ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর পালিত হচ্ছে আজ। উৎসব পালনের অন্যতম আনুষ্ঠানিকতা ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে রাজধানীতে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে। কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদগাহ ময়দানে দেশের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন, মন্ত্রিপরিষদ সদস্যরা, সরকারি আমলা, রাজনীতিবিদসহ রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা এই জামাতে অংশ নেন। প্যান্ডেলের ভেতরে প্রায় ৩৫ হাজার মুসল্লির নামাজের ব্যবস্থা করা হয় জাতীয় ঈদগাহে। ময়দান পূর্ণ হয়ে গেলে অনেকে বাইরেও রাজপথেও নামাজে অংশ নেন।
বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা মুফতি রুহুল আমিন ঈদের নামাজ পরিচালনা করেন। নামাজ শেষে বাংলাদেশের শান্তি ও অগ্রগতি এবং জনগণ তথা মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়।
মুসল্লিদের সার্বিক নিরাপত্তায় এবার ঈদগাহে রাখা হয় পাঁচ স্তরের বিশেষ নিরাপত্তা বলয়। ঈদ জামাতে অংশ নিতে আসা মুসল্লিদের জন্য ওযু, খাবার পানি ও মোবাইল টয়লেট এবং প্রাথমিক চিকিৎসারও ব্যবস্থা রাখা হয়। পুরুষদের পাশাপাশি নারীদের নামাজ আদায়ের জন্যও রাখা হয় বিশেষ ব্যবস্থা। প্রতি বারের মতো জাতীয় ঈদগাহ জামায়াতের আয়োজন করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)।
ঈদগাহের ভেতরে ২৫ হাজার ৪০০ বর্গমিটার আয়তনের মূল প্যান্ডেলে একসঙ্গে ৩৫ হাজার মুসল্লির ঈদের জামাত আদায়ের ব্যবস্থা ছিল এবার। এছাড়াও মূল প্যান্ডেলের বাইরেও অন্তত ৫০ হাজার মানুষ নামাজ পড়বেন ধরে নিয়ে তাদের জন্যও নেওয়া হয় বিশেষ ব্যবস্থা। ঈদগাহের মূল গেটসহ আশপাশের এলাকা সাজানো হয় রঙ-বেরঙের সাজসজ্জার কাঠামো দিয়ে।
মুসল্লিদর সুবিধার্থে লাগানো হয় ৬০০টি সিলিং ফ্যান, ১৫০টি স্ট্যান্ড ফ্যান, ৪০টি মেটাল লাইট এবং ৭০০টি টিউব লাইট। প্রতি কাতারে কার্পেটের ওপরে বসানো হয় মখমলের বিশেষ কাপড়। কাতারগুলোর বিভিন্ন পাশে ছিল খাবার পানি, ভ্রাম্যমাণ টয়লেট ও প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জাম।
ঈদগাহ ময়দানে প্রবেশে ভিআইপিদের জন্য এবং সাধারণ মুসল্লিদের মধ্যে পুরুষ ও নারীদের জন্য আলাদা প্রবেশপথ রাখা হয়। ঈদগাহ ময়দানে ভিআইপি পুরুষ কাতার ৫টি, নারী কাতার ছিল একটি। আর জনসাধারণের জন্য পুরুষ কাতার ৬৫টি (বড় আকারের), আর নারীদের কাতার ৫০টি (ছোট আকারের)।
এছাড়া আজ সর্বসাধারণের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারি বাসভবন বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও তার স্ত্রী ড. রেবেকা সুলতানা ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। আর নিজের সরকারি বাসভবন গণভবনে সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
রাষ্ট্রপতি সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত বঙ্গভবনে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। এছাড়া বঙ্গভবনের ক্রেডেন্সিয়াল হলে গণমাধ্যমের মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহ তথা সমগ্র দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানাবেন রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন। বঙ্গভবনে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ১৫০০ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
এদিকে আজ সকাল ১০টা থেকে ঈদের দিন দলীয় নেতাকর্মী, বিদেশি কূটনীতিকসহ সাধারণ জনগণের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন প্রধানমন্ত্রী। প্রথমে আওয়ামী লীগের সহকর্মী, কবি, সাহিত্যিক, লেখক, সাংবাদিক, শিক্ষক ও বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন তিনি। পরে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন বিচারক, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, তিন বাহিনীর প্রধান, বিদেশি কূটনীতিক, সিনিয়র সচিব, সচিব এবং সচিব সমমর্যাদার অন্যান্য বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে।