ভারতের গুজরাটে ২০০২ সালের মুসলিমবিরোধী দাঙ্গায় দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি-র সংশ্লিষ্টতার কোনও প্রমাণ মেলেনি। নিজেদের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এমনটাই জানিয়েছে নানাবতী তদন্ত কমিশন। ওই দাঙ্গায় উসকানি দেওয়ায় সমালোচকরা তাকে ‘গুজরাটের কসাই’ হিসেবে আখ্যায়িত করে থাকে। তবে তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসা বক্তব্য এর বিপরীত। এতে বলা হয়েছে, শুধু মোদি-ই নয়; তার মন্ত্রিসভার কারও বিরুদ্ধেই কোনও অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
দাঙ্গায় খোদ মুখ্যমন্ত্রীর উসকানি এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ উঠলে এ বিষয়ে তদন্তের উদ্যোগ নেয় কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘ তদন্তের পর বুধবার (১১ ডিসেম্বর) রাজ্য বিধানসভায় পেশ করা নানাবতী কমিশনের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, দাঙ্গায় মোদির সংশ্লিষ্টতার কোনও প্রমাণ মেলেনি। বিধানসভায় প্রতিবেদনটি পেশ করেন রাজ্য সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রদীপ সিং জাডেজা।
২০০২-এর ২৭ ফেব্রুয়ারি গোধরায় সবরমতী এক্সপ্রেসের এস-৬ কোচে অগ্নিকাণ্ডে ৫৯ জন যাত্রীর প্রাণহানি হয়। নিহতদের বেশিরভাগই ছিলেন অযোধ্যা থেকে ফেরা হিন্দু তীর্থযাত্রী। পরে ওই অগ্নিকাণ্ডের জন্য মুসলিমদের দায়ী করে মুসলিম নিধনে মেতে উঠে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা। এক পর্যায়ে এই দাঙ্গা পুরো গুজরাটজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। হত্যা করা হয় অন্তত এক হাজার ৪৪ জনকে।
সাবেক বিচারপতি জি টি নানাবতী ও বিচারপতি অক্ষয় মেহেতার প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, গুজরাটজুড়ে যে দাঙ্গা শুরু হয়েছিল সেটি ‘পরিকল্পিত ছিল না।’ এর পেছনে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী মোদিরও হাত ছিল না।
এর আগে ২০০৮ সালে প্রথম ধাপের তদন্ত প্রতিবেদনেও দাবি করা হয়, ষড়যন্ত্রমূলক পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই সাবরমতি এক্সপ্রেসের এস-৬ কামরায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। সে সময়ও সহস্রাধিক মানুষের প্রাণহানির ঘটনায় মোদিকে নির্দোষ বলে দাবি করে কমিশন। তবে তারা দাঙ্গার সময় ‘নিষ্ক্রিয়’ থাকায় কিছু পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।