কৃষি খাতকে ঝুঁকিমুক্ত, স্থিতিশীল, লাভজনক এবং প্রান্তিক কৃষক ও উদ্যোক্তাদের জন্য টেকসই করতে প্রধান বৈশ্বিক অংশীদাররা বাংলাদেশকে সার্বিক সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বিশ্বখ্যাত কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ওয়াগেনিঙ্গেন বিশ্ববিদ্যালয়ে সোমবার (৬ মে) নেদারল্যান্ডসে বাংলাদেশ দূতাবাস কর্তৃক আয়োজিত ‘বাংলাদেশের কৃষির ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এ অঙ্গীকার করা হয়। বিশেষ করে বৈশ্বিক কৃষি-প্রযুক্তি সেক্টরগুলো বাংলাদেশে সম্ভাব্য সুযোগগুলো কীভাবে কাজে লাগাতে পারে সে বিষয়ে আলোকপাত করা হয়।
দূতাবাস থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নেদারল্যান্ডসে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম রিয়াজ হামিদুল্লাহ গোলটেবিল আলোচনা সঞ্চালনা করেন। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ২৩০ জনেরও বেশি বিশেষজ্ঞ এবং গবেষক এ আলোচনায় যোগদান করেন। গ্লোবাল ইনস্টিটিউট ফর ফুড সিকিউরিটি (জিআইএফএস), কানাডা যৌথ আয়োজক হিসেবে অংশগ্রহণ করে।
শীর্ষস্থানীয় আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের ছয়টি উপস্থাপনা বাংলাদেশের চারটি প্রধান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার ওপর আলোকপাত করে দ্রুত ফসলের ফলন বৃদ্ধি; স্থিতিশীল সরবরাহ ব্যবস্থা প্রণয়ন, খামার যান্ত্রিকীকরণ বৃদ্ধি এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধি।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (ফাও) এবং বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের কৃষি ক্ষেত্রে তাদের তাদের অব্যাহত সহায়তা বাড়ানোর ব্যাপারে একমত হন। কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তার কৃষির রূপান্তরের বিষয়ে সরকারের চিন্তাভাবনা তুলে ধরেন। কানাডার সাস্কাচুন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট বালজিত সিং বাংলাদেশে কৃষি গবেষণা সহায়তা বৃদ্ধি করতে সম্মত হন।
কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ অনুষ্ঠানে বলেন, ‘নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে কৃষি খাত অগ্রাধিকার পাবে। বিশেষ করে নেদারল্যান্ডসের কিছু যুগান্তকারী প্রযুক্তি, উদ্ভাবন এবং গবেষণা বাংলাদেশে প্রবর্তন করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি একজন কৃষক থেকে রাজনীতিবিদ হয়েছি। আমার জীবনের সাত দশক ধরে আমি দেখেছি কীভাবে আমাদের লক্ষ লক্ষ ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকরা আমাদের বদ্বীপে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছেন।’
আলোচনা শেষে ওয়াগেনিঙ্গেন বিশ্ববিদ্যালয়, কানাডার সাস্কাচুন বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বার্ক) মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতার জন্য একটি ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা হয়, যার মাধ্যমে বাংলাদেশের তৃণমূল পর্যায়ে পাইলট উদ্যোগগুলো বাস্তবায়িত হবে।
নেদারল্যান্ডস বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম কৃষি-খাদ্য রফতানিকারক দেশ। দেশটির কৃষি রফতানির পরিমাণ ১২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (২০২২)। এখন পর্যন্ত, নেদারল্যান্ডস বাংলাদেশের কৃষি-বাণিজ্য সম্ভাবনার উপর সাতটি মার্কেট পর্যবেক্ষণ করেছে।
বাংলাদেশ দূতাবাসের অব্যাহত প্রচেষ্টার ফলে এই উচ্চ পর্যায়ের গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর আগে ২০২২ সালে, বাংলাদেশ দূতাবাস ওয়াগেনিঙ্গেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে বাংলাদেশের কৃষি ভবিষ্যতের সম্ভাবনা, বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের ক্ষমতায়নের বিষয়ে প্রথমবারের মতো একটি আলোচনার আয়োজন করে।
