‘আমার আঘাতের জায়গা হলো মন্ত্রী স্যারের সম্মান। ডুমুরিয়ায় প্রধান অতিথি হিসেবে মন্ত্রী ছাগল বিতরণ করেছেন। কিন্তু ছাগলতো তিনি আনেননি। প্রাণিসম্পদ অধিদফতর এফসিডিআই প্রকল্পের ছাগল বিতরণ করেছে। ছাগল কিনেছে ঠিকাদারের মাধ্যমে। সেই ছাগল একটি মরিছে সত্য। কিন্তু তার কী দোষ।’
এসব কথা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন খুলনার স্পন্দন পত্রিকার ডুমুরিয়া প্রতিনিধি সুব্রত ফৌজদার। তার দায়ের করা প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারার মামলায় মঙ্গলবার কারাগারে পাঠানো হয় দৈনিক প্রবাহের ডুমুরিয়া প্রতিনিধি আ. লতিফ মোড়লকে। ‘প্রতিমন্ত্রীর সকালে বিতরণ করা ছাগল রাতে মৃত্যু’ শিরোনামে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেওয়ায় তার বিরুদ্ধে ডুমুরিয়া থানায় মামলা করা হয় ৩১ জুলাই।
সুব্রত ফৌজদার বলেন,‘ ছাগলের মৃত্যুতো বড় বিষয় নয়। ওই স্ট্যাটাসের সঙ্গে মন্ত্রীর একটি ছবি দেওয়া হয়েছে। মৃত ছাগলের ছবি দেওয়া যেত। ছাগলের মালিকের ছবি দেওয়া যেত। কিন্তু মন্ত্রীর ছবি কেন?’
গত ২৯ জুলাই খুলনার ডুমুরিয়ায় এফসিডিআই প্রকল্পের আওতায় প্রাণিসম্পদ অধিদফতর কিছু পরিবারের মধ্যে হাঁস, মুরগী ও ছাগল বিতরণ করে। ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। তার বাড়িও ডুমুরিয়ায়।
সুব্রত ফৌজদার বলেন, ‘২৪-২৫টি ছাগল বিতরণ করা হয়। আর তারমধ্যে একটি ছাগল রাতে মারা যায়। ছাগল মারা গেছে সত্য। কিন্তু ওই ছাগলতো মন্ত্রী দেন নাই। আর মন্ত্রী সব ছাগল বিতরণও করেন নাই। একটি ছাগল দিয়ে তিনি চলে যান। তিনি যে ছাগলটি বিতরণ করেছেন সেটি মারা যায়নি।’
তার দাবি,‘ মন্ত্রীকে হেয় করার জন্য তার ছবি দিয়ে ছাগল মরার ওই স্ট্যাটাস দেওয়া হয়েছে। এলাকায় মন্ত্রী অনেক উন্নয়ন করেছেন। সেগুলো তারা দেখে না। সব কিছুকেই নেগেটিভ দেখে। আর স্ট্যাটাস দেওয়ার পর ব্রেকিং নিউজও দিয়েছে।’
একই এলাকায় বাড়ি, দু’জনই সাংবাদিক , একই এলাকায় সাংবাদিকতা করেন তারপরও ৫৭ ধারায় কেন মামলা করলেন? এমন প্রশ্নের জবাবে মামলার বাদী বলেন,‘ ‘মামলার পর তাকে জেলে নেওয়ায় এখন আমাকে সবাই নিন্দা করছে। আমিও লজ্জার মধ্যে পড়ে গেছি। তখন এত ভাবিনি। মন্ত্রী স্যারকে বলেছিলাম, স্যার এর একটা বিহিত হওয়া প্রয়োজন। তিনি বলেন, ‘তোমাদের যা ভালো মনে হয় করো।’ তিনি সরাসরি মামলা করতে বলেনি। কিন্তু স্যারের সম্মান রক্ষায় মামলা করেছি।’’
আ. লতিফ মোড়লের সঙ্গে কোনও ব্যক্তিগত শত্রুতা আছে কিনা জানতে চাইলে সুব্রত ফৌজদার বলেন,‘ প্রেসক্লাবে গ্রুপিং আছে। আমরা দুইজন দুই গ্রুপের সদস্য। কিন্তু ব্যক্তিগত সম্পর্ক ভালো। আমি ব্যক্তিগত কোনও কারণে মামলা করিনি। শুধু স্যারের সম্মানের জন্য মামলা করেছি।’
/এপিএইচ/
আরও পড়ুন:
৫৭ ধারার মামলায় ছাগল নিয়ে তোলপাড়