরিশ জনের জন্য সম্ভব। দশ, বিশ বা তিরিশ লাখ লোককে কি এভাবে আদৌ বাংলাদেশে পাঠানো সম্ভব? এর জবাবও বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে আছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের এক প্রথম সারির নেতার কথায়, ‘এনআরসি থেকে যাদের নাম বাদ পড়বে, সব সুযোগ-সুবিধা হারিয়ে ও রুটি-রুজি খুইয়ে ভারতে তাদের অবস্থা এতটাই দুর্বিষহ হয়ে উঠবে যে দেখবেন তারা নিজে থেকেই বাংলাদেশে ফিরে যেতে চাইবে। ওটা নিয়ে আমাদের মাথা ঘামাতেই হবে না!’

অতএব, শেষের সেদিন যে ভয়ঙ্কর – সে লক্ষণ স্পষ্ট। পর্যবেক্ষকেদের বিন্দুমাত্র সংশয় নেই, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন ওই ভূখন্ডে সমাজ-রাজনীতি-কূটনীতিতে এক বিরাট উথালপাথালের অশনি সংকেত দিচ্ছে এদিনের জাতীয় নাগরিকপঞ্জী বা এনআরসি।

/জেজে/বিএ/
সম্পর্কিত
লোকসভা নির্বাচনের তৃতীয় দফায় ভোট দিলেন মোদি
ভারতে আজ তৃতীয় দফার ভোটগ্রহণ চলছে
জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থেকেও হিন্দুত্ববাদে ভরসা মোদির?
সর্বশেষ খবর
শনিবার স্কুল খোলা রাখার প্রতিবাদে শিক্ষকদের কর্মবিরতি ঘোষণা
শনিবার স্কুল খোলা রাখার প্রতিবাদে শিক্ষকদের কর্মবিরতি ঘোষণা
রাঙামাটির দুর্গম কেন্দ্রগুলোতে যাচ্ছে নির্বাচনি সরঞ্জাম
রাঙামাটির দুর্গম কেন্দ্রগুলোতে যাচ্ছে নির্বাচনি সরঞ্জাম
রাতের আঁধারে ২৪ লাখ টাকা ও ১১ সহযোগীসহ নির্বাচনের প্রার্থী আটক
রাতের আঁধারে ২৪ লাখ টাকা ও ১১ সহযোগীসহ নির্বাচনের প্রার্থী আটক
কাজাখস্তানের নারী দাবাড়ুকে  হারিয়ে প্রথম জয় ফাহাদের
কাজাখস্তানের নারী দাবাড়ুকে  হারিয়ে প্রথম জয় ফাহাদের
সর্বাধিক পঠিত
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া
যে শিশুকে পাচারের অভিযোগে মিল্টনের বিরুদ্ধে মামলা
যে শিশুকে পাচারের অভিযোগে মিল্টনের বিরুদ্ধে মামলা
ভিটামিন ডি কমে গেলে কীভাবে বুঝবেন?
ভিটামিন ডি কমে গেলে কীভাবে বুঝবেন?
যেভাবে অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে এলো স্কুলছাত্র
যেভাবে অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে এলো স্কুলছাত্র