X
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪
২০ বৈশাখ ১৪৩১

জোটের সঙ্গে মিল রেখে ইসিকে প্রস্তাব দলগুলোর

এমরান হোসাইন শেখ
১৮ অক্টোবর ২০১৭, ২৩:৫৪আপডেট : ১৮ অক্টোবর ২০১৭, ২৩:৫৭

নির্বাচন ভবন

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়ে ১৪ দলীয় জোটের শরিকরা যেমন কয়েকটি ইস্যুতে অভিন্ন প্রস্তাব দিয়েছে, তেমনি ২০ দলীয় জোটের শরিকরাও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে অভিন্ন প্রস্তাব দিয়েছে।

মূলত নির্বাচন কমিশনের ওপর বিপরীতমুখী চাপ সৃষ্টি করতেই দুই জোট এ ধরনের কৌশল নিয়েছে বলে জানা গেছে।

দুই জোটের সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, আওয়ামী লীগ ১৪ দলীয় জোটের সদস্যদের সঙ্গে ও বিএনপি ২০ দলীয় জোটের শরিকদের সঙ্গে সংলাপের আগে আলোচনায় বসে। আলোচনার ভিত্তিতেই আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট শরিকরা কয়েকটি বিষয়ে ইসিতে একই ধরনের প্রস্তাব দিতে একমত হয়।বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের শরিকরাও কয়েকটি বিষয়ে অভিন্ন প্রস্তাব দিতে রাজি হয়।

বুধবার (১৮ অক্টোবর) পর্যন্ত ইসির সঙ্গে অনুষ্ঠিত ৩৮টি রাজনৈতিক দলের সংলাপ পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটের শরিকরা সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন, নির্বাচনের সময় সংসদ বহাল রাখা, নতুন করে সীমানা পুনর্নির্ধারণ না করা, নির্বাচনে সেনা মোতায়েন না করা ও ইভিএম চালু করার বিষয়ে ইসিতে প্রস্তাব দিয়েছে।

অন্যদিকে, বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরিক দলগুলো নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন, সীমানা পুনর্নির্ধারণ, তফসিল ঘোষণার আগে বা সঙ্গে সঙ্গে সংসদ ভেঙে দেওয়া, ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসহ সেনা মোতায়েন ও ইভিএম চালু না করার প্রস্তাব দিয়েছে।

আওয়ামী লীগের শরিকরা ‘কার অধীনে নির্বাচন হবে’ এবং ‘সংসদ বহাল রাখার’ প্রস্তাব দিলেও এই দুই ইস্যুতে আওয়ামী লীগ নিজে কোনও প্রস্তাবনা দেয়নি। জানা গেছে, ইস্যু দুটি নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ার বহির্ভুক্ত বিধায় তারা কোনও প্রস্তাবনা দেয়নি।

দুই জোটের একই ধরনের প্রস্তাবের কারণ অনুসন্ধানে জানা গেছে, দুই জোটই সংলাপের আগে নিজ নিজ শরিকদের সঙ্গে বৈঠক করে কিছু বিষয়ে একমত হয়। ২০ দলীয় জোটের নিবন্ধিত দলগুলো গত ২৮ আগস্ট বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে সংলাপ ইস্যুতে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে কয়েকটি ইস্যুতে অভিন্ন প্রস্তাব দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এদিকে, ৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিত ১৪ দলীয় জোটের বৈঠকে সুনির্দিষ্ট দুইটি বিষয়ে অভিন্ন প্রস্তাব দিতে আওয়ামী লীগের থেকে আহ্বান জানানো হয়। এগুলো হলো- সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন ও নির্বাচনে সেনা মোতায়েন না করার প্রস্তাব দিতে জোরালো আহ্বান জানানো হয়। এছাড়া, আরও কয়েকটি বিষয়ে প্রস্তাবনা বিবেচনা করার কথাও বলা হয়। এর বাইরে অন্য ইস্যুতে দলগুলো নিজস্ব কোনও প্রস্তাব দিলে আওয়ামী লীগের তাতে আপত্তি থাকবে না বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়।

নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত ৪০টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে সাতটি দল ১৪ দলীয় জোটের শরিক। এগুলো হলো-  আওয়ামী লীগ,ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ (ইনু),ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-ন্যাপ (মোজাফফর), তরিকত ফেডারেশন, জাতীয় পার্টি (জেপি) ও গণতন্ত্রী পার্টি। এর বাইরে জোটের সদস্য অন্য পাঁচটি দলের নিবন্ধন নেই। প্রসঙ্গত,১৪ দলীয় জোট নামে পরিচিত হলেও আসলে এই জোটের সদস্য সংখ্যা ১২টি।

