চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। সোমবার (৭ জানুয়ারি) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে বঙ্গভবনের দরবার হলে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ শেখ হাসিনাকে শপথ পাঠ করান।
জনগণের বিপুল ভোটে গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চতুর্থবারের মতো রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পায় আওয়ামী লীগ। পরে রাষ্ট্রপতি তাকে সরকার গঠনের আহ্বান জানান। এবারের সরকারের মেয়াদ পূর্ণ হলে তিনি বাংলাদেশে ২০ বছরের রাষ্ট্র পরিচালনাকারী প্রধানমন্ত্রীর স্বীকৃতি পাবেন। এটা হবে স্বাধীন বাংলাদেশের একটি রেকর্ড। এর আগে বাংলাদেশে যারা সরকার প্রধানের দায়িত্ব পালন করেছেন তাদের কেউই চারবারের জন্য রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পাননি।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার ২১ বছর পর বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালের ২৩ জুন প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করলে শেখ হাসিনা ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এরপর ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার বিজয়ী হলে ১২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তৃতীয়বার শপথ গ্রহণ করেন তিনি।
গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার আবারও নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করে। এর মধ্য দিয়ে তিনিই একমাত্র সরকার প্রধান, যিনি তৃতীয় মেয়াদে টানা ১৫ বছর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে রাষ্ট্র পরিচালনাকারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইতিহাস সৃষ্টি করতে যাচ্ছেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ওয়েবসাইটে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী জানা গেছে, এর আগে ১৯৮৬ সালে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে শেখ হাসিনা তিনটি সংসদীয় আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ওই সময় তিনি বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ওই নির্বাচনের পরই দেশ থেকে সামরিক আইন প্রত্যাহার করে সাংবিধানিক প্রক্রিয়া শুরু হয়। শেখ হাসিনা নব্বইয়ের ঐতিহাসিক গণআন্দোলনে নেতৃত্ব দেন এবং এই আন্দোলনের মুখে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর স্বৈরাচার এরশাদ সরকার পদত্যাগে বাধ্য হয়।
১৯৯১ সালের সংসদীয় নির্বাচনে শেখ হাসিনা পঞ্চম জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের নেতা নির্বাচিত হন। তিনি রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যবস্থা পরিবর্তন করে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তনের জন্য রাজনৈতিক দলসহ সকলকে সংগঠিত করেন। ১৯৯৬ সালে বিএনপির ভোটারবিহীন নির্বাচনের বিরুদ্ধে তিনি গণআন্দোলন গড়ে তোলেন। এই আন্দোলনের মুখে ওই বছরের ৩০ মার্চ তৎকালীন খালেদা জিয়ার সরকার পদত্যাগে বাধ্য হয়।