X
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪
৭ বৈশাখ ১৪৩১

ঢালচর নোয়াখালীর না ভোলার?

শাহেদ শফিক, ঢালচর থেকে ফিরে
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৫:৫৪আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৮:৩১

ঢালচরের কান্না: শেষ পর্ব

জলবায়ুর পরিবর্তন আর মেঘনার করাল গ্রাসে সর্বস্ব হারিয়ে প্রতিবছর উদ্বাস্তু হচ্ছেন নদীপারের হাজার হাজার মানুষ। এসব ভাসমান মানুষের বেশিরভাগেরই ঠিকানা এখন মেঘনার বুকে জেগে ওঠা নতুন চর, বেড়িবাঁধ কিংবা আশ্রয়কেন্দ্রে। এমনই একটি চরের নাম ঢালচর। তবে এই চরে আশ্রয় নিলেও তাদের জীবনে স্বস্তি নেই, অর্ধশতাব্দী ধরে তাদের লড়াই করতে হচ্ছে দস্যু, লুটেরা, ভূমিখেকোদের সঙ্গে। নোয়াখালী ও ভোলার মাঝামাঝি মেঘনার বুকে জেগে ওঠা এই চরে নেই প্রশাসনের সরাসরি তদারকি। নামমাত্র পুলিশ ক্যাম্প থাকলেও প্রভাবশালীদের ইচ্ছায় চলে এখানকার আইন-কানুন। চরটি সরেজমিন ঘুরে করা ধারাবাহিক প্রতিবেদনের আজ পড়ুন ষষ্ঠ পর্ব।

মনপুরা উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন চৌধুরী ও তার ভাতিজা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব নাজিম উদ্দিন চৌধুরী বিভিন্ন কৌশলে মালিকানা দাবি করে ঢালচরের বিশাল অংশ নিজেদের কর্তৃত্বে রেখেছেন।  এ সমস্যার এখনও যেমন সমাধান হয়নি তেমনই পুরো ঢালচরটি কোন জেলার অধীনে সেই সমস্যারও সমাধান হয়নি দীর্ঘ ৮০ বছরেও। মেঘনার বুকে জেগে ওঠা এই চরটি নোয়াখালী না ভোলার অন্তর্গত এর সুরাহা এখনও হয়নি।

১৯৪০ সালের দিকে জেগে ওঠা এই চরটি এক সময় নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার নিকটবর্তী থাকলেও এখন ভোলা জেলার মনপুরা থেকেই এর দূরত্ব কম। কিছুদিন আগেও এটি হাতিয়ার চর কিং ইউনিয়নের অন্তর্গত ছিল। এই চরটির বিষয়ে ১৯৬০ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান বোর্ড অব রেভিনিউর অতিরিক্ত সচিব এন আহমেদ ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদফতরের পরিচালককে লেখা এক অফিস আদেশে বলেছেন, ঢালচর নোয়াখালী জেলার সীমানায় নতুন জেগে ওঠা একটি চর এবং এটি নোয়াখালী জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। মনপুরা বাকেরগঞ্জ জেলার একটি থানা। তিনি নোয়াখালী ও তৎকালীন বাকেরগঞ্জ জেলার মধ্যে সীমানা নির্ধারণের বিষয়ে এই অফিস আদেশ জারি করেন।

মনপুরা ও হাতিয়া দ্বীপের মাঝখানে বাঁকানো ছোট্ট দ্বীপ ঢালচর (ছবি-গুগোল ম্যাপ থেকে নেওয়া) একই বছরের ১১ মে পূর্ব পাকিস্তান বোর্ড অব রেভিনিউর সদস্য (বিশেষ) এস বি হ্যাচ বার্নওয়াল এক অফিস আদেশে ঢালচর সম্পর্কে বলেন, এটি নোয়াখালী জেলার অন্তর্গত একটি নতুন চর। একই অফিস আদেশে নোয়াখালী জেলা কালেক্টরের পক্ষ থেকে ঢালচরে সেটেলমেন্ট কার্যক্রম শুরু হয়। ১৯৬০-৬১ সালে ঢালচর ৫১নং তৌজি হিসাবে এক হাজার ১৫৩টি বন্দোবস্ত নথির প্রত্যেক বন্দোবস্তের অনুকূলে দুই দশমিক ৫০ একর জমি জমাবন্দি করা হয়। ৪৪৬ জন বন্দোবস্তকারীর কাছ হতে কবুলিয়াত গ্রহণ করা হয়।