২০ দলীয় জোটে নিবন্ধিত দল রয়েছে ৯টি। এগুলো হলো- বিএনপি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপা, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, খেলাফত মজলিশ, বাংলাদেশ ন্যাপ, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল), জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম। এছাড়া, এ জোটের শরিক ইসলামি ঐক্যজোট, এনপিপিসহ আরও কয়েকটি দল ইসিতে নিবন্ধিত হলেও তাদের মূল অংশ জোট থেকে বেরিয়ে যাওয়ায়, ওই অংশকেই (মূল) ইসি সংলাপে ডাকে। ২০ দলীয় জোট শরিক জামায়াত ইসলামীর নিবন্ধন উচ্চ আদালতের আদেশে বাতিল হওয়ায় তাদের সংলাপে ডাকা হয়নি।

ইসির সূত্রে জানা গেছে, বুধবার পর্যন্ত আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটের ছয়টি দল সংলাপে অংশ নিয়েছে। জোটের অন্য দল আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি (জেপি) বৃহস্পতিবার সংলাপে বসবে। একইভাবে ২০ দলীয় জোটের ৯টি দলের মধ্যে ৮টি দল সংলাপে অংশ নিয়েছে। এই জোটের সদস্য এলডিপি বৃহস্পতিবার সংলাপে যাবে।

অভিন্ন প্রস্তাবের বিষয়ে জানতে চাইলে ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্য আনিসুর রহমান মল্লিক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘১৪ দলীয় জোটের বৈঠকে ইসির সংলাপ নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। কয়েকটি  প্রস্তাবের বিষয়ে বিবেচনার কথাও বলা হয়েছিল। ওয়ার্কার্স পার্টি নিজেদের মতো করেই পলিট ব্যুরোর বৈঠকে সংলাপের প্রস্তাবনা তৈরি করেছে ঠিকই, তবে আওয়ামী লীগের আহ্বানের বিষয়টি কিছুটা বিবেচনায় রাখা হয়েছিল।’

ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এনামুল হক বলেন, ‘আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একটি প্রস্তাবনা ছিল। তবে, বিষয়টি বাধ্যবাধকতা করা হয়নি। আমরা আমাদের দলের নীতি-আদর্শ মেনেই প্রস্তাবনা দিয়েছি। সংবিধানের মধ্য থেকে নির্বাচন অনুষ্ঠানে ইসিকে প্রস্তাব দিয়েছি। সেনাবাহিনীকে নির্বাচনে এনে বিতর্কিত না করার পরামর্শ দিয়েছি।’

২০ দলীয় জোটের শরিক জাগপার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপিকা রেহানা প্রধান বলেন, ‘সংলাপের আগে তারা বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। বিএনপির পরামর্শেই তারা নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের রূপরেখাসহ কিছু প্রস্তাব কমিশনের কাছে তুলে ধরেছেন। এর বাইরে নিজেরাও কিছু প্রস্তাব দিয়েছেন।’




/এপিএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
স্বজনদের প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি ব্যাখ্যা করলেন ওবায়দুল কাদের
স্বজনদের প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি ব্যাখ্যা করলেন ওবায়দুল কাদের
দুর্নীতির দায়ে ক্যারিবিয়ান ব্যাটারকে ৫ বছরের নিষেধাজ্ঞা
দুর্নীতির দায়ে ক্যারিবিয়ান ব্যাটারকে ৫ বছরের নিষেধাজ্ঞা
এসএসসি’র ফল প্রকাশের দিন ঘোষণা
এসএসসি’র ফল প্রকাশের দিন ঘোষণা
সিরিয়ায় ইসরায়েলি হামলায় ৮ সেনা আহত
সিরিয়ায় ইসরায়েলি হামলায় ৮ সেনা আহত
সর্বাধিক পঠিত
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
কুমিল্লায় বজ্রাঘাতে ৪ জনের মৃত্যু
কুমিল্লায় বজ্রাঘাতে ৪ জনের মৃত্যু
কামরাঙ্গীরচরে নতুন ভবন নির্মাণের অনুমতি দিলো ডিএসসিসি
কামরাঙ্গীরচরে নতুন ভবন নির্মাণের অনুমতি দিলো ডিএসসিসি
আরও কমলো সোনার দাম
আরও কমলো সোনার দাম
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক