X
রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪
১৪ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধু বলতেন ছয় দফাই এক দফা: প্রধানমন্ত্রী

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
০৭ জুন ২০২১, ২০:৫৫আপডেট : ০৭ জুন ২০২১, ২১:১৮

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ছয় দফার ভেতরেই এক দফা নিহিত ছিল। সেটা অন্তত আমরা পরিবারের সদস্যরা জানতাম। বঙ্গবন্ধু সব সময় বলতেন—ছয় দফা মানেই এক দফা। অর্থাৎ স্বাধীনতা। আজকে আমরা সেই স্বাধীন জাতি।

সোমবার (৭ জুন) ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশনে সম্প্রচারিত (রেকর্ডকৃত) একটি অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

ঐতিহাসিক ছয় দফার ভেতরেই স্বাধীনতার এক দফা নিহিত ছিল মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সব সময় বলতেন, ছয় দফা মানেই এক দফা। অর্থাৎ স্বাধীনতা।

কারাবন্দি বঙ্গবন্ধুর মুক্তি এবং ছয় দফার দাবিতে আন্দোলন করতে গিয়ে ১৯৬৬ সালের ৭ জুন যারা শহীদ হয়েছিলেন, তাদের কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই ৭ জুনে রক্তের অক্ষরে তারা ছয় দফা দাবির কথা লিখে গিয়েছিল বলেই এই ছয় দফার ভিত্তিতে নির্বাচন এবং আমাদের যুদ্ধে বিজয়। আমরা স্বাধীনতা অর্জন করি।’ 

টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেই হরতালে অনেক মানুষকে তারা হত্যা করেছে। ১১ জন সেখানে জীবন দেন। রক্তের অক্ষরে ছয় দফা তারা লিখে যায়, আর সেই ছয় দফার ভিত্তিকে ৭০-এর নির্বাচন হয়। সেই নির্বাচনে সমগ্র পাকিস্তানে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পায়, যেটা পাকিস্তানিরা কোনও দিনই আশা করেনি।’

এরপর অসহযোগ আন্দোলন ও ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ। অসহযোগ আন্দোলন থেকে সশস্ত্র বিপ্লব, সশস্ত্র বিপ্লব থেকে বিজয় অর্জন আমরা করেছি।’

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর ছাত্রজীবন থেকে এ দেশের মানুষের জন্য সংগ্রাম করেছেন। বাঙালি জাতি একটা উন্নত জীবন পাবে, সুন্দর জীবন পাবে—এটাই তার আকাঙ্ক্ষা ছিল। তিনি সেটাই চেয়েছিলেন। তার সব সময় চিন্তা ছিল—কীভাবে এ জাতিকে দুঃখ ও দারিদ্র্য থেকে মুক্তি দেবেন, ক্ষুধা-শোষণ-বঞ্চনা থেকে মুক্তি দিয়ে একটা উন্নত জীবন দেবেন।’

তিনি বলেন, ‘পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই বাঙালি জাতির ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য যে চিন্তা চেতনাগুলো তাঁর (বঙ্গবন্ধু) ভেতরে লালিত ছিল, সেটাই প্রতিফলিত হয়েছিল ছয় দফা প্রণয়নের মাধ্যমে। আর সেটার আরও সুযোগ এসে গেলো ১৯৬৫ সালে পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধের মধ্যে দিয়ে। যখন দেখা গেলো, এই ভূ-খণ্ডের মানুষ সম্পূর্ণভাবেই নিরাপত্তাহীন, সেই সময় তিনি এই ছয় দফা দাবিটা উত্থাপন করেন।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘ছয় দফা দাবি উত্থাপন করার সঙ্গে সঙ্গেই পাকিস্তানি শাসকদের কথা ছিল—এটা সম্পূর্ণভাবে পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য এই দাবি তিনি তুলেছেন। কিন্তু সেটা বাস্তব না। তিনি মানুষের অধিকারের কথা বলেছেন।’

ছয় দফা দাবিকে জনগণের দাবিতে রূপান্তর করতে বঙ্গবন্ধুর ত্যাগের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ছয় দফা দাবিকে জাতির পিতা নাম দিয়েছিলেন বাংলাদেশের মানুষের বাঁচার দাবি হিসেবে। তিনি যখন ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেন, তখন তিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।’

দলের অনেকের দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকার মধ্যেই পরে আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির সভায় ছয় দফাকে গ্রহণ করা হয় বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

এরপর ১৯ মার্চ দলের কাউন্সিলে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সেখানে তিনি তার ভাষণে বলেছিলেন, ছয় দফার প্রশ্নে কোনও আপস নাই।’

