X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

অন্ধরাতের এক্স-রে রিপোর্ট

আমিনুল ইসলাম
০৩ মার্চ ২০২২, ১৮:০৩আপডেট : ০৩ মার্চ ২০২২, ১৮:০৩

ঘুমিয়ে পড়েছে রাত দিঘিপাড়ে, জ্বলে না জোনাকি
জানালায় শ্বাস ফেলে শব্দহীন যাযাবর বাও
মনে হয় কোনোখানে তুমি আছো খুব কাছাকাছি
এ জীবন বয়ে চলে দাঁড় টেনে আঁধারের নাও।
কে যেন বলেছে, রাত পাপীমনা নেতিবাচকতা
খান্নাসের কালো কালো মন্ত্রণার একচ্ছত্র জয়!
যারা জানে তারাই কি জ্ঞানী? নাকি না-জানার হোতা!
দিঘি-দিঘি জানা যত, নদী-নদী তত সংশয়!

সবুজপাড়ায় কোনো সাড়া নেই; আধোরাত জোছনা ঢেলে
উল্টে গেছে চাঁদ, লেগে আছে আধাকালো পাহাড়ের গায়ে।
মনে হয় জেগে আছি আমি;
তুমিও কি জেগে আছ?
কথা যে বলছো—তবু প্রশ্ন জাগে মনে :
জোয়ানা, তুমি কি জেগে, না ঘুমিয়ে?
শুধু কথা বলা—সেটাই তো জেগে থাকা নয় :
ঘুমিয়েও সারা রাত জেগে থাকা যায়;
জেগেও ঘুমিয়ে থাকে দিনভর কেউ কেউ।
দ্যাখো, হাঙর জানে না—কাকে বলে থেমে থাকা;
সূর্য জানে না—দিন কি, আর কার নাম রাত।
তবে কী এমন আর পার্থক্য ঘুম আর জাগরণের মাঝে?
নীরবতার বুক ছুঁয়ে ভেসে আসা হাওয়া
সে-হাওয়ায় ভেসে আসে অদ্ভুতুড়ে ঘ্রাণ;
এমন এ রাতে কে ঘুমায় নাক ডেকে?
এই অন্ধকারে সে কার পিঠের নিচে 
ভুলের তোশকে রচা নগদ সুখের স্বপ্নশয্যা?
দ্যাখো—
বাঘের গায়ের গন্ধে নাক দিয়ে শালবনে ঘুমায় হরিণী;
এরই নাম ঘুম,—এরই নাম অবিরাম জেগে থাকা।


অফিসের ফ্লাগ-স্টান্ডে কমে এসেছে দুপুরের উত্তেজনা
স্বাভাবিক হয়ে আসে বাতাসের উচ্চ রক্তচাপ
তো দুঃখের গোয়েন্দার হাতে কী এমন তথ্য আছে 
এজীবনে আমি সুখী নই! কী ক্লু পেয়েছে তারা?
তবে কেন আমি জেগে আছি! কেন তুমি জেগে নেই?
আজ কোথায় রয়েছে তারা, যারা বলে—
জেগে থাকো ভাই! 
জেগে থাকো বোন!
জেগে থাকাটাই যথার্থ জীবন!
কে বলবে, তারা ঘুমিয়ে না জেগে আছে এ মুহূর্তে?
এসবের মানে জানে যারা, তারা বুঝি জাগে নাকো রাত!
রাত তো একই—বাতাসে একই মাদকতা—
কিন্তু আমি কি আসক্তিমুক্ত?
নাকি আসক্তিমুক্ত তুমিই?
একা যদি তবে কেন জেগে নও? জেগে যদি
কেন তবে কথা বলো ঘুমের হরফে?
কেন কথা নেই জেগে থাকা যতসব প্রবাদের মুখে?
মনে পড়ে সে কবিতা :
‘শ্মশানে ডাকিয়া সুমনাকে পিশাচীনি
জীবনের মানে শোনায় প্রেতস্বরে
কুটিল শহরে আড়ালের বিকিকিনি
মগজ পড়েছে নগদের খপ্পরে।’

শানে নযুল থাকুক্ বা না থাক্, আজ আমাদের
নিশি জেগে সারানিশি নিশি জাগরণ
তুমি মানে আমি; আমি মানে তুমি; 
আমরা তো আসলেই শুধুমাত্র একজন;
দুইখানে থাকি বলে খালিচোখে দুইজন দেখা যায়;
ঘুম ছেড়ে এসো! দ্যাখো, বাইরে একরাত মসলিন আঁধার;
আঁধারের পানঘরে পেয়ালাভরা নৈঃশব্দ্যের ককটেল;
চারপাশে কেউ নেই; 
আমরাই ওমর খৈয়াম—আমরাই সাকী।
মিথ্যার গর্জন, অসত্যের গলাবাজি আর নষ্টদের
নিক্ষেপিত বারুদের বিস্ফোরণ গিলে গিলে 
পাকস্থলি নষ্টপ্রায়, পাথরিত পিত্তথলি;
বিরক্তি-অরুচি চেপে রাখা ওয়াক থু,  
কে জানে কখন পেয়ে বসে নাড়িছেঁড়া বিবমিষা!


