সারাদিনের প্রায় অর্ধেকের বেশি সময় কেটে যায় অফিসে। তাই অফিস ডেস্কে কিছুটা সবুজের ছোঁয়া থাকলে শরীর, মন দুটোই প্রফুল্ল ও চাঙ্গা থাকে। তবে বেশিরভাগ অফিসেই যেহেতু এখন সেন্ট্রাল এয়ার কন্ডিশনার থাকে, তাই আলো-বাতাস ভেতরের একেবারেই চলাচল করে না বললেই চলে। তাই অফিস ডেস্কে এমন গাছ রাখতে হবে যা এই পরিবেশে খাপ খেয়ে বেঁচে থাকতে পারে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, অফিস ডেস্কে আপনি কী কী গাছ রাখতে পারেন।
অ্যাগলস্ বা চাইনিজ এভারগ্রিন
এই গাছটি এর পাতার রঙের জন্য বিখ্যাত। বেশিরভাগ গাছের পাতাই কচি থেকে পরিপক্কের দিয়ে আগাতে গাঢ় সবুজ রঙ ধারণ করলেও এর পাতাগুলো রূপালি বা লাল রঙের হয়ে থাকে। এই গাছটির আরেকটি নাম হলো অ্যাগলোনেমা যা দুটি গ্রিক শব্দ অ্যাগলস্ (উজ্জ্বল) এবং নামা (সুতা) থেকে এসেছে। এই সুতা বলতে এই গাছের ফুলের মাঝ থেকে আকর্ষণীয় যে পুংকেশর বের হয় তাকে বোঝানো হয়। এটি চীনাদের মধ্যে একটি জনপ্রিয় গাছ যা তাদের কাছে দীর্ঘ জীবনের প্রতীক। তাই এর আরেক নাম চাইনিজ এভারগ্রিন। এই গাছটি কম বা বেশি আলোয় অনায়াসে বেঁচে থাকতে পারে। তাই অফিস ডেস্কে সাজাতে পারেন নিশ্চিন্তে।
জিজি প্ল্যান্ট
অফিসে হাজারো কাজের চাপের মাঝেও একটু প্রশান্তি কে না চায়? এই জিজি প্ল্যান্ট মুহূর্তেই এর গাঢ় সবুজ পাতার আবহে আপনাকে এনে দিবে অনন্য প্রশান্তি। অফিস ডেস্কে রাখায় সৌন্দর্য তো বাড়বেই, সেই সাথে এর যত্নআত্তি নিয়ে তেমন মাথা ঘামাতে হবে না। কারণ এই গাছ এক কথায় বেশ সহিষ্ণু। খুব অল্প আলোতে বাঁচতে পারে এবং এর খুব বেশি পানির প্রয়োজন হয় না। তবে মাটি শুকিয়ে গেলে পানি দিতে হবে। দেখতে দারুণ এই গাছটি ঘরকে বায়ু দূষণমুক্ত রাখে এবং অ্যালার্জির প্রভাবও মুক্ত রাখে।
পিস লিলি
একরাশ গাঢ় সবুজ পাতা আর মাঝে মাঝে শান্তিময় শুভ্র সুন্দর ফুল। পিস লিলি এতো সৌন্দর্য বিলিয়ে দিতে একটুও কার্পণ্য তো করেই না, বরং এর যত্ন নিয়েও আপনাকে ভাবতে হবে না একটুও। সূর্যের আলো, সার, পানি ছাড়া দিব্যি বেঁচে থাকতে পারে পিস লিলি। সাধারণত ১৬-২৪ ইঞ্চি উঁচু হয়ে থাকে এটি। যার আদি নিবাস যুক্তরাষ্ট্রের উষ্ণ, আর্দ্র বৃষ্টিবনে। তাই আমাদের দেশীয় জলবায়ুতে সহজেই খাপ খাইয়ে নেয়। অফিস ডেস্কে রাখলে পিস লিলির মৃদু মিষ্টি সুবাসে মন হয়ে যাবে ফুরফুরে।
গোল্ডেন পথোস বা মানিপ্ল্যান্ট
মানিপ্ল্যান্ট আমাদের দেশের প্রায় সব ঘরে ঘরেই দেখা যায়। শুধু মাটি নয়, পানিতেও শেকড়সহ মানিপ্ল্যান্ট রাখলে কোনও রকম যত্ন ছাড়াই দিনের পর দিন ডালপালা গজিয়ে লতানো পাতায় বড় হতে থাকবে এই গাছটি। অফিস ডেস্কে এর লতানো পাতা কিছুটা জায়গায় ছড়িয়ে দিলে বেশ সুন্দর দেখাবে। অফিস ডেস্কে অন্য গাছের সাথেও রাখতে পারেন নিশ্চিন্তে। কারণ মানিপ্ল্যান্ট রোদ, পানি ছাড়া অন্য গাছের ছায়াতেও অনায়েসে বেঁচে থাকতে পারে। অন্ধকার ঘরেও নির্দ্বিধায় বেঁচে থাকতে পারে বলে এর আরেক নাম ডেভিল’স আইভি।
লাকি ব্যাম্বু
অফিসের কাজে গুড লাক দরকার হয় না এমন মানুষ নেই বললেই চলে। আর ডেস্কে যদি থাকে এমনই একটি গাছ তাহলে তো কোনও কথাই নেই! কিছু পানি আর পাথর দিয়ে সিরামিক বা কাঁচের পাত্রে রেখে দিলে অফিস ডেস্কের সৌন্দর্য বাড়বে বহুগুণ। তবে অফিস ডেস্ক জানালার ধারে হলেই এই গাছটি কেনা বুদ্ধিমানের কাজ হবে। কারণ এর কিছুটা হলেও আলো, বাতাস দরকার হয়। চীনাদের ফাংশুই মতবাদ অনুসারে লাকি ব্যাম্বু থেকে নির্গত হয় পজিটিভ এনার্জি। এই গাছটিকে চীনা ভাষায় বলা হয় ফু গোয়ে ঝু। চীনা ভাষায় ফু বলতে বোঝায় সৌভাগ্য, গোয়ে অর্থ সম্মান ও শক্তি আর ঝু অর্থ ব্যাম্বু। এই গাছটির পানি মাঝে মাঝে বদলে দিলে ভালো।
