X
বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪
২৫ বৈশাখ ১৪৩১
সাক্ষাৎকারে প্রথম নারী নির্বাচন কমিশনার

আমরা সফল হবোই

পাভেল হায়দার চৌধুরী
০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৮:৪১আপডেট : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১০:১১

বিচারক কবিতা খানম

নির্বাচন কমিশনে একমাত্র নারী কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ কবিতা খানম। নওগাঁ জেলার এই বিশিষ্ট ব্যক্তি অবসর জীবন কাটাতে কাটাতেই দেশের রাজনৈতিক সমাজের আগ্রহে ও সার্চ কমিটির চূড়ান্ত মনোনয়নে নির্বাচন কমিশনারের সংক্ষিপ্ত তালিকায় চলে আসেন। আর রাষ্ট্রপতির ইচ্ছায় নিয়োগ পেয়ে হয়ে যান ইতিহাস। প্রথম নারী নির্বাচন কমিশনার হিসেবে এখন তাকে সামলাতে হবে সবচেয়ে স্পর্শকাতর ও কথায় কথায় বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা নির্বাচন কমিশনের গুরু দায়ভার।

এ মুহূর্তে স্পটলাইটে থাকা ‘খানিকটা অপরিচিত’ বিচারক কবিতা খানমের কাছে তাই পাঠকের জিজ্ঞাসা অনেক। সেসব নিয়ে তার ধানমণ্ডির বাসায় মঙ্গলবার হাজির হয়েছিল বাংলা ট্রিবিউন। চাকরি জীবনে সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালনকারী এই বিচারক দিয়েছেন সোজা উত্তর। জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনে নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে নতুন দায়িত্ব পালনে দেশবাসীর কাছে অঙ্গীকার করেছেন তিনি। বলেছেন, টিমের একজন হয়ে চেষ্টা করবেন নির্বাচন কমিশনকে সব বিতর্কের ঊর্ধ্বে তুলে ধরতে।       

বাংলা ট্রিবিউনকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারের শুরুর মুহূর্তে জানা যায়, তার স্বামীও ছিলেন বিচারক। আর কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘চোখের আলোয় দেখেছিলেম চোখের বাহিরে’ গানের লাইন দুটি তার খুবই পছন্দের। হয়ত খানিকটা প্রাসঙ্গিকও।

বাংলা ট্রিবিউন: প্রথম নারী নির্বাচন কমিশনার হিসাবে আপনার অনুভূতি কি?

কবিতা খানম: নিজেকে অনেক বেশি গর্বিত মনে করছি। সেইসঙ্গে মহামান্য রাষ্ট্রপতি আমাকে যোগ্য মনে করে মহান এ দায়িত্ব দেওয়ায় তার প্রতিও অশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। সর্বোপরি লাখ শোকরিয়া আদায় করছি আল্লাহর দরবারে। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনে নারী সদস্য নিযুক্ত করায় দেশের নারী সমাজ উৎসাহিত হবে।

বাংলা ট্রিবিউন: নতুন দায়িত্ব পালনে আপনি কতটা আত্মবিশ্বাসী?

কবিতা খানম: অতীতে যে দায়িত্ব পালন করেছি, সেখানে যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখতে সমর্থ্য হয়েছি। আমার বিশ্বাস, নতুন দায়িত্ব পালন করতে গিয়েও অতীতের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে পারবো।

বাংলা ট্রিবিউন: এ দায়িত্ব চ্যালেঞ্জিং মনে করছেন কিনা?

কবিতা খানম: আমি সব সময় চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করতে পছন্দ করি। আপনারা জানেন, আমি জেলা জজ হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছি। সেটাও একটি চ্যালেঞ্জিং পেশা। কিন্তু সুনামের সঙ্গে সেই দায়িত্ব পালন  করেছি।  সুতরাং নতুন কোনও চ্যালেঞ্জ এখানে মনে করছি না।

বাংলা ট্রিবিউন: এমন বড় দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে কোন কোন বিষয়ে নজর দেবেন?

কবিতা খানম: সুনামের সঙ্গে কাজ করার জন্যে সততা-নিষ্ঠা, একাগ্রতা সবচেয়ে বড় প্রয়োজন। তারপর দক্ষতা। আগের তিনটি গুণ থাকলে কাজ করতে করতেই দক্ষতা অর্জন করা সম্ভব। আমার মনে হয় যে কোনও দায়িত্ব পালনে প্রত্যেকের এগুলো থাকা উচিৎ।

বাংলা ট্রিবিউন: প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ নতুন নির্বাচন কমিশন কেমন হয়েছে বলে মনে করেন?

