‘আমরা সন্তানদের সবসময় শাসনের মধ্যে রাখি, তদারকি করি। এই যে খেলার মাঠ নেই, সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান নেই পর্যাপ্ত পরিমাণে— এগুলো কিন্তু এই শাসন ও তদারকির কারণ। এর বাইরে নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণেও আমরা আমাদের সন্তানদেরকে বাইরে যেতে দিচ্ছি না। তাহলে এই যে বন্দিদশা, সমাজই কিন্তু এটাতে বাধ্য করছে। আমরা অভিবাবকরাও এই ক্ষেত্রে খুবই অসহায়।’
বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) বিকালে বাংলা ট্রিবিউনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত ‘চার দেয়ালে বন্দি শৈশব’ শীর্ষক বৈঠকিতে এসব কথা বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক রাশেদা রওনক খান।
বৈঠকিতে তিনি বলেন, ‘‘মিশেল ফুকো তার ‘ডিসিপ্লিন অ্যান্ড পানিশমেন্ট’ প্রবন্ধে মানুষের বন্দি জীবনের একটি বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছেন। আমরা সমাজে যারা বসবাস করি তারা সবাই আসামি, আমরা একেক জন একেকটা খোপ খোপ ঘরে বসবাস করি। ওই সমাজের ওপর রয়েছে লম্বা একটি ওয়াচ টাওয়ার। সেখান থেকে আমাদের খুপরি ঘরে টর্চ মেরে আসামিরা কে, কী করছি তা দেখে। আমরা সবাই আসলেই এমনই একটি বন্দিদশার মধ্যেই রয়েছি। ফুকো এই আইডিয়াকে বলছেন ‘প্যানোপটিকন’। আমরা আমাদের ঘরেও একই অবস্থায় রয়েছি। আমরা আমাদের বাচ্চাদেরকে ‘প্যানোপটিকনে’র মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়েছি।’’
বৈঠকিতে আলোচক হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক তাজুল ইসলাম, বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ডিবিসি’র সম্পাদক নবনীতা চৌধুরী, সংগীতশিল্পী ও অভিভাবক রাহুল আনন্দ এবং বাংলা ট্রিবিউনের সম্পাদক জুলফিকার রাসেল।
এটিএন নিউজের মুন্নী সাহার সঞ্চালনায় বাংলা ট্রিবিউন স্টুডিওতে অনুষ্ঠিত বৈঠকি সরাসরি সম্প্রচারিত হয় এটিএন নিউজে। এছাড়া, বাংলা ট্রিবিউনের ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজ থেকেও বৈঠকি সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
আরও পড়ুন-
‘চার দেয়ালে বন্দি শৈশব’ শীর্ষক বাংলা ট্রিবিউন বৈঠকি শুরু