X
রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪
১৫ বৈশাখ ১৪৩১
গুলশান হামলা

নিরাপত্তা নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে চরম উদ্বেগ জানিয়েছেন কূটনীতিকরা

শেখ শাহরিয়ার জামান
০৫ জুলাই ২০১৬, ২০:২১আপডেট : ০৬ জুলাই ২০১৬, ০১:১৪

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী বিদেশি কূটনীতিকরা কূটনীতিক পাড়া এবং তাদের নিজস্ব নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়ে চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলীর সঙ্গে মঙ্গলবার পদ্মায় এক বৈঠকে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতরা এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলায় ১৭ জন বিদেশিসহ ২০ জন নিহত হওয়ার বিষয় নিয়ে আজ মঙ্গলবার রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকদের ব্রিফ করছিলেন মাহমুদ আলী।
ডিন অব ডিপ্লোম্যাটিক কর্পস এবং মিশরের রাষ্ট্রদূত মাহমুদ ইয়েহিয়া মোহামেদ ইজ্জাত মোস্তফা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, কয়েকজন রাষ্ট্রদূত তাদের নিজস্ব, দূতাবাস স্টাফ এবং তাদের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘কূটনীতিক পাড়া এবং আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আমরা পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে আহ্বান করেছি।
মিশরের রাষ্ট্রদূত বলেন, দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত অহন সেওং-দু তার যেসব নাগরিক বাংলাদেশে ব্যবসা ও চাকরি সুবাদে অবস্থান করছেন তাদের নিরাপত্তা বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং তাদের নিরাপত্তা চান।
ডি কে হং নামে যে কোরিয়ান নাগরিক হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁর পাশে থাকতেন এবং গোটা ঘটনাটি ভিডিও করেছেন, তার নিরাপত্তার বিষয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
হং আর্টিজান রেস্তোরাঁর পাশের বিল্ডিং এ থাকতেন এবং শুক্রবার সারা রাত ও শনিবার সকালে অপারেশন থান্ডারবোল্ট ঘটনাটি ভিডিও করেন। পরে ফেসবুক ও ইউটিউবের মাধ্যমে তা দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে।  

গুলশান হামলায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য আর্মি স্টেডিয়ামে আয়োজিত অনুষ্ঠানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও রাষ্ট্রদূতরা প্রশ্ন তোলেন।

ইজ্জাত বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলে যাবার পরে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতরা তাদের শ্রদ্ধা জানানোর পরে হঠাৎ করে গ্যালারির দর্শকরা লাফ দিয়ে মাঠে ঢুকে পড়ে এবং কয়েকজন রাষ্ট্রদূত এতে ভয় পেয়ে যান। তিনি বলেন, দর্শকরা মারমুখী ছিল না কিন্তু তারা যেভাবে দৌড়ে আসছিল তাতে করে রাষ্ট্রদূতরা ভয় পেয়ে যান।

ইজ্জাত বলেন, বৈঠকে জার্মানির রাষ্ট্রদূত ঢাকা শহরে কয়েকটি জায়গা যেমন কয়েকটি রেস্টুরেন্ট বা সুপার মার্কেট যেখানে তার দেশের নাগরিকরা যাতায়াত করেন সেগুলোর নিরাপত্তা জোরদার করতে বলেন।

জার্মানির রাষ্ট্রদূত বিমানবন্দরের নিরাপত্তা এবং সেখানে তাদের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার কারণে ঝুঁকি তৈরি হয় বলে জানান।

যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট বলেন, এখন সময় এসেছে সন্ত্রাসবাদ দমনে একসঙ্গে সবাইকে কাজ করার এবং এজন্য তারা সরকারকে সহায়তা দিতে প্রস্তুত আছে।

ইজ্জাত বলেন, দুই থেকে তিন মাস আগে যুক্তরাষ্ট্র এ বিষয়ে একটি প্রস্তাব দিয়েছিল এবং মার্শা সে বিষয়টি পুনরায় ব্যক্ত করেন।

জাপানের রাষ্ট্রদূত এ ঘটনার জন্য শোক প্রকাশ করেন এবং বাংলাদেশে দুই দিনের শোক দিবস ঘোষণার জন্য ধন্যবাদ দেন। বৈঠকে ফ্রেঞ্চ, ইন্দোনেশিয়ান, কানাডিয়ান ও মালয়েশিয়ান রাষ্ট্রদূত বক্তব্য রাখেন।

এদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আজকের বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার অনুভূতি ও চিন্তা-ভাবনা কূটনীতিকদের সঙ্গে বিনিময় করেন। যেসব দেশের নেতারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বা তাকে ফোন করেছিলেন বা বাংলাদেশের সঙ্গে সহমর্মিতা এবং একাত্মতা ঘোষণা করে প্রেস স্টেটমেন্ট দিয়েছিলেন বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাদের ধন্যবাদ দেন।

কূটনীতিকদের আশ্বস্ত করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ থেকে সন্ত্রাসবাদ উৎখাত করতে সরকার বদ্ধপরিকর। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক আছে এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

সন্ত্রাসবাদ একটি বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ এবং এটি মোকাবেলা করার জন্য অন্যান্য দেশগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাবে বাংলাদেশ। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন যে, সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস উগ্রবাদ মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশকে সমর্থন দেবে। বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাষ্ট্রদূতদের কাছ থেকে সন্ত্রাসবাদ দমনে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যায় সে বিষয়ে পরামর্শ চান।

/এসএসজেড/এএইচ/

আরও খবর পড়ুন-

জাইকার কার্যক্রম স্থগিতের কোনও তথ্য নেই ঢাকায়

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর: শেখ হাসিনা
সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর: শেখ হাসিনা
কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষাবিধি নিশ্চিতে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে: রাষ্ট্রপতি
কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষাবিধি নিশ্চিতে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে: রাষ্ট্রপতি
দিনাজপুরে একসঙ্গে ২০ হাজার কণ্ঠে গীতা পাঠ
দিনাজপুরে একসঙ্গে ২০ হাজার কণ্ঠে গীতা পাঠ
উপজেলা নির্বাচন আগের যে কোনও নির্বাচনের চেয়ে ভালো হবে: ইসি হাবিব
উপজেলা নির্বাচন আগের যে কোনও নির্বাচনের চেয়ে ভালো হবে: ইসি হাবিব
সর্বাধিক পঠিত
দক্ষিণে ‘ডায়াবেটিক ধানের’ প্রথম চাষেই বাম্পার ফলন, বীজ পাবেন কই?
দক্ষিণে ‘ডায়াবেটিক ধানের’ প্রথম চাষেই বাম্পার ফলন, বীজ পাবেন কই?
যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া পেলো হামাস
যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া পেলো হামাস
তাপপ্রবাহে যেভাবে চলবে শ্রেণি কার্যক্রম
প্রাক-প্রাথমিক বন্ধই থাকছেতাপপ্রবাহে যেভাবে চলবে শ্রেণি কার্যক্রম
বিক্রি না করে মজুত, গুদামে পচে যাচ্ছে আলু
বিক্রি না করে মজুত, গুদামে পচে যাচ্ছে আলু
আজকের আবহাওয়া: দুই বিভাগ ছাড়া কোথাও বৃষ্টির আভাস নেই
আজকের আবহাওয়া: দুই বিভাগ ছাড়া কোথাও বৃষ্টির আভাস নেই