X
বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪
১৯ বৈশাখ ১৪৩১

‘মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাও গ্রহণযোগ্যতা আদায় করে নিচ্ছে’

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
১৮ জানুয়ারি ২০১৮, ১২:১৫আপডেট : ১৮ জানুয়ারি ২০১৮, ১৫:৩৪

সুলতানা কামাল (ফাইল ছবি) বাংলাদেশ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়নের স্বাক্ষর রাখলেও মানবাধিকার ইস্যুতে অবহেলা, উদাসীনতা ও অনগ্রসরতার যে উদাহরণ রেখেছে, তাকে খুব কম করে বললেও অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলতে হয় বলে মন্তব্য করেছেন আইনজীবী, মানবাধিকারকর্মী ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল। তিনি বলেন, ‘উদ্বেগটা অনেক বেশি গভীর আকার ধারণ করে এ কারণে যে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো কেমন করে যেন সমাজে একটা গ্রহণযোগ্যতা আদায় করে নিচ্ছে।’
বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের যাত্রা শুরুর প্রাক্কালে লিখিত বক্তব্যে সুলতানা কামাল এসব কথা বলেন।
সুলতানা কামাল বলেন, ‘গ্রহণযোগ্যতা আদায়ের ক্ষেত্রে বোধহয় সবচেয়ে আলোচিত বিষয় নারী নির্যাতন। বাংলাদেশে নারীদের এত উন্নতি সত্ত্বেও নারী নির্যাতনের পরিসংখ্যানে শঙ্কিত না হয়ে পারা যায় না। ঘরে-বাইরে, কর্মক্ষেত্রে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে— সব জায়গাতেই নারীরা বিভিন্ন ধরনের অত্যাচার, নির্যাতন আর হয়রানির শিকার হচ্ছেন। প্রতি একশ জনের মধ্যে ৮৭ জন নারী কোনও না কোনোভাবে পরিবারের মধ্যে নির্যাতিত হচ্ছে।’
একটি মানবাধিকার সংস্থার প্রতিবেদনের উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কেবল ২০১৭ সালে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৮শ জন নারী, ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে ৯০টিরও বেশি। সরকারি সংস্থা ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের পরিসংখ্যান আরও ভয়াবহ। গত এক বছরে ধর্ষণ ও শারীরিকভাবে আক্রমণের শিকার হওয়া নারীর সংখ্যা দুই হাজারেরও বেশি। নির্যাতনের ধরন যে বীভৎসতার পরিচয় দিচ্ছে, তা নিয়ে বিস্তারিত বিবরণে নাই গেলাম।’
সরকারের চার বছর মেয়াদে বিভিন্ন নির্যাতনের কথা উল্লেখ করে সুলতানা কামাল বলেন, ‘রিশা, তনু, রূপা— এদের সঙ্গে আরও অসংখ্য মুখ ভেসে ওঠে। রাজন, রাকিব, সাগর— আমাদের চোখের সামনে এদের প্রকাশ্য দিবালোকে দুর্বৃত্তরা নির্মমভাবে দীর্ঘ সময় ধরে অত্যাচার করে মেরে ফেলে। তার বিচারের শেষ এখনও দেখা হলো না আমাদের। শিশু নির্যাতন, হত্যা আর সহিংসতার সংখ্যা গত এক বছরে দেড় হাজারেরও বেশি।’
গুম প্রসঙ্গে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এই উপদেষ্টা বলেন, ‘যে মানুষগুলো হারিয়ে যাচ্ছেন, তাদের অধিকাংশেরই আর কোনও হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। কেন তারা হারিয়ে যাচ্ছেন কিংবা যারা ফিরে আসছেন, তারা কেন কথা বলছেন না— এ বিষয়গুলো মানুষকে গভীর শঙ্কার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।’
বিচার বহির্ভূত হত্যা প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘বিচার বহির্ভূত হত্যা বন্ধ হয়েছে বলে রাষ্ট্র দাবি করলেও প্রতিদিনই ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মানুষ নিহত হচ্ছে দুই-একজন করে। এক বছরেই এ ঘটনা ঘটেছে কম করে হলেও ১৫১টি। মানবাধিকারের দৃষ্টিতে এটা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়।’
অনুষ্ঠানে বলা হয়, সারাদেশে মানবাধিকার রক্ষা এবং প্রচারে যাত্রা শুরু করেছে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ)। এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে রয়েছেন সুলতানা কামাল, সাইদুর রহমান, সানিয়া ফাহিম আনসারী, ডালিয়া আফরোজ, জাহিদুল আলম, তানভিয়া রোজলিন সুলতানা, সাদিয়া তাসনিম, ইভা সাহা এবং তৌফিক আল মান্নান।

/এসও/টিআর/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
গাছ কাটা ও লাগানোর বিষয়ে আইন-বিধি চেয়ে আইনি নোটিশ
গাছ কাটা ও লাগানোর বিষয়ে আইন-বিধি চেয়ে আইনি নোটিশ
জোরে সালাম শুনেই ঘাড় ফিরিয়ে উত্তর দেন খালেদা জিয়া
জোরে সালাম শুনেই ঘাড় ফিরিয়ে উত্তর দেন খালেদা জিয়া
বজ্রাঘাতে প্রাণ গেলো ১০ জনের
বজ্রাঘাতে প্রাণ গেলো ১০ জনের
ব্যর্থতার অভিযোগে শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে আইনি নোটিশ
ব্যর্থতার অভিযোগে শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে আইনি নোটিশ
সর্বাধিক পঠিত
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ, খুলনা-মোংলায় শুরু হচ্ছে ট্রেন চলাচল
পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ, খুলনা-মোংলায় শুরু হচ্ছে ট্রেন চলাচল
তীব্র তাপপ্রবাহ যেখানে আশীর্বাদ
তীব্র তাপপ্রবাহ যেখানে আশীর্বাদ
অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক হচ্ছে
অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক হচ্ছে
আরও কমলো সোনার দাম
আরও কমলো সোনার দাম