কবিতা খানম: আমি এ কমিশনকে অবশ্যই শক্তিশালী কমিশন মনে করি। প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ এ কমিশনের সদস্যরা জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারবে।

বাংলা ট্রিবিউন: নির্বাচন কমিশনের কাছে মানুষের প্রত্যাশা হচ্ছে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে ব্যবস্থা নেওয়া এবং দল নিরপেক্ষ থাকা।  নতুন ইসি এই প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবে বলে মনে করেন?

কবিতা খানম: মেধা ও শ্রম দিয়ে জনগণের প্রত্যাশা পূরণে নতুন নির্বাচন কমিশন শতভাগ সফল হবে বলে আমি মনে করি। আমরা একটা ‘টিম’। এখানে পরস্পর পরস্পরের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করব। দেখবেন আমরা সফল হবোই।

বাংলা ট্রিবিউন: আগে ছিলেন বিচারক, এখন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বভার পেয়েছেন, কোনটাকে বেশি চ্যালেঞ্জের মনে করছেন?

কবিতা খানম: দুটোই চ্যালেঞ্জের। কমিশনের দায়িত্ব পালনে আরও বেশি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। কিন্তু ‘ওভারকাম’ করতে পারব। তিনি বলেন, যেহেতু নারী হিসাবে প্রথম দায়িত্ব পালন করতে এসেছি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে, তাই খানিকটা চাপ থাকবেই।

বাংলা ট্রিবিউন: একজন সফল নারী হিসাবে নারীদের জন্যে কিছু বলবেন?

কবিতা খানম: বাংলাদেশের মেয়েরা মর্যাদার সঙ্গে এগিয়ে যাক, এটাই চাইবো। আর বলবো সততার সঙ্গে যার যার অবস্থান থেকে কাজ করে যাওয়ার। সফলতা একদিন আসবেই। আমাদের দেশের মেয়েরা ভীষণ পরিশ্রম করে। স্বামী, সংসারের পাশাপাশি অফিস সামলায়। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, তারা শ্রমের স্বীকৃতি পায় না, মর্যাদা পায় না। আমি চাই মর্যাদার সঙ্গে নারীরা বসবাস করবে। 

বাংলা ট্রিবিউন: আপনাকে ধন্যবাদ। শুভ কামনা রইলো।

কবিতা খানম: ধন্যবাদ।

/টিএন/

 আরও পড়ুন: নতুন ইসিও আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবে: সিইসি

                   গাইবান্ধার ঘটনায় এসপিকে প্রত্যাহারের নির্দেশ        

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
মঙ্গোলিয়ার দাবাড়ুকে হারিয়ে ফাহাদের মুখে হাসি
মঙ্গোলিয়ার দাবাড়ুকে হারিয়ে ফাহাদের মুখে হাসি
চেয়ারম্যান হলেন ৯ এমপির স্বজন, হেরেছেন দুজন
চেয়ারম্যান হলেন ৯ এমপির স্বজন, হেরেছেন দুজন
জোসেলুর জোড়া গোলে ফাইনালে রিয়াল
জোসেলুর জোড়া গোলে ফাইনালে রিয়াল
চেয়ারম্যান হলেন এমপির ছেলে ও ভাই
চেয়ারম্যান হলেন এমপির ছেলে ও ভাই
সর্বাধিক পঠিত
শনিবারে স্কুল খোলা: আন্দোলন করলে বাতিল হতে পারে এমপিও
শনিবারে স্কুল খোলা: আন্দোলন করলে বাতিল হতে পারে এমপিও
‘চুন্নু স্বৈরাচারের দোসর’, বললেন ব্যারিস্টার সুমন
‘চুন্নু স্বৈরাচারের দোসর’, বললেন ব্যারিস্টার সুমন
এক লাফে ডলারের দাম বাড়লো ৭ টাকা
এক লাফে ডলারের দাম বাড়লো ৭ টাকা
ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর ইস্যুতে ন্যাটোকে রাশিয়ার সতর্কতা
ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর ইস্যুতে ন্যাটোকে রাশিয়ার সতর্কতা
ইউক্রেনে পাঠালে ফরাসি সেনাদের নিশানা করার হুমকি রাশিয়ার
ইউক্রেনে পাঠালে ফরাসি সেনাদের নিশানা করার হুমকি রাশিয়ার