অথচ দ্যাখো, ছায়াপথে সুন্দরের কী মোহনীয় সংগীত উৎসব! 
আলোর বসন পরে নেচে যায়— 
জোহরা ও স্বাতী, আদমসুরুত আর হাস্যমুখ অরুন্ধতী 
রুপালি নূপুর থেকে ছড়িয়ে পড়ছে
প্রণয়ের উল্কি আঁকা সাতরঙা আলোর মার্বেল
ডানহাতে কুড়িয়ে নিয়ে কোচা ভরে শুকতারা 
তার বামহাতের গ্লাস থেকে ছিটকে পড়ে মদ;
তাকাও সুদূরে, কৃষ্ণগহ্বর কোনো বিভীষিকা নয়,
এটা হচ্ছে মহাবিশ্বের জাতীয় জাদুঘর 
আয়ু ফুরিয়ে যাওয়ায় যেসকল গ্রহতারা হারিয়ে যেতে বসে
তদের নমুনা, কিছু কিছু, সংগ্রহ করে তাকে তাকে 
রাখা হয় এই জাদুঘরে; যদি একবার ঢুকি, প্রকৃতির 
প্রত্নধন দেখতে দেখেতে শেষ হয়ে যাবে আমাদের আয়ু।
আমাদের অনিঃশেষ আমাজন আছে, 
আছে সুন্দরী সুন্দরবন 
পাশ ঘেঁষে আরো আছে স্রোতস্বিনী ও সমুদ্র 
এসবই হচ্ছে প্রকৃতির সুন্দরী প্রতিযোগিতার মঞ্চ
উপর গ্যালারিতে অটোমেটিক লাইট কন্ট্রোল সিস্টেম
এখানে বৃক্ষের সাথে বাতাসের নৃত্য প্রতিযোগিতা 
এখানে বৃষ্টির সাথে স্রোতের কবিতা আবৃত্তির উৎসব
এখানে জোছনার সাথে ফেনিল ঢেউয়ের কনটেস্ট
ক্যালকুলেটর হাতে দিনের আলোয় দেখা অসম্ভব এইসব;
তাই রাতের পেয়ালা চাই; চাই অন্ধকারের সারাবান তহুরা।


অতএব এসো, পান করি সুগভীর এ পেয়ালা;
দাম নিয়ে দুর্ভাবনা নেই। যদি মরি, 
মরে যাবো, বাঁচবো না এতটুকু;
সেদিন কে শুধবে আমাদের এই ঋণ, কে দেবে
এই পেয়ালার দাম, এই নিয়ে কেন এত ভাবো?
ভেবে নাও—দাম দেবে পৃথিবী নিজেই—
সে-ই আমাদের পাঠিয়েছে এইখানে— 
অদ্ভুত যত পিপাসা দিয়ে ছিদ্রযুক্ত প্রাণে!
মহাবিশ্বে সে-ই তো উদার মহাজন! 
একবার ফেলে যদি, দুইহাতে পুনর্বার তুলে নেয় কোলে। 
ধরো, আর যদি নাহি শুধে কেউ, আর যদি 
আমাদের দেনার দায়ে আবারও নেমে আসতে হয়— 
আসবো এবং পান করবো বেশি বেশি আরও!
ব্যর্থতার জন্য এর চেয়ে লঘুদণ্ড আকাশের আদালতে নেই ।
আর নির্বাণে বিশ্বাস নেই আমাদের; 
নির্বাণীরা নিজেরাই আজ হিংসার উৎসব! 
নিজেরাই চিতাবাঘ, নিজেরাই লেলিহান শিখা! 
পুনর্জন্ম-পরজন্ম দূরে আছে, দূরে থাক্;
সেই ভালো, তারা দূরে থাকা প্রণামে সন্তুষ্ট;
শুধু একরাত আমাদের মতো করে'
অভূতপূর্ব বোধিলাভে খুশি হওয়া যাবে—
পৃথিবীকে চেনা হবে, তার সাথে জানা হবে—
আমাদের প্রচারিত সম্পর্কের সত্যধোয়া রূপ।
এই জ্ঞান নিয়ে কোনো স্বর্গে কিংবা জান্নাতে আমরা যাবো না;
সেখান তো আমাদের ছোটো কিম্বা বড় কোনো ভিটেমাটি নেই।
অতএব এসো খাই। এসো আরো বেশি বেশি খাই!