বঙ্গবন্ধুকন্যা আরও বলেন, ‘এরপর ২০ মার্চ পল্টন ময়দানে জনসভা হয়। সেই জনসভায় সকলে ভাষণ দেন এবং ছয় দফাকে গ্রহণ করেন। তারপর তিনি (বঙ্গবন্ধু) শুরু করেন সারা বাংলাদেশ সফর। তিনি বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় আনাচে-কানাচে সফর করেন। একদিকে দলকে সংগঠিত করা এবং ছয় দফা দাবির প্রতি জনগণের সমর্থন আদায় করা। সেই সঙ্গে ছয় দফার জন্য আন্দোলন গড়ে তোলেন। জনগণ এই ছয় দফাকে খুব দ্রুত মেনে নেয়।’

তিনি বলেন, ‘ছয় দফা দেওয়ার পর আন্দোলন চলতে থাকে। তিনি সফর করতে থাকেন। ৮ মে নারায়ণগঞ্জে জনসভা শেষে ফিরে আসার সময় তাকে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া চট্টগ্রাম, পাবনা, যশোরসহ খুলনা, ময়মনসিংহ, সিলেট—যেখানেই জনসভা করেছেন, বিভিন্ন জায়গায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বক্তৃতা করার কারণে তাকে গ্রেফতার করেছে, তাকে জেলে নিয়েছে। আবার সেখান থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে আরেক জায়গায় তিনি জনসভা করেছেন। তিনি কীভাবে মানুষকে কী উৎসর্গ করেছিলেন—তাঁর বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সেই কথাগুলো উঠে এসেছে।’

৭ জুনের হরতাল সফল করতে নিজের মায়ের অবদানের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘মে মাসে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতারের পর তাঁর মুক্তির দাবিতে এবং ছয় দফা বাস্তবায়নের দাবিতে আন্দোলন চলছিল, তিনি কারাবন্দি থাকা অবস্থায়। তখন ৭ জুন হরতাল ডাকা হয়। এখানে আমি আমার মায়ের কথা বলবো। এই হরতাল সফল করার জন্য আমার মা বিশেষ ভূমিকা নিয়েছিলেন। তিনি ইন্টেলিজেন্স বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে আমাদের ছাত্রদের সঙ্গে, সংগঠনগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে হরতাল সফল করার জন্য কাজ করেছেন। ছয় দফা দাবি আদায় এবং কারাবন্দি শেখ মুজিবের মুক্তির দাবিতে ১৯৬৬ সালের ৭ জুন ঢাকাসহ সারা বাংলায় আওয়ামী লীগের ডাকে হরতাল পালিত হয়।’

 

 

/পিএইচসি/এপিএইচ/এমওএফ/
সম্পর্কিত
হাসিনা-তাভিসিন আন্তরিক বৈঠক, থাইল্যান্ডের সঙ্গে ৫ দলিল স্বাক্ষর
দেশের জন্য কাজ করতে আ.লীগ নেতাকর্মীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
সর্বশেষ খবর
জেসি অনভিজ্ঞ বলেই আপত্তি ছিল মোহামেডান-প্রাইম ব্যাংকের
জেসি অনভিজ্ঞ বলেই আপত্তি ছিল মোহামেডান-প্রাইম ব্যাংকের
যাত্রাবাড়ীতে সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
যাত্রাবাড়ীতে সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
শেখ জামালের জন্মদিন আজ
শেখ জামালের জন্মদিন আজ
জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস আজ
জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস আজ
সর্বাধিক পঠিত
দক্ষিণে ‘ডায়াবেটিক ধানের’ প্রথম চাষেই বাম্পার ফলন, বীজ পাবেন কই?
দক্ষিণে ‘ডায়াবেটিক ধানের’ প্রথম চাষেই বাম্পার ফলন, বীজ পাবেন কই?
তাপপ্রবাহে যেভাবে চলবে শ্রেণি কার্যক্রম
প্রাক-প্রাথমিক বন্ধই থাকছেতাপপ্রবাহে যেভাবে চলবে শ্রেণি কার্যক্রম
যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া পেলো হামাস
যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া পেলো হামাস
আজকের আবহাওয়া: দুই বিভাগ ছাড়া কোথাও বৃষ্টির আভাস নেই
আজকের আবহাওয়া: দুই বিভাগ ছাড়া কোথাও বৃষ্টির আভাস নেই
বিক্রি না করে মজুত, গুদামে পচে যাচ্ছে আলু
বিক্রি না করে মজুত, গুদামে পচে যাচ্ছে আলু