যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে গত ২৪ মে শনিবার অনুষ্ঠিত হয়েছে দুই দিনব্যাপী বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বইমেলা। মেলায় লেখক সেজান মাহমুদকে পুরস্কৃত করা হয়।
অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লেখক তসলিমা নাসরিন। মেলার উদ্বোধন করেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব বেলাল বেগ।
বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে অভিবাদন জ্ঞাপনের পর জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়।
মেলার আয়োজক ছিল 'একাত্তরের প্রহরী' নামে একটি প্ল্যাটফর্ম।
মেলায় প্রবর্তিত এবারের সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন লেখক সেজান মাহমুদ। তাকে দুই হাজার ডলারসহ সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। তার হাতে পুরস্কার তুলে দেন মেলা কমিটির আহবায়ক একুশে পদকপ্রাপ্ত লেখক ড. নুরুন্নবী এবং বিজ্ঞানী ড. জিনাত নবী।
এর আগে এই সাহিত্য পুরস্কারের প্রেক্ষাপট ও সেজান মাহমুদের সাহিত্যিক ও কর্মজীবন উপস্থাপন করেন কবি ফকির ইলিয়াস। ফুল দিয়ে লেখককে বরণ করেন মুক্তিযোদ্ধা তাজুল ইমাম। এসময় উপস্থিত ছিলেন সদস্য সচিব স্বীকৃতি বড়ুয়া এবং আবৃত্তিশিল্পী গোপন সাহা।
এই সাহিত্য পুরস্কার প্রতিবছরই বইমেলায় একজনকে প্রদানের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয় এবং তা স্পন্সর করবে ‘ড. নবী ও জিনাত নবী ফাউন্ডেশন’। এই পুরস্কারের নামকরণ করা হয় ‘বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বইমেলা নবী-জিনাত সাহিত্য পুরস্কার’।
বক্তব্য রাখেন যুগ্ম আহবায়ক ও বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের যুক্তরাষ্ট্র শাখার সভাপতি আব্দুল কাদের মিয়া, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মো. ফজলুল হক, মানবাধিকার সংগঠক, লেখক, অধ্যাপক ড. পার্থ ব্যানার্জি, ডেমক্র্যাটিক পার্টির ডিস্ট্রিক্ট লিডার ড. দিলীপ নাথ, কম্যুনিটি লিডার রানা হাসান মাহমুদ, অধ্যাপক এ বি এম নাসের, সাংবাদিক দস্তগীর জাহাঙ্গির, সাংস্কৃতিক সংগঠক লুৎফুন্নাহার লতা, মিথুন আহমেদ, ফোবানার সাবেক চেয়ারম্যান জাকারিয়া চৌধুরী প্রমুখ। মুক্ত আলোচনার সঞ্চালনা করেন মিনহাজ আহমেদ সাম্মু।
গোপন সাহা, সাবিনা শারমিন এবং তাহরিনা পারভিন প্রীতির উপস্থাপনায় উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশন করেন আল আমিন বাবু এবং জাতীয় সংগীতের নেতৃত্ব দেন নিলোফার জাহান।
মেলায় বিদ্যাপ্রকাশ, নালন্দা, ঘুংঘুর, শব্দগুচ্ছ, অক্ষর, জয় বাংলা পাঠাগার, বিপা, অনুপমা বুকস, রাইটার্স ক্লাব, জয় বাংলা বুকস, আমরা শিশুদের সঙ্গী, গুরুচণ্ডালী, একাত্তরের প্রহরীসহ ১৬টি প্রকাশনী অংশগ্রহণ করে।
‘স্বাধীনতায় ডাক টিকিট’ ও ‘জননী-৭১’ নামে দুটি তথ্যচিত্র প্রকাশ করা হয়।
বইমেলায় এসেছিলেন ক্যালিফোর্নিয়া, নর্থ ক্যারলিনা, ওহাইয়ো, ওয়াশিংটন ডিসি, ফ্লোরিডা, ইংল্যান্ড, কানাডা, জার্মানিসহ বিভিন্ন স্টেট ও দেশের কবি লেখক সাহিত্যিক সাংস্কৃতিক কর্মীরা।
শিল্পী দিনাত জাহান মুন্নির জাগরণী সংগীতের মাধ্যমে গভীর রাতে প্রথম দিনের অনুষ্ঠানমালার সমাপ্তি হওয়ার আগে সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি পর্বে ছিলেন আবীর আলমগীর, কান্তা আলমগীর, সেলিমা আশরাফ, নিলোফার জাহান, পারভিন সুলতানা, শুক্লা রায়, জারিন মাইশা, কামেলা সোফি আলম, আমিনা ইসলাম, রুদ্রনীল দাস রুপাই, পিঙ্কি চৌধুরী, পাপড়ি বড়ুয়া, দিনার মনি, আনিশা হোসেন, দানিয়া সৈয়দ দিয়া, এলমা রুদমিলা, লিমন চৌধুরী, ফারহানা তুলি, তন্ময় মজুমদার, জিএইচ আরজু, মুমু আনসারী প্রমুখ।
বইমেলার দ্বিতীয় দিন ২৫ মে’র অনুষ্ঠানমালা শুরু হয় বিকেল ছয়টায়।
উদ্বোধনী ঘোষণার পর এবং প্রামাণ্য চিত্র 'জাতির জাদুঘর' প্রদর্শন করেন শামিম আল আমিন।
এরপরে ছিল শিশু-কিশোর পরিবেশিত আবৃত্তি অনুষ্ঠান ‘শৈশবের হাতছানি’। সংগীত ও আবৃত্তিতে অংশ নেন বিদিশা দেওয়ানজী, মিথুন আহমেদ, তাহরিনা পারভিন। সংগীত পরিবেশন করেন ফাবিহা নিসা এবং জাহিন হোসেন।
'অভিবাসে দায়িত্বশীল সাহিত্য ও নতুন প্রজন্মের সম্পৃক্তি' শীর্ষক সেমিনার সঞ্চালনা করেন লেখক আসলাম আহমাদ খান। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কবি ফারহানা ইলিয়াস তুলি। এতে আরো অংশ নেন লেখক বদিউজ্জামান খসরু ও সমাজচিন্তক রাফায়েত চৌধুরী।
স্বরচিত কবিতা পাঠের অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ছড়াকার মনজুর কাদের।
পরের পর্বে সংগীত ও আবৃত্তিতে অংশ নেন শেলি চন্দ, লিপি রোজারিও এবং শাহরিয়ার সালাম।
প্রামাণ্যচিত্র 'অবিনশ্বর ৭১' প্রদর্শন করা হয়।
সংগীত ও আবৃত্তিতে ছিলেন সুতপা মণ্ডল, তাহমিনা শহিদ, শারমিন আক্তার, বিলকিস রহমান দোলা, রাজীব ভট্টাচার্য প্রমুখ।
তাজুল ইমাম বইমেলার ঘোষণা করেন সমাপ্তি।