আহা মদ, দিনের চোখ এড়িয়ে জমে থাকা ঠান্ডা কালো মদ!
ঘ্রাণ এসে লাগে নাকে, শব্দহীন খুলে যায় সত্যের চিচিম ফাঁক!
এই হচ্ছে আদি পাঠশালা! আজাহার-অক্সফোর্ড নয়,
আর হার্ভাড তো সেদিনের শিশু!
দুনিয়াতে আঁধারই হচ্ছে সর্বশ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয়!
আমরা শিক্ষার্থী,
আমাদের জন্য আর অন্য কোনো পাঠশালা নেই;

দ্যাখো, রাজনীতির গায়ে আজ দুর্গন্ধের ছত্রাক!
কোথায় সে সেদিনের রাজ? আর কোথায় সে নীতি?
জর্জ বুশদের জন্য আছে টেরাচোখ জাতিসংঘ,
নেতানিয়াহুর জন্য আছে জাতিসংঘের বড়ভাই যুক্তরাষ্ট্র যুক্তরাজ্য,
কামানে আঙুল রেখে যুদ্ধের জন্য আছে  
সর্বোচ্চ বাজেটের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়,
অথচ প্রেমের জন্য মজনুর দেশেও কোনো মন্ত্রণালয় নেই,
অনুরাগের জন্য নেই কোনো রাষ্ট্রসঙ্ঘ, ন্যাটো কিংবা ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

প্রকৃত প্রস্তাবে মানুষের রাষ্ট্র মানে—বারুদের পাহারায় 
ডলারের মাতব্বরি; হাততালি দিনার ও রিয়ালের।
রাষ্ট্র নই বলে আমাদের নেই কোনো বিবিসি—
সিএনএন-দূরদর্শন-ফক্স কিংবা কানজয়ী আল জাজিরা।
না থাকুক। মিথ্যারই প্রয়োজন একাধিক মুখ, 
অসত্যের প্রয়োজন বহুবিধ লাউডস্পিকার;
নক্ষত্রের হাট যার তার তো লাগে না— 
কোনো বিদেশ মন্ত্রক কিংবা তথ্য মন্ত্রণালয়!
নিশিলব্ধ এই জ্ঞান—যার কোনো বিজ্ঞাপন নেই, 
বিলবোর্ড নেই,
আমাদের প্রাণের ভেতরে জাগিয়ে দিয়েছে  
এক নির্ভেজাল অমিথ্যাপ্রিয়তা।
সত্য দেখে দেখে ধরে যায় সত্য-সত্য নেশা;
নেশা মানেই নিভৃত আনন্দ;
নেশা মানে সঙ্গোপন বোধিলাভ;
আমাদের সমাধিতে রইবে না কোনো এপিটাফ;
কারণ এটা জানবে না কেউই—
আমাদের সত্যজ্ঞান-সেটা কি, কেমন, 
আর কীভাবেই-বা তা অন্তরালে অর্জিত।
তবে হয়তো-বা তিনতারা জানবে কেবল;
কিন্তু এই নিয়ে আমাদের মাথাব্যথার আদৌ কোনও প্রয়োজন নেই।


এই ঘ্রাণ, এই স্বাদ, এই নেশা, আহা, কী যে সুখ! কী যে স্বস্তি!
কোনো কথা নেই; রাতের দেয়ালে— 
দীর্ঘ প্রশ্নমালা হয়ে জমে আছে আলোগর্ভ ঘনকালো মদ;
এই মদ ঘনভিড়ে কোণঠাসা একাকিত্ব;
এই মদ উচ্চকিত কোলাহলে চাপা-পড়া সুর।
পেয়ালায় ঝাকি দিলেও ঢেউ ওঠে না,—
উপচেও এতটুকু পড়ে নাকো নিচে।
তথাপি এই স্তব্ধতা কথার অধিক উচ্চারণ
তবু এই সুর অ-গীত সত্যের অধিক ধ্রুপদী সংগীত।
মনে হয়—আমরা নতুন কোনো জগতে এসেছি!
এইখানে সবচেয়ে বড় সত্য সত্যপ্রেমী অন্ধকার;
অন্ধকার ধরে রাখে যাবতীয় সত্যের সঞ্চয়।
সূর্যের ঔরস থেকে সত্যের জন্মলাভ অন্ধকারের পেটে।
অন্ধকারই মহাকালের আর্কাইভ;
আলো মানে মুখোশের মেলা, 
আলো মানে মুখোশের রঙ;
মনে হয়—সত্য তার স্বরূপে উজ্জ্বল শুধু নির্ভেজাল অন্ধকারে;
আচ্ছাদিত গভীরে যে ডুব দিতে জানে, 
সে জেনেছে, অন্ধকারে বসে থাকে প্রাণ,
আলো তার সঙ্গোপন ড্রেসিংটেবিল;
আলোতে চেহারা দেখে অন্ধ অন্ধকার,
সেটা কিন্তু আমরা দেখি না : সেই চোখ আমাদের নেই;
আমরা তো নেতানিয়াহু-উইরাথু-আইএস!
আমরা কি দেখতে পাই আয়নায় বিম্বিত 
হিংস্রতা, নিষ্ঠুরতা, প্রলোভের রেখাগুলো—
মুখোশে অভ্যস্ত আমাদেরই মুখের ওপর? 
মুখোমুখি আমরা তো দেখি শুধু—
মুখোশে সুন্দর মুখ; মুখোশেই হাততালি।
সভ্যতার এত এত কারখানা; কি কাজ তাদের?
তারা তো মুখোশ বানাতেই ব্যস্ত রাতদিন সকাল বিকাল
হায় রে সভ্যতা, 
মুখোশ বানানোর গর্বে এতটা মাতাল তুমি আজ!

