X
সোমবার, ০৬ মে ২০২৪
২২ বৈশাখ ১৪৩১

‘এখন কী খাবো, কোথায় থাকবো’

হাসনাত নাঈম
১৭ আগস্ট ২০১৯, ১৫:০৪আপডেট : ১৭ আগস্ট ২০১৯, ১৬:০৮

পুড়ে যাওয়া ঘরের পাশে জাহাঙ্গীর ‘আমার সব শেষ। পরনের লুঙ্গি আর এই শার্ট ছাড়া কিছুই নাই। সব আগুনে পুড়ে গেছে। আমার স্ত্রীসহ চার মেয়ে ও দুই ছেলে নিয়ে পাঁচটি ঘরে এখানে থাকতাম। এখন কি খাবো, কোথায় থাকবো, কিছুই জানি না? ঘরের টাকা কড়িও সব পুড়ে গেছে।’ বাংলা ট্রিবিউনের কাছে এই কথাগুলো বলেন, মিরপুরের চলন্তিকা বস্তির বাসিন্দা জাহাঙ্গীর। যখন আগুন লাগে তিনি ও তার স্ত্রী ঘরে ছিলেন। চেষ্টা করেও আগুন নেভাতে পারেননি। পরনের কাপড় নিয়ে শুধু নিজেদের জান বাঁচিয়েছেন।

শুধু জাহাঙ্গীর নন, মিরপুরের চলন্তিকা বস্তিতে নিজের ঘরের জায়গায় বসে আহাজারি করছেন অন্যরাও।

শনিবার (১৭ আগস্ট) সকালে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, বস্তিজুড়ে  টিন ছাড়া কিছুই দেখা যাচ্ছে না। সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। কোনও কিছুই অবশিষ্ট নেই। কেউ-কেউ পুড়ে যাওয়া জিনিস বারবার হাতড়াচ্ছে, কিছু পাওয়া যায় কিনা, তাই ভেবে।

বস্তিতে ছোট্ট দোকান করতেন ৭০ ঊর্ধ্ব রিজিয়া বেগম। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এখানে ২৫ বছর যাবত আছি। অনেক কষ্ট করে এই দোকানটা করেছিলাম। এই দোকান করে আমার তিন ছেলে ও এক মেয়েকে মানুষ করেছি। এই দোকানই আমার সব ছিল। আগুনে আমার সবকিছু ধ্বংস হয়ে গেলো। দোকান থেকে কিছুই বের করতে পারিনি। এখন থাকবো কোথায়, করবো কি, কিছুই জানিনা। শুক্রবার বিকাল থেকে এখন পর্যন্ত না খেয়ে আছি।’ যখন আগুন লাগে তখন তিনি দোকানে ছিলেন না বলে জানান।

পুড়ে যাওয়া ঘর বস্তির একটি ঘর নিয়ে থাকতেন তানিয়া। তিনি বলেন, ‘আমরা পরিবারের চার জন ছিলাম একটি ঘরে। আমরা সবাই সুস্থ আছি, কিন্তু আমাদের বেঁচে থাকার সম্বল বলতে আর কিছু নেই। অনেক কষ্ট করে সংসারটা গুছিয়ে ছিলাম। এখন কোথায় থাকবো, জানি না। শুক্রবার দুপুরের পর থেকে না খেয়ে আছি।’ পোশাক শ্রমিক তানিয়া জানান, আগুন লাগার সময় তিনি ঘরে ছিলেন না।

ঘর হারানো এক নারী বস্তির মাঝামাঝিতে ছয়টি ঘরে পরিবারের ১৩ সদস্য নিয়ে থাকতেন আলমগীর। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমার ঘরের সব জিনিসপত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আগুন কেমনে লাগছে আমি কিছুই জানি না। পরিবারের সবাইকে নিয়ে কেমনে থাকবো জানিনা।’ আগুন লাগার সময় তিনিও এলাকায় ছিলেন না বলে জানান।

পুড়ে যাওয়া ঘর উল্লেখ্য, শুক্রবার (১৬ আগস্ট) রাত ৭টা ২২ মিনিটে আগুন লাগে মিরপুরের চলন্তিকা ঝিল বস্তিতে। ফায়ার সার্ভিসের ২৪টি ইউনিটের ১২৫ জন কর্মী রাত ১০টা ৩৫ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এখানে প্রায় তিন হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

 

/এইচএন/এনআই/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
এই ৬ বীজ নিয়মিত খেলে সুস্থ থাকতে পারবেন দীর্ঘদিন
এই ৬ বীজ নিয়মিত খেলে সুস্থ থাকতে পারবেন দীর্ঘদিন
লখনউকে বড় হারের লজ্জা দিয়ে শীর্ষে কলকাতা
লখনউকে বড় হারের লজ্জা দিয়ে শীর্ষে কলকাতা
ন্যাশনাল ব্যাংকে নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠন, নিয়োগ পেলেন ১০ জন 
ন্যাশনাল ব্যাংকে নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠন, নিয়োগ পেলেন ১০ জন 
স্বস্তির জয়ে শিরোপার লড়াইয়ে ফিরলো লিভারপুল
স্বস্তির জয়ে শিরোপার লড়াইয়ে ফিরলো লিভারপুল
সর্বাধিক পঠিত
‘টর্চার সেলে’ নিজ হাতে অপারেশনের নামে পৈশাচিক আনন্দ পেতো মিল্টন, জানালেন হারুন
‘টর্চার সেলে’ নিজ হাতে অপারেশনের নামে পৈশাচিক আনন্দ পেতো মিল্টন, জানালেন হারুন
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে যা বললেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে যা বললেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী
নিজেদের তৈরি ভেহিকেল পেরুকে উপহার দিলো সেনাবাহিনী
নিজেদের তৈরি ভেহিকেল পেরুকে উপহার দিলো সেনাবাহিনী
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন বৃষ্টি হবে
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন বৃষ্টি হবে
সব জেনেও পুলিশকে কিছু জানাননি মিল্টনের স্ত্রী
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ডিবি হারুনসব জেনেও পুলিশকে কিছু জানাননি মিল্টনের স্ত্রী