অমৃতদেহ
[সঙ্গের আগে সে দেহই থাকে। আসঙ্গে আর থাকে না। কিন্তু নিঃসঙ্গ হলে পুনরায় সেই-ই দেহময়।]
নতজানু হও, বলো বীজ―ফুঁ দিলে কনকচাঁপা।
চাঁপারা ভাই ভাই, চাঁপাদের ভয় নাই।
হংস দেখো―বাম দিক থেকে ধ্বনি, ডান দিকে বর্ণ; মাঝখানে অক্ষর ঘুমায়।
তুমিও বিশ্ব, কত কি বহন করো―
দিয়ে মাটি, দেখো খাঁটি, তারপর হাঁটাহাটি...
আছ, তার বড় প্রমাণ ছিলে না! কোথায় ছিলে!
জল থেকে জল হয়,
আবার জল থেকে
জল নিলে জল থাকে।
অরণ্যে যোজনগন্ধা, পুরুষ দৌড়ে যায়... শিশির যায়...
সামনে অমৃতদেহ...
[দেহ যেন গমখেত, সারা দিন বেহালা বাজে।]
প্রতিদৃশ্য ৮৪
প্রতিদৃশ্য আমি। আমাকে আমির মতো কিছু তুমি দাও।
তুমি রেলগাড়ি। ঝমঝম। তোমার নামে দিনে দুবার সাতটা বাজে।
একটা ঝাউ। ঝাউয়ের মাথায় রোদ। রোদের মাথায় উর্ণি।
কোনো গোলটেবিল কোনো দিন ঝাউগাছ হবে না। তর্ক হবে। যুদ্ধ হবে। পারমাণবিক হবে।
মানবিক হবে শুধু চা। কফি। চিকেন আর করমর্দন।
পাখিগুলো গোল। রঙ্গও গোল। তোমরা গোল গোল খেলো।
গতি ও গমন ছিল। আকার-প্রকার ছিল। আদি ছিল—অন্ধকার।
তার আগে শূন্য শুরু। পাখিরা জানে, পাখিরা আজও রক্ত দেয়।
ভূগোল দেখো। চাপাচাপা পাশ। কমলালেবু চিরদিন তুল্য থেকে গেল। মানচিত্র হলো না।
যুক্তরাষ্ট্র
দৃশ্যত শরীর একটি রাষ্ট্র, ঝরাপাতা, পাতাদের বাতাস বহন।
রাজ্যগুলো সাদাকালো, লালনীল সবুজহলুদ
আসমানি।
তারা রঙ্গন। রঙ্গন।
তাদের আকাশবাতাস, গাছফুলনক্ষত্র, পাখি, সব আছে।
সংবিধান আছে...
মাটি-জল আাছে―
স্রোত-আলো আছে―
তুমি আছ―তুমি স্বর ও শরীর, একেক রাজ্যে একেক নাম তোমার।
কোথাও জ্যোতি, জুহু-আম্রপালী, কোথাও ছয়কোটি মৃত জোনাক।
তুমি পালাতে পারো না; প্রতি অংশে অংশ মিলিয়ে থাকো; স্পর্শ দিয়ে গুছিয়ে আনো দেশ।
তুমিও স্বেচ্ছাচারী অথচ শাসন করো―
আর
যখন শাসন করো, তখন সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র কেমন অশান্ত। উত্তেজিত।
আর একটু একটু কম্পমান।
চরিত্রগণ কহে
চরিত্রগণ কহে―ইতিহাস আমাদের মহান করেছে, পাতায় পাতায় তারই জয়ধ্বনি। যুদ্ধভারাক্রন্ত শব্দের ভেতর ঘুমিয়ে পড়ি, জেগে উঠি ট্রয় অথবা পানিপথে। আমাদের কেউ পাখি ভাবে না, না আকাশ, না নয়নতারা।
দর্শক কহিলেন―সাধু!! সাধু!!
একসময় চরিত্রগণ ভাবিতে বসে―[যাকিছু পদ ও অর্থ তাই মোক্ষ। একমাত্র পদার্থই অণুমান এবং অনুমানের অতীত।]
তারপর―
বিয়োগও বিশেষ যোগ, শূন্যগুলো নিঃশূন্য হয়ে আসে।
সর্বত্র ধ্বনিত হয়―আলোর সন্ধান হেতু, ঘোরে জনে জনে। তোমারে পাইতে চাই, তোমার নির্জনে।
পিথাগোরাস
একটি ত্রিভুজ...
আমরা সমকোণ তৈরি করে আছি। অতিভুজে তোকে দেখে পিথাগোরাস চিৎকার করে―১০০-র মধ্যে তুমিই ১৬ সংখ্যা।
তাকিয়ে দেখি তোর বর্গ আমি ও তার বর্গের সমান।
সুতরাং―
সুবর্ণ2 = আমি2 + পিথাগোরাস2
যথারীতি ঈর্ষিত হই, এ কেমন গ্রাস। নাকি, তুই সেই প্রেমিকনারী, টায়ারের পথে পথে যে কেবল হারিয়ে গেছিস।
ইউরোপা... ইউরোপা...
তুই এখন সংখ্যার শরীর, যেখানে স্পর্শ যায় সেখানেই সেট―গুচ্ছগুচ্ছ ত্রয়ীচিহ্ন আঁকা।
(৩ ৪ ৫) (৫ ১২ ১৩) ( ৮ ১৫ ১৭) (৭ ২৪ ২৫)
(২০ ২১ ২৯) (১২ ৩৫ ৩৭) (৯ ৪০ ৪১) (২৮ ৪৫ ৫৩)
(১১ ৬০ ৬১) (১৬ ৬৩ ৬৫) (৩৩ ৫৬ ৬৫) (৪৮ ৫৫ ৭৩)
(১৩ ৮৪ ৮৫) (৩৬ ৭৭ ৮৫)(৩৯ ৮০ ৮৯) (৬৫ ৭২ ৯৭)
... ... ... ... ...
আহা রে... সুবর্ণ তুই ও ইউরোপা দুই অসীম যেন সমান সমান।