ভারত থেকে গরু পাচারে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সমর্থন আছে−ভারতীয় গণমাধ্যম ‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’-এর এমন সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছে বিজিবি। গত ১৩ জুলাই ওই পত্রিকায় এ সংক্রান্ত একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। বিজিবি বলেছে, ‘ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) ব্যর্থতা ঢাকার জন্যই ভারতীয় গণমাধ্যমে সংবাদটি প্রকাশ হতে পারে বলে অনুমেয়।’
রবিবার (১৯ জুলাই) বিজিবি সদর দফতর থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই প্রতিবাদ জানানো হয়। ওই খবরের প্রতিবাদে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘ওই সংবাদে গত ৬ জুলাই বিএসএফ সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের ডিআইজি এসএস গুলেরিয়া স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিবৃতির বরাত দেওয়া হয়। সেখানে বিএসএফ দাবি করে ভারত থেকে গরু পাচারে বিজিবি সম্পূর্ণভাবে সমর্থন জানাচ্ছে। প্রকাশিত সংবাদ ও বিবৃতিটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। প্রকৃতপক্ষে ভারতীয় চোরাকারবারিদের মাধ্যমে সীমান্ত এলাকায় ভারতের মাটিতে গরু সমাগম ও নদীপথে গরু পাচারে বিএসএফ-এর নিষ্ক্রিয়তা ও তৎপরতার অভাব নিঃসন্দেহে বিভিন্ন প্রশ্নের জন্ম দেয়। ভারতীয় গরু পাচারকারীরা অধিক মুনাফা লাভের আশায় বাংলাদেশে গরু পাচারে অতি উৎসাহী হয়। এতে করে আমাদের দেশীয় খামারগুলো প্রায়ই ক্ষতিগ্রস্ত হয়।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘গরু চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবি অত্যন্ত কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে। সীমান্ত এলাকায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন, পুলিশ, সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তি ও সর্বস্তরের জনগণকে নিয়ে জনসচেতনতামূলক সভা আয়োজন, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাত্রিকালীন পাহারা ও সীমান্তে বিজিবি’র টহল বৃদ্ধিসহ কঠোর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। মূলত, গরু চোরাচালান প্রতিরোধে বিএসএফ-এর ব্যর্থতা ঢাকার জন্যই ভারতীয় গণমাধ্যমে সংবাদটি প্রকাশ হতে পারে বলে অনুমেয়।’
বিজিবি জানায়, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের ওই সংবাদে বলা হয়েছে, চলতি জুলাই মাসের শেষে কোরবানির ঈদ উপলক্ষে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে গরু চোরাচালান বেড়েছে। অর্থাৎ গরু পাচারের পেছনে ধর্মীয় কারণের উপস্থিতির দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। অন্যদিকে, বিএসএফ-এর বিবৃতিতে একই ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘প্রাণীগুলোকে পরম যত্নের সঙ্গে লালন-পালন করা হয়, কিন্তু কোরবানি ঈদের নামে উৎসর্গ করে জবাই করার অর্থ হলো নির্যাতন করা।’
এমন বক্তব্যের প্রতিবাদে বিজিবি জানায়, ‘এটি ইসলাম ধর্মের বৃহত্তর ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহার জন্য অবমাননাকর। ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে চরম আঘাত হানার শামিল।’
এদিকে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম এবং প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের তথ্য মতে, বিগত বছর সারাদেশে ১ কোটির সামান্য কিছু বেশি পশু কোরবানি হয়। এবার করোনা মহামারির কারণে ধারণা করা হচ্ছে এই সংখ্যা ১ কোটির কিছু কম হবে। এই চাহিদা মাথায় রেখে দেশে ১ কোটি ১৮ লাখ ৯৭ হাজার ৫০০টি গবাদিপশু মজুত রয়েছে।