তার এমন আদেশের বিরুদ্ধে তৎকালীন বাকেরগঞ্জ জেলার জমিদার রাজেশ কান্ত রায় বরিশালের দ্বিতীয় সাব জজ আদালতে একটি মামলা দায়ের করে এতে চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দাবি করলে আদালত ১৯৬০ সালের ৮ সেপ্টেম্বর ঢালচরে চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।

প্রথম ২১টি সীমানা পিলারের একটি ১৯৮৭ সালের ২১ মে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. ইনামুল হকের সভাপতিত্বে আন্তঃজেলা সীমানা নির্ধারণ বিষয়ক এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, নোয়াখালী জেলার ১৯১৩-১৬ সালের সিএস জরিপের রেখা ও ভোলা জেলার ১৯৪০-৪২ ও ১৯৪৫-৫২ সালের আরএস জরিপের রেখার মধ্যবর্তী রেখাই নোয়াখালী ও ভোলা জেলার সীমানারেখা হবে। একই সিদ্ধান্তের ওপর ১৯৯৬ সালের ১৬ মার্চ ভূমি মন্ত্রণালয়ের শাখা-২ একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। সেই সিদ্ধান্ত মোতাবেক সরকারের এলজিইডি, ইউএনডিপি/ল্যান্ড প্রজেক্টের আওতায় ৯৪ সালে প্রণীত থানা নকশায় সুস্পষ্টভাবে দেখা যায়, ঢালচর সম্পূর্ণ নোয়াখালী জেলার অন্তর্গত।

২০০৮ সালের ৮ জুলাই নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক আবদুল হক ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদফতরের মহাপরিচালকের কাছে পাঠানো এক প্রতিবেদনে- ভূমি মন্ত্রণালয়ের ৯৬ সালের ১৬ মার্চের গেজেট বিজ্ঞপিত এবং ৬০ সালের পূর্ব পাকিস্তান বোর্ডে অব রেভিনিউর অতিরিক্ত সচিবের জারিকৃত পত্রের নির্দেশনা অনুযায়ী দুই জেলার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে সভা করে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদফতর কর্তৃক নোয়াখালী (হাতিয়া) ও ভোলার (মনপুরা) আন্তঃজেলা সীমানা নির্ধারণ করে দীর্ঘদিনের বিরোধ নিষ্পত্তির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান।

ঢালচরের ঘরবাড়ি ঢালচরের জমির মালিকানা সংক্রান্ত মামলা ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের কাছে ‘হেরে’ নোয়াখালী ও ভোলা জেলার চলমান সীমানা বিরোধ নিয়ে ২০১০ সালের মনপুরা উপজেলার জনৈক আবুল কাশেম হাওলাদার ও ওবায়দুল হক উচ্চ আদালতে একটি রিট দায়ের করেন। এই রিটের নেপথ্যে নাজিম উদ্দিন চৌধুরী ছিলেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ রয়েছে। রিটে আসামি বা সরকার পক্ষের কাছে নোটিশের কোনও কাগজপত্র পৌঁছানো হয়নি বলেও অভিযোগ তৎকালীন নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমানের। এতে ওই বছরের ৯ আগস্ট বাদীদের অনুকূলে একতরফা রায় হয়।

বিষয়টি নিয়ে মিজানুর রহমান ২০১০ সালের ১৮ আগস্ট আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন কর্মকর্তা (সলিসিটর) বরাবরে এক আবেদন করেন। এতে তিনি বলেন, হাতিয়া উপজেলার ঢালচর নিয়ে ভোলা জেলার সীমানা বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদফতরের মহাপরিচালকের সভাপতিত্বে চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে ভোলার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে গত ১০ ফেব্রুয়ারি এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসনের ওই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াধীন থাকা অবস্থায় ভোলার মনপুরা উপজেলার জনৈক আবুল কাশেম হাওলাদার ও ওবায়দুল হক জেলা প্রশাসকসহ ৮ জনকে বিবাদী করে হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করেন। ওই বছরের ২৪ মে আদালত পরের ১৪ জুনের মধ্যে বিবাদীদের প্রতি কারণ দর্শানোর আদেশ দেন। কিন্তু আদালত থেকে সংশ্লিষ্ট রিট আবেদনের আদেশ বা আরজির কপি না পাওয়ায় বিবাদীদের জবাব দেওয়া সম্ভব হয়নি। ফলে ওই বছরের ৯ আগস্ট বাদীদের অনুকূলে একতরফা রায় হয়। নোয়াখালী জেলা প্রশাসক ও সরকার পক্ষকে অজ্ঞাত ও প্রকৃত তথ্য গোপন রাখায় নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলা ঢালচরের বাসিন্দা এবং হাতিয়া উপজেলার স্বার্থ মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হয়। এছাড়া বড় ধরনের প্রশাসনিক জটিলতা সৃষ্টি হয়। পরে বিষয়টি নিয়ে আদালতে আপিল করা হয়।

