জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, যে বিষয়গুলোতে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হবে, শুধু সেগুলোর ওপর ভিত্তি করেই একটি জাতীয় সনদ তৈরি করা হবে। এ জন্য প্রতিটি পক্ষকেই কিছু ছাড় দেওয়ার মানসিকতা রাখতে হবে।
রবিবার (৪ মে) ঢাকায় সংসদ ভবনের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে ১২ দলীয় জোটের আলোচনার শুরুতে অধ্যাপক আলী রীয়াজ এসব কথা বলেন। এ সময় কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন– ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
আলী রীয়াজ জানান, ১৫ মের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনা শেষ করা হবে।
তিনি বলেন, ‘ঐকমত্যের বিষয়ে আমাদের সবাইকে এক জায়গায় আসতে হবে। আমরা সব বিষয়ে একমত হতে পারবো না, কিন্তু রাষ্ট্র গঠনের মৌলিক জায়গায় আমাদের একমত হয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’
সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার অভিপ্রায় ব্যক্ত করে আলী রীয়াজ বলেন, ‘শুধু এই টেবিলে বসে, এখানে আলোচনা করে আমরা জাতীয় ঐকমত্যের চূড়ান্ত জায়গায় পৌঁছাতে পারবো, এটা আমি মনে করি না। ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব কেবল কমিশনেরও নয়, বরং রাজনৈতিক দল, সাংবাদিকসহ সবার সহযোগিতা এবং সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ঐকমত্য কমিশন এ ক্ষেত্রে অনুঘটকের ভূমিকা পালন করবে।’
অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশের বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে সহযোগীদের সঙ্গে আলোচনা করতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানান আলী রীয়াজ।
আলোচনায় ১২ দলীয় জোটের প্রধান মোস্তাফা জামাল হায়দারের নেতৃত্বে ১১ সদস্যের প্রতিনিধিদলে ছিলেন– শাহাদাত হোসেন সেলিম, সৈয়দ এহসানুল হুদা, ড. গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, রাশেদ প্রধান, ফারুক রহমান, শামসুদ্দিন পারভেজ, মাওলানা আব্দুল রাকিব, আবুল কাশেম, ফিরোজ মোহাম্মদ লিটন ও এম এ মান্নান।
উল্লেখ্য, প্রথম পর্যায়ে গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর মধ্যে সংবিধান সংস্কার কমিশন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে উল্লেখিত গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলোর ওপর রাজনৈতিক দলের সুনির্দিষ্ট মতামত জানাতে অনুরোধ করে সুপারিশগুলো স্প্রেডশিট আকারে ৩৯টি রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠানো হয়। ইতোমধ্যে সংস্কার বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ৩৫টি দলের কাছ থেকে মতামত পেয়েছে। ১২ দলীয় জোটসহ এ পর্যন্ত ২৪টি রাজনৈতিক দল কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নিয়েছে।