X
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪
৭ বৈশাখ ১৪৩১

অনেক সমালোচনা করেও বলেন—কথা বলতে দেওয়া হয় না: প্রধানমন্ত্রী

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
১৬ মে ২০২২, ১৩:০২আপডেট : ১৬ মে ২০২২, ১৬:১৯

সরকারের উন্নয়নের সমালোচনাকারীদের সারা দেশ ঘুরে আসার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘এখন সবাই কথা বলতে পারেন, টকশো করতে পারেন। যখন টকশোতে কথা বলেন, কেউ তো আপনাদের মুখ চেপে ধরেনি বা গলা চেপেও ধরেনি। অবশ্য আমি জানি, অনেক কথা বলার পরেও তারা বলবেন, আমাদের কথা বলতে দেওয়া হয় না।’

সোমবার (১৬ মে) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘এসডিজি বাস্তবায়ন পর্যালোচনা বিষয়ক দ্বিতীয় জাতীয় সম্মেলন, ২০২২’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মূল অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকায় বসে অনেকেই সমালোচনা করেন, তাদের আমার অনুরোধ থাকবে; সারা বাংলাদেশটা আপনারা একটু ঘুরে দেখুন। পরিবর্তনটা কোথায় এসেছে, কতটুকু এসেছে। সেটা সকলেই গ্রাম পর্যায়ে একটু যোগাযোগ করলে জানতে পারবেন।’

সরকার প্রধান বলেন, ‘অনেকেই হয়তো এখন সমালোচনা করে—এটা করা হচ্ছে কেন? বা পরমাণু বিদ্যুৎ কেন করা হলো? এত টাকা খরচ হয়েছে। খরচের দিকটা সবাই শুধু দেখে। কিন্তু এই খরচের মধ্য দিয়ে নাগরিক জীবনে কী লাভ হবে এবং আমাদের অর্থনীতিতে কতটা অবদান রাখবে... আমাদের উন্নয়ন গতিশীল হবে, মানুষের জীবন পরিবর্তন হবে; সেটা বোধহয় তারা বিবেচনা করেন না। এটা হচ্ছে খুব দুঃখজনক।’

দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নদীমাতৃক বাংলাদেশ। সেখানে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন একান্তভাবে অপরিহার্য। নৌপথ যত বৃদ্ধি পাবে মানুষের পণ্য পরিবহন তত বৃদ্ধি পাবে। মানুষের যাতায়াত‌ বৃদ্ধি পাবে, অর্থনীতি সচল হবে। একেবারে তৃণমূল পর্যায়ে উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করা সহজ হবে। যেটা আমাদের অর্থনীতিকে আরও সচল করবে দারিদ্র্য বিমোচনে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে তৃণমূল মানুষ সব থেকে বেশি লাভবান হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের দেশের কৃষক, আমাদের দেশের শ্রমিক, আমাদের দেশের খেটে খাওয়া মানুষ- এই খেটে খাওয়া মানুষ; তাদের ভাগ্য পরিবর্তন করাই তো আমার লক্ষ্য। ওই কৃষক-শ্রমিক-মেহনতি মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করে তাদের একটু উন্নত জীবন দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য। এসডিজিতে যেসব বিষয় রয়েছে যেগুলো আমাদের জন্য প্রযোজ্য আমরা তা বাস্তবায়ন করেছি এবং বাস্তবায়ন করে যাবো।’

অনেক সমালোচনা করেও বলেন—কথা বলতে দেওয়া হয় না: প্রধানমন্ত্রী

তিনি বলেন, এসব প্রকল্প যখন সম্পন্ন হবে বা মানুষ যখন এর শুভ ফল ভোগ করবে তখন দেশের অর্থনীতির চাকা আরও গতিশীল হবে, সচল হবে। দারিদ্র্য বিমোচন হবে। আমরা দেশের মানুষের সার্বিক উন্নতি করতে পারবো।

