বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের কাছে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটি সোমবার দুপুর ২টার দিকে সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রীর কাছে এ প্রতিবেদন জমা দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- গভর্নর ফজলে কবির এবং কমিটির অপর দুই সদস্য বুয়েটের কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের উপ-সচিব গকুল চাঁদ দাস।
পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনে রিজার্ভ চুরির সঙ্গে সম্পৃক্ততার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের চার কর্মকর্তার নাম রয়েছে। তারা হচ্ছেন, শেখ রিয়াজউদ্দিন, সালেহ উদ্দিন আবদুল্লাহ, জুবায়ের বিন হুদা ও রফিক উদ্দিন মজুমদার। বিশ্বস্ত সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদন জমা দেওয়া শেষে ড. ফরাস উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের ওপর যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তা পালন করেছি। কিছুদিন আগে এ বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন জমা দিয়েছিলাম। নির্দিষ্ট সময়ে আজ পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দিলাম।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগের প্রতিবেদনে সুইফট ব্যাংকের গাফিলতির কথা বলা হয়েছিল। পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনেও সে বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়েছে।’
তদন্তের বিষয়ে কোনও মহল থেকে চাপ ছিল কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তদন্তের কাজে আমরা কোনও চাপে ছিলাম না। আমরা নির্ভয়ে ও স্বাচ্ছন্দ্যে এ প্রতিবেদন তৈরি করেছি।’
রিজার্ভ চুরির ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের কোনও গাফিলতি ছিল কি না এমন আরেক প্রশ্নের জবাবে ড. ফরাস উদ্দিন বলেন, ‘ব্যাংকের কর্মকর্তাদের গাফিলতি ছিল। চূড়ান্ত প্রতিবেদনে সেসব উল্লেখ করা হয়েছে।’
পরে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেন, ‘একটু আগেই পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন হাতে পেলাম। এখনও পড়া হয়নি। প্রতিবেদনটি পড়ে সর্বোচ্চ ১৫/২০ দিনের মধ্যে তা জনসম্মুখে প্রকাশ করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তদন্ত কমিটি চূড়ান্ত প্রতিবেদনে যেসব সুপারিশ করেছেন, তার সবগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করবো।’
রিজার্ভের অর্থ চুরির ঘটনায় গত ১৫ মার্চ ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে সরকার। কমিটিকে ৩০ দিনের মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন রিপোর্ট ও ৭৫ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছিল। সে অনুযায়ী গত ২০ এপ্রিল অর্থমন্ত্রীর কাছে অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন জমা দেয় ফরাসউদ্দিনের কমিটি। এরপর ৭৫তম দিনে আজ পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দেওয়া হলো।
জিএম/এসআই/এসএনএইচ/টিএন/