ঢালচরের বাসিন্দারা এদিকে ২০১৬ সালে আদালতের এক নির্দেশে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদফতর নোয়াখালী-ভোলা আন্তঃজেলা সীমানা নির্ধারণের জন্য জরিপ কাজ শেষ করে এক স্মারকপত্র জারি করে। অধিদফতরের পরিচালক (জরিপ) আনোয়ার হোসেন স্বাক্ষরিত ওই স্মারকপত্র অনুযায়ী ঢালচর শতভাগ নোয়াখালীর সীমানায় রয়েছে। এর পরের বছর ২০১৭ সালে একই মহাপরিচালক দ্বিতীয়বার আরও একটি তদন্ত করেন। এতে তিনি ঢালচর ভোলা জেলার মনপুরা উপজেলার সীমানায় পড়েছে বলে উল্লেখ করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে অধিদফতরের একাধিক কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ভোলার বাসিন্দা নাজিম উদ্দিন চৌধুরী সচিব থাকাকালে তিনি প্রভাব খাটিয়ে এসব জরিপ নিজের চাহিদা মতো আদায় করে নেন।

এ বিষয়ে সাবেক সচিব নাজিম উদ্দিন চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আদালতের নথি গোপনের সুযোগ নেই। নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক যে তথ্য দিয়েছেন তা মিথ্যা। কোর্টের রায়েই জরিপ অধিদফতর সীমানা পিলার স্থাপন করছে। এখানে প্রভাব খাটানোর কোনও সুযোগ নেই। কারণ অধিদফতর অক্ষাংশ ও দাঘিমাংশ রেখা ধরেই জরিপ পরিচালনা করে।

এদিকে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খন্দকার মোহাম্মদ মুশফিকুল হুদার পাঠানো পৃথক দুটি উকিল নোটিশের জবাবে তৎকালীন ভোলার জেলা প্রশাসক মো. সেলিম উদ্দিনের জবাব থেকে জানা যায়, আদালতের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ঢালচর ওরফে চরডেমপিয়ারকে ভোলা জেলার অন্তর্ভুক্ত রেখে নোয়াখালী ও ভোলা জেলার মধ্যে সীমানা নির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত নেয় ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদফতর। এজন্য ঢালচরে ৩৬টি পিলার স্থাপনের স্থান চিহ্নিত করে ২০১৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি সরেজমিন উপস্থিত থেকে বুঝে নেওয়ার জন্য অধিদফতরের পরিচালক আনোয়ার হোসেন (জরিপ) একই বছরের ২৬ জানুয়ারি ভোলা ও নোয়াখালী জেলা প্রশাসকের কাছে পত্র দেন। বিষয়টি নোয়াখালী জেলা প্রশাসক হাতিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) অবহিত করেন। ওই বছরের ৩ মার্চ মনপুরা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) পিলার স্থাপনের স্থানগুলো বুঝে নেন।