শেখ হাসিনা বলেন, টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনের পথে আমরা সাত বছর অতিক্রম করছি। গত দুই বছর কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারির কারণে এসডিজি বাস্তবায়ন গতি কিছুটা মন্থর হয়েছে। তবে আমরা আমাদের সামর্থ্যের সর্বোচ্চ ব্যবহার করে লক্ষ্য অর্জনে কাজ করে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ হতে সময়োচিত প্রণোদনা প্যাকেজ প্রদান ও যথাযথ নীতি সহায়তা প্রদানের কারণে অর্থনীতি আবারও ইতিবাচক ধারায় ফিরে আসছে। নির্দিষ্ট সময়ে এসডিজি’র পথপরিক্রমা নিশ্চিত করা কঠিন, তবে আমি বিশ্বাস করি সঠিক ও উদ্ভাবনী কর্মপরিকল্পনা এবং কার্যকর পরিবীক্ষণ ব্যবস্থার মাধ্যমে লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব।

সরকার প্রধান বলেন, আমি আশা করি এ সম্মেলনের মাধ্যমে এসডিজি বাস্তবায়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠানসমূহ তাদের বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা করার এবং বাস্তবায়ন সমস্যা চিহ্নিত করে তা সমাধানের পন্থা খুঁজে বের করতে সমর্থ হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন,  আমাদের উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাসমূহ, এনজিও এবং সমাজের বিভিন্ন স্তরে প্রতিনিধিত্বকারী ব্যক্তিবর্গও সমানভাবে অংশীদার। এ সম্মেলনে সবার অংশগ্রহণ বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ অগ্রযাত্রাকে আরও বেগবান করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

অনেক সমালোচনা করেও বলেন—কথা বলতে দেওয়া হয় না: প্রধানমন্ত্রী

তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখতে বেসরকারি খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ইতোমধ্যে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের জন্য বিনিয়োগ পরিবেশ অধিকতর সহায়ক করা হয়েছে। আমরা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি। অবকাঠামো উন্নয়নে মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে বেসরকারি খাত আরও বেশি গতিশীল হবে। এ সম্মেলনে বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ সম্মেলনের উদ্দেশ্য পূরণে কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আমি আশা করি।

শেখ হাসিনা বলেন, এসডিজি বাস্তবায়নে আমরা নীতি সহায়তা এবং অর্থের জোগান অব্যাহত রাখবো, তবে অর্থের সর্বোত্তম ব্যবহার এবং অপচয় রোধ নিশ্চিত করতে হবে। সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি যথাযথভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করলে ২০৩০-এর আগেই নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জনে এবং ২০৪১ সালের পূর্বেই জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত এবং উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে সমর্থ হবো।

/ইএইচএস/ইউএস/এমওএফ/
সম্পর্কিত
বিএনপির বিরুদ্ধে কোনও রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী
প্রাণিসম্পদ উন্নয়নে বেসরকারি খাতকে উদ্যোক্তা হিসেবে দেখতে চান প্রধানমন্ত্রী
বিএনপির চিন্তাধারা ছিল অন্যের কাছে হাত পেতে চলবো: প্রধানমন্ত্রী
সর্বশেষ খবর
বিদ্যুৎস্পৃষ্টে প্রাণ গেলো ইউপি সদস্যের
বিদ্যুৎস্পৃষ্টে প্রাণ গেলো ইউপি সদস্যের
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন গরম পড়বে
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন গরম পড়বে
আট বছর পর জাবিতে ডিন নির্বাচন
আট বছর পর জাবিতে ডিন নির্বাচন
তামাকে বিষ, তবুও ঝুঁকছেন কৃষক 
তামাকে বিষ, তবুও ঝুঁকছেন কৃষক 
সর্বাধিক পঠিত
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
ইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
ইস্পাহানে হামলাইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
সংঘাত বাড়াতে চায় না ইরান, ইসরায়েলকে জানিয়েছে রাশিয়া
সংঘাত বাড়াতে চায় না ইরান, ইসরায়েলকে জানিয়েছে রাশিয়া
দেয়ালের দেশ: মন খারাপ করা সিনেমা
সিনেমা সমালোচনাদেয়ালের দেশ: মন খারাপ করা সিনেমা