প্রযোজিত ঠোঁটে ঠোঁটে কোম্পানির হাসি; 
পাতানো সৌন্দর্য!
তাই দেখে সেলিব্রেটি চোখ ভোলে, 
তালি দেয় আমন্ত্রিত হাত!
তবু খালি ঠোঁট আর কতখানি হাসে? 
আহা অন্ধকার,
তুমি খুলে দিয়েছো সত্যের অপঠিত পাঠাগার!
ঘুম থেকে জাগরণ উত্তম!
আলো থেকে উজ্জ্বল অন্ধকার !
খুলে যায় চোখ! খসে পড়ে আবরণ!

সবখানে তালা ঝোলে; তালাবদ্ধ সব কোলাহল
স্তব্ধতার মহাসিন্ধু ঢেউশূন্য, থেমে আছে দোলা!
নৈঃশব্দ্যের ঘাড়ে ঝোলে শব্দগর্ভ বন্দুকের নল
খোপে ভরা—‘এই বেটা গেট খোল হারামির পোলা!’
ঘুম আছে, স্বপ্ন নেই; নেই কোনো নাক ডাকাডাকি
রাতকে ছিঁড়ছে ভয়—হয়তো তা দিনের কারণ
কীসের ভরসা রচে ডানাখোলা আঁধারের পাখি
জেগে আছে চুপচাপ; চোখে তার সূর্যের বারণ!

সহজ-সুলভ নয়, সাধারণ তো এতটুকুও নয়,
এই মদ হিন্দি ডন সিনেমার দুঃসাহসী নায়কের পান—
খাইকে পান বানারসওয়ালা!
অর্ধেকও হয়নি খাওয়া, দ্যাখো—
এরই মধ্যেই খুলে গেছে তালা!
এতদিন যা পড়েছি, এতদিন যা দেখেছি,
সেই-পড়া, সেই-দেখা, উল্টে যায় একে একে।
চোখ কত ভুল দেখে, কান কত ভুল শোনে,
সেটা দেখে, সেটা জেনে আমাদের মনে আজ 
জেগে ওঠে বিবিধ বিস্ময়! বাড়তি পিপাসা।
কোথায় কোন্ সমুদ্রপাড়ে স্লো-বার্নিং গেরুয়ারঙ 
জেনোসাইড ক্যাম্প আর
কোথায় সেন্ট্রাল আফ্রিকার বাঘশূন্য নতুন জঙ্গল—
কোন্ খানে রান্না হয় সভ্যতার মেদমাংসভুঁড়ি—
কোন্ ঘরে শয়তানের আণবিক ওভেন—
কে জোগায় কাঠখড় 
কার হাতে উসকাঠি
আর কে দেয় বাতাস,
এসবই সূর্যহীন অন্ধকারে নিজচোখে দেখা যায়।

দ্যাখো—রাতের জমিনে খোলা আকাশের নিচে 
কালো সম্মেলন কক্ষ; খুলিদের বিশ্ব-সম্মেলন; 
সম্মেলনে মুখোমুখি—
একপাশে হালাকু খান, জেমস নান, হেনরি মার্টিন
অন্যপাশে বেগিন, হিটলার, সাভারকার, রাও ফরমান;
সম্মেলনে যোগ দিতে পথে আছে আরো তিনজন;
খুশি তারা হাতে নিয়ে মধ্যপ্রাচ্য-কান্দাহার—
মধ্য আফ্রিকার সাথে ভারতীয় উপমহাদেশ 
এবং সমুদ্রের জলে ভেজা রাখাইনের ম্যাপ;
কেবল অপারেশন পোলো আর অপারেশন সার্চলাইট নয়, 
তাদের চোখের গর্তে আরো কত শুকানো রক্তের দিঘি!
সকলেই কথা বলে, সকলেই উত্তেজিত, 
ঠোঁটও নড়ে সকলেরই কিন্তু কোনো শব্দ নেই; 
মৃতদের উচ্চারণ শব্দহীন;
আজরাইলের একহাতে কবজ-মেশিন,
অন্যহাতে অটো-সাইলেনসার।
দ্যাখো দূরে- আদমসিঁড়িতে,
দ্যাখো কাছে, মহাকবির স্মৃতির ওপর—
পদ্মাসনে বসে হাসে গেরুয়াবেশী ফেস অব টেরর!
খুলিদের সম্মেলনে তাকে দেখে নতজানু 
হালাকু-মেজর নান-হিটলার-নাথুরাম 
টিক্কা খান এবং আরও একজন!
চোখ মেলে দ্যাখো, দ্যাখো মন ধুয়ে, 
প্রজেক্টেড ফিল্ম নয়, দেখা যায়- 
কঠিনসত্যের মেকআপলেস মোহহীন মুখ।
আঁধারের ইমারতে গড়ে ওঠা সত্যের সংরক্ষণাগার—
মহাকালের মিহিকালো আর্কাইভ।

