X
রবিবার, ০৫ মে ২০২৪
২২ বৈশাখ ১৪৩১

ছয় মৃত নারীর ‘ধর্ষক’ মুন্নাকে যেভাবে শনাক্ত করলো সিআইডি

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২০ নভেম্বর ২০২০, ১৪:২৮আপডেট : ২০ নভেম্বর ২০২০, ১৫:২৫

সিআইডির দুই কর্মকর্তার সঙ্গে মুন্না ভগত মুন্না ভগত, গত এক বছরে অন্তত ৬ জন মৃত নারীকে ধর্ষণ করেছে। ছয় নারীর এইচভিএসে (হাই ভ্যাজাইনাল সোয়াব) মুন্নার ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। লাশগুলো আত্মহত্যাজনিত কারণে মৃত ছিল। ১২ থেকে ২০ বছর বয়সের মধ্যে তুলনামূলক ভালো লাশ এলেই মুন্না ধর্ষণ করতো বলে সিআইডি জানিয়েছে। 

সিআইডি বলছে, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গের ডোম সহকারী হিসেবে প্রায় ৪ বছর ধরে কাজ করছে মুন্না। শুরু থেকে মর্গেই থাকে সে। ময়নাতদন্তের আগে লাশ রাতে পাহারা দেওয়ার সময় এই কাজে লিপ্ত হতো সে। সিআইডি কর্মকর্তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মুন্না তার এসব অপকর্মের কথা স্বীকার করেছে।

যেভাবে শনাক্ত করলো সিআইডি

২০১২ সালে বাংলাদেশ পুলিশের প্রথম ডিএনএ ল্যাব স্থাপিত হয়। ল্যাব স্থাপনের পর হতে ধর্ষণ ও হত্যাসহ আদালতের নির্দেশে প্রেরিত সব আলামতের ডিএনএ পরীক্ষা ও প্রোফাইল তৈরি করে সিআইডি। গত বছরের মার্চ থেকে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগ কয়েকটি নমুনা পাঠিয়েছিল সিআইডিকে। সেখানে মৃত নারীর এইচভিএসে পুরুষ বীর্যের উপস্থিতি পাওয়া যাওয়ায় পূর্ণাঙ্গ ডিএনএ প্রোফাইল তৈরি করার চেষ্টা করে তারা।

মুন্না ভগত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিআইডির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘কোডিস (CODIS)  সফটওয়্যার আমরা সার্চ দিয়ে দেখি। মোহাম্মদপুর ও কাফরুল থানার কয়েকটি ঘটনায় প্রাপ্ত ডিএনএ’র প্রোফাইলের সঙ্গে একই ব্যক্তির ডিএনএ বারবার ম্যাচ করছে। যেটা অনেকটাই অস্বাভাবিক ছিল। ধারণা করা হয়, একজন ব্যক্তি কর্তৃক ধর্ষণ পরবর্তী হত্যা অথবা ধর্ষণজনিত কারণে আত্মহত্যা হয়েছে। কিন্তু মরদেহগুলোতে কোনও আঘাতের চিহ্ন ছিল না।’

সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা তখন মনে করি, কোনও না কোনোভাবে ভিকটিমদের মৃতদেহের ওপরে কোনও ব্যক্তির বিকৃত যৌন লালসা চরিতার্থ হয়েছে। প্রতিটি মৃতদেহ মর্গে আনার পর তার মৃত্যুর কারণ জানতে ময়নাতদন্ত ও ডিএনএ বিশ্লেষণ করা হয়। সব লাশই ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রেখে দেওয়া হয়। সেখানে বেশ কয়েকজন ডোম নিয়মিত পাহারা দিতো। কিন্তু এই লাশগুলোর ক্ষেত্রে একজন ডোম সহকারী নিয়মিত ডিউটিতে থাকতো। প্রাথমিকভাবে তাকে সন্দেহ হয় আমাদের। পরবর্তীতে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। বাইরে নিয়ে গিয়ে কথা বলার নামে, চা খাওয়ার ছলে তার ডিএনএ সংগ্রহ করি আমরা। সেটা সিআইডি ল্যাবে নিয়ে এসে বিশ্লেষণ করলে ওই ৬ মরদেহের ডিএনএ’র সঙ্গে ম্যাচ করে। তখন শতভাগ নিশ্চিত হয়ে তাকে গ্রেফতারে অভিযান চালায়। বিষয়টি আসামি বুঝতে পেরে গাঢাকা দেয়।’

সিআইডি কার্যালয়ের সামনে মুন্না ভগত শুক্রবার (২০ নভেম্বর) সিআইডি সদর দফতর থেকে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, ৬ মৃত নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গের ডোম সহকারী মুন্নাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মুন্নার ডিএনএ প্রোফাইল মিলে যাওয়ায় মৃতদেহের ওপর সে যে বিকৃত যৌনাচারের করেছে সেটা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণ হয়েছে।

ব্রিফিংয়ে সিআইডি জানায়, আসামিকে আদালতে পাঠিয়ে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন জানানো হবে।

আরও পড়ুন...
মৃত নারীদের ধর্ষণ করতো ছেলেটি!

/এসএইচ/আইএ/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যুবককে হত্যা
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যুবককে হত্যা
আইএমএফ-এর শর্তে ব্যাংক একীভূত হচ্ছে, অভিযোগ বিরোধী দলীয় উপনেতার
আইএমএফ-এর শর্তে ব্যাংক একীভূত হচ্ছে, অভিযোগ বিরোধী দলীয় উপনেতার
নারী বিশ্বকাপে বাংলাদেশের দর্শকদের কাছে আইসিসির প্রত্যাশা
নারী বিশ্বকাপে বাংলাদেশের দর্শকদের কাছে আইসিসির প্রত্যাশা
শাপলা চত্বর ও শাহবাগের দূরত্ব
শাপলা চত্বর ও শাহবাগের দূরত্ব
সর্বাধিক পঠিত
মাঠ প্রশাসনে বিতর্কিত কর্মকর্তাদের লাগাম টানবে সরকার
মাঠ প্রশাসনে বিতর্কিত কর্মকর্তাদের লাগাম টানবে সরকার
‘টর্চার সেলে’ নিজ হাতে অপারেশনের নামে পৈশাচিক আনন্দ পেতো মিল্টন, জানালেন হারুন
‘টর্চার সেলে’ নিজ হাতে অপারেশনের নামে পৈশাচিক আনন্দ পেতো মিল্টন, জানালেন হারুন
মিল্টন সমাদ্দারের তিন মামলার বাদীরই মুখে কুলুপ
মিল্টন সমাদ্দারের তিন মামলার বাদীরই মুখে কুলুপ
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন বৃষ্টি হবে
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন বৃষ্টি হবে
রুশ বোমারু বিমান ভূপাতিতের দাবি ইউক্রেনের
রুশ বোমারু বিমান ভূপাতিতের দাবি ইউক্রেনের