মানুষের আয় ও সঞ্চয় বিবেচনায় নিয়ে দেনমোহর নির্ধারণে কাজীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন,‘বর্তমানে যুগের অনেক পরিবর্তন হয়েছে, অর্থনৈতিক সক্ষমতাও বেড়েছে।’
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৪৭তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। বাংলাদেশ মুসলিম নিকাহ রেজিস্ট্রার কল্যাণ সমিতি এ সভার আয়োজন করে।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘১৪-১৫ বছরের মেয়ের সুস্থ সন্তান হতে পারে না। সবকিছু বিবেচনা করে মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৮ করা হয়েছে।’ ১৮ বছরের কম বয়সী মেয়েদের বিয়ে নিবন্ধন না করার নির্দেশ দেন তিনি।
আনিসুল হক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শের ভিত্তি ছিল দেশপ্রেম, মানুষের প্রতি গভীর ভালোবাসা। এখন আমাদের কর্তব্য তার প্রতি ভালোবাসা দেখানো।’
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘সব মানবিক গুণাবলির অধিকারী ছিলেন বঙ্গবন্ধু। ছেলেবেলাতেই তিনি নিজের গায়ের জামা খুলে গরিব সহপাঠীদের দিতেন। পিতার গোলার ধান গ্রামের দরিদ্র-অসহায় মানুষের মাঝে বিলিয়ে দিতেন। তাঁর ছিল অদম্য সাহস ও মনোবল। সে জন্যই তিনি বঙ্গবন্ধু।’
আনিসুল হক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ১৯৪৮ সালে ছাত্রলীগ গঠন করেন। এরপর তিনি বাঙালির অধিকার ও স্বাধীকার অর্জনের প্রত্যেকটি আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি ঘরে বসে রাজনীতি করেননি, মাঠের রাজনীতি করেছেন। টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া এবং বেনাপোল থেকে তামাবিল পর্যন্ত সারা বাংলাদেশে সশরীরে গিয়ে দেশের মানুষকে দাবি আদায়ে সচেতন করেছেন। তারপর স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন।’
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘তিনিই একমাত্র বাঙালি রাজনীতিক যিনি তৎকালীন পাকিস্তানের সামরিক শাসকদের সঙ্গে আপস করেননি। তিনি স্বাধীনতা ঘোষণা করে পালিয়ে যাননি। এ জন্য তাঁকে ১৪ বছর জেল খাটতে হয়েছে। এ জন্যই তাঁর ডাকে সাড়ে সাত কোটি বাঙালি সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিল।’
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘পাকিস্তানি সামরিক শাসকরাও যাকে মারার সাহস দেখাতে পারেনি, তাঁকে এ দেশেরই কিছুসংখ্যক কুলাঙ্গার দেশি-বিদেশি অপশক্তির সহায়তায় সপরিবারে হত্যা করেছে। হত্যা করেই তারা ক্ষ্যান্ত হয়নি। হত্যাকারীদের পুরস্কৃত করা হয়েছে। ২৫ বছর এই হত্যাকাণ্ডের বিচারের পথ রুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল। ২০০১ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে হাইকোর্টের সাতজন বিচারপতি বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার আপিল শুনানি গ্রহণ করতে বিব্রতবোধ করেছিল। এই ছিল তাদের চিন্তাধারা ও কর্ম।’
বাংলাদেশ মুসলিম নিকাহ রেজিস্ট্রার কল্যাণ সমিতির সভাপতি কাজী মো. মামুনুর রশিদের সভাপতিত্বে ও সমিতির মহাসচিব হাফেজ সাগর আহমেদ শাহীনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার, নিবন্ধন অধিদফতরের মহাপরিদর্শক শহিদুল আলম ঝিনুকসহ সমিতির নেতারা বঙ্গবন্ধুর জীবন আদর্শ নিয়ে আলোচনা করেন।
অনুষ্ঠান শেষে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নৃশংস হত্যাকণ্ডের শিকার বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।