জাতিসংঘের ফটো অ্যালবাম, দুপুরের চোখ দিয়ে
আমিও দেখেছি; দেখেছো তুমিও; 
সেখানে যা আছে সে তো নদী নয়, 
নদী থেকে তুলে রাখা দুতিনটি পানির কলস!
হাজার মাইল ব্যাপী সেদিনের অক্সিজেনের সবুজ বাগান
কত প্রাণ কত প্রাণী কত বৃক্ষ কত নীড়
পাখা মেলা কত পাখি, ডানা মেলা কত মাছ
স্কুলগামী কতশত নাপাম বালক
ক্রীড়ারত কত শত নাপাম বালিকা
ছাই করেছিল কারা ফ্যান্টম আকাশ থেকে 
রাত দিন ঢেলে ঢেলে 
রংধুনু সাতরঙ আর কমলার রস
যা কখনো ছিলো নাকো মেঘালয়ের বরষার আকাশে 
যা কখনো ছিলো নাকো স্যাভেলোর কমলাবাগানে!

আরেকটু পিছু ফিরে আরো মনে করে দেখো, 
এই তো সেদিনের সে এক হরর সিনেমা 
কারা কারা হাতুড়িশাবল নিয়ে মেতেছিল 
ঈশ্বরের বাদামী চূড়ায় আর
কে মৌন সম্মতি দিয়ে বসে ছিল দীর্ঘক্ষণ 
রাজকীয় প্রার্থনার অভিনয়ে,
কারা ঢেলেছিল অগ্নি 
ঘুমে অচেতন বৃদ্ধ-শিশু-নারীর নগরে আর
কোন্ খানে কারা কারা রেঁধেছিল 
সেই ধ্বংসের গেরুয়া আগুন!
দেখে নাও এইখানে—এই ঘনঅন্ধকারে
এখানেই সুরক্ষিত কিম উট—মাসকারেনহ্যান্স 
এবং প্রবীণ জৈনদের শতশত অমুদ্রিত ক্যামেরার কাজ
লাইভ এবং স্টিল, যত ইচ্ছে যেমনিচ্ছে
এক এক করে দেখে নিতে পারো সব।
মনে রেখো, এসব কোথাও পাবে না তুমি 
ব্যাবিলন-নয়াদিল্লি-লন্ডন-প্যারিস 
কিংবা আলেকজান্দ্রিয়ার কোনো পাঠাগারে।
এসবই কালের ক্লাসিফাইড ডক্যুমেন্টস 
‘কনফিডেন্সিয়াল’ সীল নিয়ে 
শতাব্দীর তাকে তাকে সংরক্ষিত
মহাকালের বায়তুল হিকমায়।
এইখানে লেখা আছে অবিকৃত ইতিহাস;
ছাব্বিশ জানুয়ারি মানুষের নুতন বিজয় 
নাকি হত্যার উৎসব,
ক্ষেত ও খাড়ি থেকে মুছে ফেলা এইসব ছবি,
আলোর টর্চলাইট নিয়ে হাতে   
আঁধারের অ্যালবাম খুলে এসো দুজনেই দেখি! 
 
দ্যাখো- আজ এই রাতে যত পান করি
ঘনকালো পুরাতন মদ,
ততো খুলে যায় দিন ও দুনিয়া!
সত্য সে এক সন্ধ্যাপ্রাণ পরাবাস্তব গহন কবিতা;
তার কাছে মালার্মে-বোদলেয়ার ফেল;
বহুভাষী অভিধান? কাজে লাগবে না।
প্রস্তুতি একটাই: আগে মাতাল হওয়া; অতঃপর 
আলোর টর্চলাইট মেরে পড়ে নিতে হয় 
আঁধার হরফে লেখা— 
এইসব শব্দ বাক্য কূটাভাস অদর্শিত চিত্রকল্প।
মলাট কঠিন কিন্তু ভেঙ্গে দেখো— 
ভিতরে সে পাকাডাবের জমাটবাঁধা দুধ!
অন্ধকারে ধ্যানরত হে দিব্যজ্ঞান, বলো, 
রোদেলা দুপুর যদি শেষ সত্য হয়, 
তবে নক্ষত্ররা সাতবার লক্ষবার মিথ্যা!
ভোর যদি সত্য হয়, তবে 
নদ-নদী-বৃক্ষলতা অগণিত মিথ্যা!
এইসব নিয়ে বাদুড় বিভ্রান্ত নয়; বিভ্রান্ত অংক শেখা মানুষ।

