X
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪
১৬ বৈশাখ ১৪৩১

ছয় পুলিশের অপরাধ কী?

হারুন উর রশীদ
২৩ জুলাই ২০১৭, ১৬:৫৯আপডেট : ২৩ জুলাই ২০১৭, ১৮:১৪

 

তারেক সালমনকে গারদে নিয়ে যাচ্ছেন পুলিশ সদস্যরা বরগুনা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মবকর্তা (ইউএনও) গাজী তারিক সালমনকে ২ ঘণ্টা কোর্ট হাজতে রাখার ঘটনায় বরিশাল আদালতের ছয় পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এখন প্রশ্ন উঠেছে, তারা কী অপরাধ করেছেন? আদালত জামিন নামঞ্জুর করার পর তারা তো আইন মেনেই ইউএনওকে কোর্ট হাজতে নিয়ে গেছেন। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার এসএম রহুল আমিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, ‘আইনের দিক থেকে আমিও তাদের কোনও অপরাধ পাইনি। তাদের তদন্তের স্বার্থে তাদের প্রত্যাহার করা হয়েছে।’

শিশুর আঁকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি দিয়ে কার্ড ছাপানোর মানহানির মামলায় ১৯ জুলাই সকালে বরিশাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ইউএনও তারিকের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। তাকে জেল হাজতেও পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। এরপর আদালতে কর্মরত পুলিশ সদস্যরা তাকে কোর্ট হাজতে নিয়ে যান। ইউএনও তারেক সালমন জানিয়েছেন, ‘পুলিশ সদস্যরা হাত জোরে ধরে আমাকে নিয়ে যায়। আমাকে কোনও হাতকড়া পরানো হয়নি।’

তিনি জানান, এরপর কোর্ট হাজতে বসে তিনি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে  জানান। ওইদিনই দুই ঘণ্টা পর তার জামিন হলে তিনি কোর্ট হাজত থেকে ছাড়া পান। তিনি অভিযোগ করেন, ‘পুলিশ তাকে যোগাযোগ করতে দিতে চাচ্ছিল না এবং কারাগারে পাঠাতে চাইছিল।’

এ ব্যাপরে জানতে চাইলে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার এসএম রহুল আমিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেল, ‘এটাই নিয়ম। আদালত কাউকে জামিন না দিয়ে জেলে পাঠানোর নির্দেশ দিলে তাকে প্রথমে কোর্ট হাজতে রাখা হয়, এরপর সেখান থেকে কারাগারে পাঠানো হয়। আইন অনুযায়ী হাতকড়া পরানোর কথা থাকলেও পুলিশ তাকে হাতকড়া পরায়নি।’

তাহলে ওই ছয় পুলিশ সদস্যকে কেন প্রত্যাহার করা হলো, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ নিয়ে পুলিশ সদর দফতর থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থেই তাদের প্রত্যাহার করা হয়েছে। আমি ওই ছয় পুলিশ সদস্যের কোনও অপরাধ পাইনি। তারা আইন লঙ্ঘন করে কোনও কাজও করেননি। তারা যা করেছেন, আইনের মধ্যে থেকেই করেছেন।’

বরিশাল সিএমএম আদালতে ১৯ জুলাই দায়িত্ব পালনকারী যে ছয় পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে, তারা হলেন—এসআই নৃপেন দাস, এএসআই  শচীন ও মাহবুব এবং কনস্টেবল জাহাঙ্গীর, হানিফ ও সুজন।

বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, ‘ওই ঘটনায় হেস্টি ডিসিশান নেওয়া হচ্ছে। আদালত যদি কাউকে জামিন না দিয়ে জেল হাজতে পাঠাতে বলে তাহলে পুলিশ কি তাকে মুক্ত করে দেবে? বরিশালের কোর্ট পুলিশ আদালতের নির্দেশ পালন করেছেন মাত্র। আর নির্দেশ পালন করতে গিয়ে তারা কোনও বাড়াবাড়িও করেনি।’ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিশেনও এক বিবৃতিতে বলেছে, ইউএনও তারেককে কোর্ট হাজতে নেওয়ার সময় হাতকড়া পরানো হয়নি। তাকে হাত ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’

প্রসঙ্গত,ইউএনও তারিক সালমনের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করেন বরিশাল আইনজীবী সমিতির সভাপতি সৈয়দ ওবায়দুল্লাহ সাজু। তাকে এরইমধ্যে আওয়ামী লীগের বরিশাল জেলা শাখার ধর্মষিয়ক সম্পাদকের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। রবিবার তিনি মামলাটিও প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। তবে মামলার আগে বরিশালের জেলা প্রশাসক ইএনওকে শোকজ করেছিলেন বিভাগীয় কশিনারের নির্দেশে। আর ইউএনও তারেকের শোকজের জবাবে কামিশনার সন্তুষ্ট হননি। সেই চিঠি তিনি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পঠান।

 আরও পড়ুন: বরিশালে আদালত থেকে সেই ৬ পুলিশ প্রত্যাহার

/এমএনএইচ/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ভিজিএফের চাল না পাওয়া উপকারভোগীদের মানববন্ধনে হামলা
ভিজিএফের চাল না পাওয়া উপকারভোগীদের মানববন্ধনে হামলা
রাফাহ শহরে নতুন করে  ইসরায়েলি হামলায় ১৩ ফিলিস্তিনি নিহত
রাফাহ শহরে নতুন করে ইসরায়েলি হামলায় ১৩ ফিলিস্তিনি নিহত
টিভিতে আজকের খেলা (২৯ এপ্রিল, ২০২৪)
টিভিতে আজকের খেলা (২৯ এপ্রিল, ২০২৪)
টিপু-প্রীতি হত্যা মামলার অভিযোগ গঠন বিষয়ে আদেশ আজ
টিপু-প্রীতি হত্যা মামলার অভিযোগ গঠন বিষয়ে আদেশ আজ
সর্বাধিক পঠিত
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে
থেমে যেতে পারে ব্যাংকের একীভূত প্রক্রিয়া
থেমে যেতে পারে ব্যাংকের একীভূত প্রক্রিয়া
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
প্রাথমিক বাদে সোমবার ৫ জেলার সব স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ
প্রাথমিক বাদে সোমবার ৫ জেলার সব স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