X
বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪
১৯ বৈশাখ ১৪৩১

স্মার্টফোন-ল্যাপটপের নীল আলোতে অন্ধত্ব!

সত্যজিৎ পাল
২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৭:৩৪আপডেট : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৭:৩৬

স্মার্টফোন-ল্যাপটপের নীল আলোতে অন্ধত্ব! আপনি কি স্মার্টফোন, ল্যাপটপ এবং ট্যাবল্যাটের প্রতি আসক্ত? এসব ডিজিটাল ডিভাইস থেকে নির্গত নীল আলো চোখের অক্ষিপটে (রেটিনা) বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে এবং এজ রিলেটেড মাকুলার ডিজেনারেশন (এআরএমডি) হতেপারে। এআরএমডি হচ্ছে একধরনের চক্ষু সমস্যা যেখানে অক্ষিপটের ফটোরিসেপ্টর কোষের মৃত্যুঘটে ফলে আক্রান্ত ব্যাক্তি ৫০ থেকে ৬০ বছর বয়সে দুরারোগ্য ঝাপসা দৃষ্টি অথবা দৃষ্টিহীনতায় ভোগেন।

আলো অনুভব করতে এসকল কোষের রেটিনল নামক এক ধরনের আনবিক পদার্থের প্রয়োজন হয় এবং মস্তিষ্কে এই সংকেত প্রবাহিত হয়, যার ফলে আমরা দেখতে পাই। রেটিনল ছাড়া ফটোরিসেপ্টর অকার্যকর।

সায়েন্টিফিক রিপোর্টস জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা প্রবন্ধে দেখা গেছে এসব ডিজিটাল ডিভাইস থেকে নির্গত নীল আলোর সংস্পর্শে রেটিনল এমন একটি বিক্রিয়া ঘটায় যা ফটোরিসেপ্টর কোষে বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ উৎপন্ন করে, আইএএনএস এর বরাত দিয়ে ইন্ডিয়া টিভি এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনটিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অহিও অঙ্গরাজ্যে অবস্থিত টোলেডো বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক অজিত করুণারত্নে বলেছেন, আমরা নিয়মিত ডিজিটাল ডিভাইস থেকে নির্গত নীল আলোর সংস্পর্শে থাকছি কিন্তু চোখের কর্ণিয়া এবং লেন্স এই নীল আলোকে বাধা দিতে বা প্রতিফলিত করতে পারেনা। নীল আলো চোখের অক্ষিপট নষ্ট করে আমাদের দৃষ্টিশক্তির ক্ষতি করে। রেটিনল থেকে সৃষ্ট বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ সার্বজনীনভাবে যেকোনও কোষ মেরে ফেলতে পারে।

একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ডক্টরেট গবেষক ছাত্র কসুন রত্নায়েকে বলেন, চোখের ফটোরিসেপ্টর কোষের পুনরুৎপাদন হয় না। যখন ফটোরিসেপ্টর কোষ মারা যায় তখন চিরতরেই মারা যায়।

এই নীল আলো যখন রেটিনলের সাথে শরীরের অন্যান্য কোষ যেমন হার্টের কোষ, ক্যান্সার কোষ, স্নায়ুকোষে প্রবেশ করানো হয় তখন তারা মারা যায়। তবে নীল আলো বা রেটিনল একা কোষের উপর কোন প্রভাব ফেলতে পারেনা।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ড. মোঃ রাশেদুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, এসব ডিজিটাল ডিভাইস ব্যাবহার করার সময় আমাদের চোখের পলক ফেলার হার স্বাভাবিক হারের থেকে কম থাকে অর্থাৎ আমরা ডিভাইসটির দিকে অপলক দৃষ্টিতে বেশি ক্ষণ তাকিয়ে থাকি, ফলে এই নীল আলোর প্রভাবে আমাদের চোখের ক্ষতির মাত্রা বেড়ে যায়। তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের ব্যাবধানের কারণে এই নীল আলো সাধারণ আলোর থেকে আলাদা।

এ প্রসঙ্গে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের চক্ষু বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মোঃ ইসমাইল হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ডিজিটাল ডিভাইসের উজ্জ্বলতা খুব কম বা খুব বেশি না রেখে মাঝারি রাখা উচিৎ। এসময় তিনি ২০-২০-২০ তত্ত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দেন। এই তত্ত্ব অনুসারে ২০ মিনিট ডিজিটাল ডিভাইস ব্যাবহারের পর ২০ সেকেন্ড বিরতি নিয়ে ২০ ফুট দূরের লক্ষ্যবস্তুর প্রতি তাকিয়ে থাকা উচিৎ। তিনি বলেন, এটি সম্ভব না হলেও ১ ঘন্টা ডিজিটাল ডিভাইস ব্যাবহারের পর ৫-৭ মিনিট বিরতি নিয়ে সবুজ প্রকৃতির দিকে তাকিয়ে থাকা উচিৎ।

যে সকল ব্যাবহারকারী লম্বা সময় ডিজিটাল ডিভাইস নিয়ে কাজ করেন এবং চশমা ব্যাবহার করেন তাদের বাইফোকাল লেন্সের পরিবর্তে প্রগ্রেসিভ লেন্স ব্যাবহার করার পরামর্শ দেন এই চিকিৎসক।

 

/এফএএন/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
চীনের দক্ষিণাঞ্চলে সড়ক ধসে নিহত ৩৬
চীনের দক্ষিণাঞ্চলে সড়ক ধসে নিহত ৩৬
লাউ খেলে মিলবে এই ৮ উপকারিতা
লাউ খেলে মিলবে এই ৮ উপকারিতা
রাশিয়ার বিরুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনের অভিযোগ যুক্তরাষ্ট্রের
রাশিয়ার বিরুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনের অভিযোগ যুক্তরাষ্ট্রের
কেনিয়ায় বন্যায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৮১
কেনিয়ায় বন্যায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৮১
সর্বাধিক পঠিত
শিশু ঝুমুরকে ধর্ষণ ও হত্যার বর্ণনা দিতে গিয়ে চোখ মুছলেন র‌্যাব কর্মকর্তা
শিশু ঝুমুরকে ধর্ষণ ও হত্যার বর্ণনা দিতে গিয়ে চোখ মুছলেন র‌্যাব কর্মকর্তা
মিল্টন সমাদ্দার আটক
মিল্টন সমাদ্দার আটক
আজও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যশোরে, পথচারীদের জন্য শরবত-পানির ব্যবস্থা
আজও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যশোরে, পথচারীদের জন্য শরবত-পানির ব্যবস্থা
একজন অপরাধীর গল্প বলতে চেয়েছিলেন তিশা
একজন অপরাধীর গল্প বলতে চেয়েছিলেন তিশা
সিয়াম-পরীর গানের ভিউ ১০০ মিলিয়ন!
সিয়াম-পরীর গানের ভিউ ১০০ মিলিয়ন!