মানুষ দেখতে চায়, কিন্তু দেখতে পারে না পুরো ছবি; 
যেদিন ঝামেলা শুরু, সেদিন থেকেই 
তার চোখে একজোড়া অদৃশ্য চশমা—
সে জানে না, কেউ তাকে বলেও দেয়নি—
তার চোখে ওই চশমা কবে কখন পরিয়ে দিয়েছে 
কোন্ প্রাত্যহিক হাত! আলো নিজে কেউ নয়;
আলো থাকে দিনের বাড়িতে; আজীবন ভাড়াটিয়া;
আলো ভাড়া খাটে; আলো তোতাপাখি হয়;
আলো ধুলো ধুলো খেলা খেলে রোজ;
আলোকে ভাড়া খাটায় সুদকষা গণিতের দিন।
এই দ্যাখো—
মাত্র একটি বছরে দুইশত একচল্লিশটি সর্বনাশা আগুন!
মাত্র কয়েক বছর হয়, এ আগুন দেখেছে পৃথিবী।
কিন্তু যে-চুলোয় রাঁধা হয় বহুরঙা ধ্বংসের আগুন, 
শয়তানের ওই চুলোগুলো কয়জনের চোখে পড়ে, বলো!
প্রযোজিত দিনের উঠোনে শয়তান পরে থাকে  
মোহমাখা আলোর গাউন,
চোখেমুখে মেখে থাকে রোদ ও আলোর প্রসাধনী;
আলো তাকে প্রতিরক্ষা দেয়।

আজ এই রাতে যখন নিদ্রামগ্ন সবখানে সবাই,
এই স্বয়ংক্রিয় অন্ধকারে দিগন্তের মসৃণ দেয়ালে
প্রদর্শিত হচ্ছে এক্স রে রিপোর্টের মতন 
শয়তানের সাফল্য-সিনেমা;
আরও দ্যাখা যায়—একটি নীল নকশার ড্রাফ্ট কপি;
অঘোষিত এই ক্রুসেড চেহারায় নতুন, অন্তরে অভিন্ন।
দ্যাখো—আলোর বো টাই খুলে রেখে পাশে,
সভ্যতার দরোজায় পা ছড়িয়ে শুয়ে আছে 
বাঘ এবং নেকড়ের মহামেধাবী জোট—,
রাজজ্ঞানে বের হয়ে আছে আণবিক নখর ও থাবা।
এই দেখে জড়োসড়ো মরণ-উত্তর মধ্যযুগ।
যদি চাই—জন্মসূত্রে এদের আমরা ‘লেংটু মামা’ বলে ডাকতেও পারি!

ফের একথাও সত্য যে, দিনের চোখে দিন দেখে—
কেবল মুখোশটাই সবখানি মহামূল্যবান!
মানুষের মানচিত্রে মুখোশই জাতিরাষ্ট্র;
মহামুখোশের নাম রাষ্ট্রসংঘ।
রাষ্ট্রসংঘ প্রশয়িত রাষ্ট্রে বাস করে খালি মুখ কত দেখা যায়!
অধিকন্তু সমস্যা এই যে—
সত্য মানে সবখানি চাঁদমুখ নয়;
কোনো কোনো সত্যের পিঠেও কিম্ভূতাকৃতির কুঁজ;
কোনো কোনো সত্যের ঠোঁটেও লালচে-কালো ঘা;
কোনো কোনো সত্যের উরুতেও হলদ-হলুদ অসুখ;
কোনো কোনো সত্যের স্তন ঝুলে-থাকা বায়ুশূন্য বেলুন!
আর যখন সে বেপরোয়া, 
আর যখন সে প্রতিদ্বন্দ্বীহীন,
মুখোশ ফেলে সত্য তখন—
আটলান্টিক থেকে আরবসাগর দলবদ্ধ খুনি!
রুদ্ধকণ্ঠ সত্যের পড়শি পর্বতের যুবতী রুবিনা;
তাকে গ্যাং রেপ করে রাষ্ট্র প্রযোজিত  
আলোর মুখোশ-পরা শিশ্ন;
ঊধাও অতঃপর রুবিনার বিক্ষত যোনি ও গোঙানি!
তার কথা বলা, তার চিহ্নহীন কবরের ছবি তোলা- 
গুম হওয়ার ঝুঁকিতে নিষিদ্ধ।
সত্য কখনো কখনো সংখ্যালঘু যুবকের
একতরফা এনকাউন্টারে মারা পড়া;
তাকে নিয়ে অভ্যস্ত রাষ্ট্র শোনায় মুখোশিত প্রেসনোট-
যাকে বলা যেতে পারে রাষ্ট্র-বিরচিত 
ম্যাজিক রিয়ালিজমে ভরা খুনের উপন্যাস!
এই উপন্যাসের শেষ যেখানে, 
যেখানে থেমে যায় পাঠ আর পর্যালোচনা,—
সেখানে খুনি সেলিব্রেট করে পদ ও পদোন্নতি।

আর দ্যাখো—মঙ্গলগ্রহে পা ফেলে নাচছে সেঁজুতি!
তার পায়ে কোনো বেড়ি নেই, হাতে নেই দড়ি;
অথচ সে মুক্ত নয়!
অদৃশ্য অন্ধকারের অন্তরালে 
প্রযোজকের হিসাব নিয়ে, 
পরিচালকের মেধা নিয়ে—
বসে আছে আলো-আলো গ্রিনরুম ।
রোদের পথিক চায় ছায়া; 
দুস্কৃতি চায় বোবা আড়াল;
রাষ্ট্র চায়- রঙিন মুখোশ 
এবং মুখোশের পেছনে অগণিত তোতামুখ।
সত্য দিয়ে—
মদনমোহন তর্কালঙ্কারের পাঠশালা চলে, 
রাষ্ট্র চলে না; সংঘ তো নয়ই।

