X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শিশুর শরীরে করোনাজনিত প্রদাহ: দ্রুত চিকিৎসার পরামর্শ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের

বিদেশ ডেস্ক
২০ মে ২০২০, ১৬:৩০আপডেট : ২১ মে ২০২০, ১০:৩৫
image

যেসব শিশুর শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে প্রদাহজনিত উপসর্গ তথা এমআইএস-সি (কোভিড-১৯ সংক্রমণজনিত জটিলতা) দেখা দেবে, তাদেরকে জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ মে) যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি) আয়োজিত এক বৈঠকে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এ পরামর্শ দেন। যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরাও একই কথা বলেছেন। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এর প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

প্রদাহ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া শিশু

প্রথম দিকে করোনায় শিশুদের আক্রান্ত ও মৃত্যুর ঝুঁকি কম থাকার কথা বলা হলেও ভাইরাসটি শিশুদের জীবনও কাড়ছে। আনুপাতিক হারে কম হলেও শিশুরাও আক্রান্ত হচ্ছে। তাদের বিভিন্ন অঙ্গে প্রদাহসহ বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দিচ্ছে যা করোনা থেকে সৃষ্ট বলে মনে করা হচ্ছে। একটি ভয়াবহ উপসর্গ যাকে করোনার উপসর্গ মনে করা হচ্ছে, তাহলো শিশুদের বিভিন্ন অঙ্গে প্রদাহ। যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা আক্রান্ত শিশুদের অনেকের মধ্যে জ্বরের পাশাপাশি পেটেব্যথা, বমি হচ্ছে এবং শরীরে র‌্যাশ দেখা দিচ্ছে, যা প্রচলিত করোনা উপসর্গের মতো নয়। দিন দিন এটা স্পষ্ট হচ্ছে যে, নতুন লক্ষণগুলো শিশুর হৃদপিণ্ডকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এ ধরনের উপসর্গের ক্ষেত্রে জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন।

কোভিড-১৯ আক্রান্ত হওয়ার দুই থেকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে এ লক্ষণগুলো দেখা দিতে থাকে। সুস্বাস্থ্যের অধিকারী শিশুরাও এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গত সপ্তাহে এ ধরনের লক্ষণ দেখা দেওয়া রোগীদের শনাক্ত করার ব্যাপারে সিডিসি একটি স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি করে। ওয়াশিংটন ডিসির পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের আরও অন্তত ২০টি অঙ্গরাজ্যের কর্তৃপক্ষ জানায়, তারা সম্ভাব্য ঘটনা নিয়ে তদন্ত করছে।

নিউ ইয়র্কে নর্থওয়েল হেলথ হাসপাতালে সংকটাপন্ন শিশু যত্ন কেন্দ্রের প্রধান জেমস শনেইডার জানান, তার ওই ইউনিটে যে শিশুরা ভর্তি হয়েছে তাদের মধ্যে অর্ধেকেরই হাসপাতালে আসার আগেই করোনারি আর্টারিতে অস্বাভাবিকতা দেখা গেছে। তিনি মনে করেন, এমআইএস-সি এর কারণে এসব অস্বাভাবিকতা তৈরি হয়েছে।

শনেইডার বলেন, ‘বাড়িতে থাকা কোনও শিশুর যদি জ্বর, পেটে ব্যথা ও শরীরে র‌্যাশ দেখা যায় তবে তাদেরকে যতো দ্রুত সম্ভব শিশু বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যেতে হবে।’ তিনি জানান, নর্থওয়েলে এপ্রিল ও মে মাসে যে ৩৩ শিশুকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে, তাদের অর্ধেকেরই হৃদযন্ত্র ঠিকমতো কাজ করছিলো না। তাদেরকে ভালো ও নিবিড় পরিচর্যার মধ্যে রাখতে হয়েছে।

টেক্সাসের ফোর্ট ওয়ার্থ-এ কুক চিলড্রেন’স মেডিক্যাল সেন্টারের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ নিকোলাস রিস্টার বলেন, বিভিন্ন ধরনের উপসর্গ থাকা কয়েকজন শিশুর চিকিৎসা করেছেন তিনি।  

আলাদা এক ব্রিফিংয়ে নিকোলাস বলেন, ‘এখন আমাদের সবচেয়ে বড় ভাবনার বিষয় হলো, কিভাবে শিশুদের হৃদপিণ্ডের চারপাশে প্রদাহ থামিয়ে দেওয়া যাবে। শুরুতে চিকিৎসকরা ভেবেছিলেন বিরল কাওয়াসাকি রোগের লক্ষণ এগুলো।

লন্ডনের ইমপেরিয়াল কলেজের চিকিৎসক মাইকেল লেভিন বলেন, মা-বাবারা তাদের সন্তানদেরকে হাসপাতালে আনতে ইতস্তত বোধ করতে পারেন। তবে তাদের আসা উচিত। লেভিন জানান, তিনি এবং তার সহকর্মীরা যেসব শিশুকে চিকিৎসা দিয়েছেন, তাদের অবস্থা হাসপাতালে আসার আগেই খুব সংকটাপন্ন ছিল।  তিনি মনে করেন, লকডাউন পরিস্থিতি ও হাসপাতালে আসার আতঙ্ক থেকে এমনটা হয়ে থাকতে পারে।

লেভিন বলেন, ‘যুক্তরাজ্যে সরকারিভাবে দেওয়া স্বাস্থ্য বার্তায় বলা হয়েছে, রোগীদের হাসপাতালে না এসে বাড়িতে থাকার চেষ্টা করা উচিত। সেকারণে জ্বর হওয়ার পরও শিশুদের বাড়িতে রাখা হচ্ছে। আর যখন তাদেরকে হাসপাতালে আনা হয় ততক্ষণে তাদের অবস্থা গুরুতর পর্যায়ে পৌঁছে যায়।’

শিশুদের করোনাজনিত মাল্টি সিস্টেম প্রদাহ হয়েছে কিনা তা রক্ত পরীক্ষা করে দ্রুত জানা যায়। প্রদাহ ও হৃদযন্ত্রের পরীক্ষা করে জানা যায়, ওই শিশু কতটা ঝুঁকিতে আছে এবং তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর প্রয়োজন পড়বে কিনা।

শনেইডার ও লেভিন দুইজনই বলেছেন, দ্রুত চিকিৎসা করালে তা কাজ করে এবং কয়েকদিনের মাথায় শিশুরা হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে যেতে পারে।

লেভিন আরও জানান, বেশিরভাগ শিশুর প্রথমবারের কোভিড-১৯ পরীক্ষার ফল নেগেটিভ এসেছিলো, তবে পরবর্তী পরীক্ষায় আভাস মিলেছে যে তাদের আগে সংক্রমণ ছিল।

 

/এফইউ/বিএ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
সর্বাধিক পঠিত
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!