আজ এই রাতে তুমি জানো—আমি জানি—
আমাদের ব্যর্থতার অজ্ঞাতপূর্ব কারণসমূহ;
শরীর প্রস্তুত ছিল—
ছিল মনও—
যাকে বলে ফুললি ওয়ার্ম আপ্ড;
কেন তবে হলো নাকো?
বয়ে-আসা ঢল কেন হলো নাকো পাহাড়িয়া নদী?
তাহলে তুমি কি শুনেছিলে কোনো না-খেলার বাঁশি?
কিম্বা আমি কি ভুলপক্ষে ছিলাম?
সকল জবাব দ্যাখো ফুটে আছে 
সচিত্র রিপোর্ট হয়ে আলো-আঁধারির অক্ষরমালায় !
একবার দেখো যদি তুমি, একবার দেখি যদি আমি,
আমাদের জানা হয়ে যায়—
আমাদের বিফলতা ছিল,—বেদনাও ছিল দুজনার,
কিন্তু তার জন্য সুমনা মোটেও কোনো কারণ ছিল না;
অথচ তুমি তার পায়ের বৃষ্টিকে সাইক্লোন দেখেছিলে!
তুমি তখন অন্যকিছু,—তুমি তখন অন্য কেউ। 
আর আজ এই অন্ধকারে আরো দেখি,
সত্যচ্যুত হয়ে ভুলের ভূগোলে ছিলাম আমিও;
আমিও কুয়াশায় কাঁপা জোছনাকে সাদাভূত দেখেছিলাম।
আমাদের মতো করে আরো কত মহাজন বেদনা পেয়েছে
তারাও একদিন বুঝবে সেসবের ভেদকথা যদি
আমাদের মতো করে ভর্তি হতে পারে আঁধারের বিশ্বদ্যিালয়ে।

দ্যাখো—মহাকালের সড়ক বেয়ে হেঁটে আসা অনেক বিরহীপ্রাণ
জেগে আছে পাহারাবিহীন স্বর্গ-নরকের মাঝখানে—
চন্ডিদাস-রজকিনী, লাইলী-মজনু, শিরি-ফরহাদ,
এবং রোমিও জুলিয়েট; আরও আছে সেলিমের আনারকলি;
বাকিদের অনেকেই মুখচেনা কিন্তু নাম মনে নেই।
তাদের সকলেরই চোখে-মুখে বহুযুগের প্রত্ন-পিপাসার ছাপ;
আর দ্যাখো,
কারামুক্ত স্বজনহীন মানুষের চোখ নিয়ে চোখে 
তাকিয়ে আছেন হেরেমের দলবিহীন নারীর দল।
তুমিই বলো, কার দিকে হাত বাড়াবে নারী— 
যেখানে সঙ্গীশোষণের সাক্ষী পুরুষের খ্যাতির পাহাড়!
তো কি চাইবে এইসব মরণোত্তর তপ্তপ্রাণ,
আর তা চাইবেই-বা কার কাছে,
সে ব্যাপারে এখনও তারা সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি।
বিধাতার আইনে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা আছে, নাকি নেই—
কোনোকিছুই পরিস্কার নয় এইসব বিক্ষুব্ধ আত্মার কাছে।
চিরবঞ্চিত কানে তারা কখনো শোনেনি কোনো স্লোগান;
আসলে তারা এও জানে না,
কাকে বলে অগ্নিমিছিল, কাকে বলে বলে পিকেটিং!
যদি তাই হতো, তবে স্লোগানে-মিছিলে
এবং মরণোত্তর স্মারকলিপিতে
হয়তো কেঁপে উঠতো আজ
শ্রান্তিবিনোদন ছুটি ভোগরত বিধাতার রাতের রাজপ্রাসাদ!

দ্যাখো, আঁধারের বিজ্ঞ আদালতের সামনে
সাতাশি লক্ষ প্রজাতির মরণ থেকে জেগে ওঠা কোটি কোটি প্রাণ
দাঁড়িয়ে আছে লাইনে;
অভিযোগ! অভিযোগ! অভিযোগ!
শুধুমাত্র একটি প্রজাতির বিরুদ্ধে যাবতীয় অভিযোগ!
মনে করে দেখো—
দিনদুপুরে আমরা আদালতের কত রায় শুনেছি,
কোতয়ালী থানায় বসে কতদিন কত এজাহার পড়েছি
সিটিজেন চার্টারের অভিযোগ বাক্স খুলে দরখাস্ত পড়েছি
একটার পর একটা,
ক্রাইম রিপোর্টারের রিপোর্ট পড়ে পড়ে কতবার
চশমার গ্লাস চেঞ্জ করেছি;
কিন্তু আজ এই অন্ধকারের আদালতে যত বাদী দেখছি,
যত ফরিয়াদ শুনছি দু’কানে, তার হিসাব তো—
সুগাকু সুপার কম্পিউটারের হার্ডডিস্কও ধারণ করতে পারবে না!

দ্যাখো—দেখতে দেখতে কখন কোন্ ক্ষণে মিলিয়ে গেছে 
অস্তপথের রুপালি রেখা;
কাকের একতার মতো ঘনতায় জমা হয়েছে
শব্দহীন অন্ধকার।
বিস্তারিত আঁধার ছুঁয়ে ফেলেছে—
পারস্যের সুরাইয়া মুখ, 
আফ্রিকার মেঘমেঘ চুল,
প্যারিসের অর্ধনগ্ন ধবধবে ঊরু;
দলিতের ফাটা পা ছুঁয়ে আসা অন্ধকার গা ঘষে  
চেয়ারে আসীন ভট্টাচারেয্যর গায়ে,
উইনি ম্যান্ডেলার পুরুষ্ট অধর চুমে-আসা হাওয়া চুমু খায় 
মেরিলিন মনরোর ঠোঁটে।
আকাশ ও সমুদ্রের ফাঁক, 
মৃত্তিকা ও স্বপ্নের ব্যবধান—
ঘুঁচে গেছে সব । 
দ্যাখো,  চোখ দিয়ে ছোঁয়া যায়- 
কালোর মোড়কে বাঁধা 
প্রতিটি দূরত্ব, প্রতিটি অসীমা ।
বস্তুত এই মহাকালো সমাবেশ গভীর ছন্দের এক দীঘল কবিতা:
বলা যায় কালো মহাকাব্য—কূটাভাষে—ব্যঞ্জনায়
আগাগোড়া ঐক্যের বর্ণমালায় লেখা।
বর্ণজ্ঞান যথেষ্ট নয়, বর্ণমালার পেছনে যে প্রচ্ছদের রঙ,
অধিক ব্যঞ্জনাময় সে-ই।
জ্ঞানীর জন্য দৃষ্টান্তই যথেষ্ট; তাই আরও দ্যাখো, 
ঘাসগ্রামে প্রদর্শিত ছবি; ঘাসে রক্ত;
মহান সংসদের সামনে এখন তারকাচিহ্নিত প্রশ্ন: 
কে বেশি হিংস্র, বাঘ নাকি হরিণ?
স্বতন্ত্র সাংসদের মুখে অন্ধকারে ব্যাখ্যা দেয় ঘাস;
সেই ব্যাখ্যা আলো থেকে সম্পূর্ণ আলাদা,
দীর্ঘদিনের দাবির বিপরীতে পাল্টা এক দাবি
অভিনব অথচ পুরোনো।
কোনোটাই মিথ্যা নয়। তার মানে—মূল সত্য বহু-বিস্তারিত।

আচ্ছা, অন্ধকার তবে কি কোনো সাম্যে বিশ্বাসী?
হয়তোবা দেখেনি এই দৃশ্য সাম্যবাদের মহামতিগণ।
আমি দেখি—তুমি দেখো—কোনো কোনো রাতে
আর দেখে বোবাকালা উঁচু আসমান;
অভিজ্ঞ দু’চোখে উপবাসী বৃক্ষ দেখে,
আরও দেখে কাশবনের পাশঘেঁষে হট্টিটির বাসা।
তাদের সবার কথা বুক পেতে শোনে, কান পেতে শোনে
মুখে কস্ট টেপ আঁটা মৌসুমী হাওয়া; 
হাওয়ার কাছ থেকে কে শুনবে সেইসব দুঃখের কাহিনি?
না-দেখা না-শোনা এবং না-বলা এইখানে আমরা অভিন্ন।
আর এখানেই নিদ্রামগ্ন আগ্নেগিরি মানুষের যাবতীয় সম্ভাবনা।

অথচ গবেষণার বিষয় এই যে, করহানি নিয়ে 
আঁধারের কোনো মাথাব্যথা নেই! মানুষের আছে?

/জেডএস/
সম্পর্কিত
দোআঁশে স্বভাব জানি
প্রিয় দশ
প্রিয় দশ
সর্বশেষ খবর
হাসপাতালের বদলে শিশুরা ঘুমাচ্ছে স্বজনের কোলে
হাসপাতালের বদলে শিশুরা ঘুমাচ্ছে স্বজনের কোলে
পারটেক্সের বিপক্ষে হেরে রূপগঞ্জ টাইগার্সের অবনমন
পারটেক্সের বিপক্ষে হেরে রূপগঞ্জ টাইগার্সের অবনমন
সংঘাত বাড়াতে চায় না ইরান, ইসরায়েলকে জানিয়েছে রাশিয়া
সংঘাত বাড়াতে চায় না ইরান, ইসরায়েলকে জানিয়েছে রাশিয়া
বিএনপির বিরুদ্ধে কোনও রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী
বিএনপির বিরুদ্ধে কোনও রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী
সর্বাধিক পঠিত
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ
ইসরায়েলি হামলা কি প্রতিহত করতে পারবে ইরান?
ইসরায়েলি হামলা কি প্রতিহত করতে পারবে ইরান?
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!