ঢালচরের কয়েকজন শিশু শিক্ষার্থী এর পরিপ্রেক্ষিতে হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) খোন্দকার মোহাম্মদ রিজাউল করিম এক লিখিত স্মারকে জেলা প্রশাসককে জানান, ‘২০১৬ সালের ১৮ মে ভিন্ন একটি স্মারকে হাইকোর্ট বিভাগের রায়ের আলোকে ওই চরে প্রাথমিক জরিপ শেষ করে তুলনামূলক ম্যাপ প্রস্তুত, ২১টি পিলার নির্মাণের স্থান চিহ্নিতকরণ, সীমানা পিলার নির্মাণের চিহ্নিত স্থানগুলো উভয় জেলার প্রতিনিধিদের ওই বছরের ২৯ মে ঢালচরের মসজিদ মার্কেটে উপস্থিত থেকে বুঝে নেওয়ার জন্য ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদফতরের পরিচালক আনোয়ার হোসেন (জরিপ) পত্র পাঠান। এ জন্য অধিদফতরের প্রতিনিধি হিসেবে হেড কম্পিউটারের দায়িত্বপ্রাপ্ত মো. মোয়াজ্জেম হোসেনকে পিলার নির্মাণের স্থানগুলো চিহ্নিত করে দেওয়ার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২০১৬ সালের ১২ জুন গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতিতে ৪টি পিলার স্থাপন করা হয়। এ সময় বর্ষা মৌসুম ও নদীতে পানি বেড়ে যাওয়ায় বাকি ১৭টি পিলার স্থাপন অনিষ্পন্ন ও এগুলো স্থাপনের স্থান চিহ্নিত না করে জরিপ কাজ বন্ধ রাখা হয়। এ অবস্থায় নতুন করে জরিপ কার্যক্রম গ্রহণ করে আগে গ্রহণ করা কার্যক্রমের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নির্দেশনা কেন দেওয়া হলো এবং তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৭ সালের ২৬ জানুয়ারি জারি করা পত্র ও একই বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি একতরফা কার্যক্রম সম্পন্ন আমার বোধগম্য নয়। তাহলে পূর্বের সীমানা পিলার স্থাপন সংক্রান্ত কার্যক্রম কি আদালতের নির্দেশের বাইরে হয়েছে? এ অবস্থায় জনমনে বিভ্রান্তি ও জাতীয় কার্যক্রমের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদফতরের মহাপরিচালক বরাবরে পত্র দেওয়া হয়েছে।

এদিকে একই বিষয় অবহিত করে পৃথক এক স্মারকে তৎকালীন নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক বদরে মুনির ফেরদৌস ২০১৭ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদফতরকে একটি পত্র দেন। কিন্তু এ বিষয়ে জরিপ অধিদফতর থেকে বিষয়টি স্পষ্ট করে কোনও সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়নি।

চরের আবাদি জমি এদিকে, ঢালচরকে নিজের জেলা ভোলা জেলার অন্তর্ভুক্ত করে সীমান্ত সংক্রান্ত রায়ের অপব্যবহার করে সেখানে বসবাসরত  হাতিয়ার বাসিন্দারা উচ্ছেদ আতঙ্কে রয়েছে। আর একারণেই সীমানা সংক্রান্ত মামলাটি করা হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। তাদের দাবি আন্তঃজেলা সীমানার মাধ্যমে কারও জমির মালিকারা বাতিল হতে পারে না।

এদিকে আদালতের রায়ের পর মনপুরা উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার মো. জাহাঙ্গীর হোসেন উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) লেখা এক প্রতিবেদনে বলেন, ‘ঢালচর বন্দোবস্ত দেওয়ার উপযোগী। নকশায় প্লট কেটে বন্দোবস্ত দেওয়া যেতে পারে। অন্যথায় চরটি জবরদখলের আওতায় চলে যাবে।’

অথচ এই চরে বর্তমানে দুই হাজার ৫৫৩টি পরিবার সরকারিভাবে ভূমি বন্দোবস্ত পেয়ে বসবাস করে আসছে। এ ছাড়া আরও অন্তত এক হাজার পরিবার ভোগ দখল  শর্তে চরটিতে বসবাস করে আসছে। সার্ভেয়ারের এমন প্রতিবেদনে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন স্থানীয়রা।

ঢালচরে সরেজমিন অনুসন্ধানে বাংলা ট্রিবিউনের প্রতিবেদক শাহেদ শফিক

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাজিম উদ্দিন চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, মূল সমস্যা তো সীমানা নিয়েই। নোয়াখালীর প্রশাসক ঢালচরকে নিজেদের দাবি করে। এজন্য তারা তাতে বন্দোবস্ত দিয়েছে। আমরা কাউকে উচ্ছেদ করছি না। তবে সীমানা সংক্রান্ত রায় যদি আমাদের বিপক্ষে যেতো সেখানে তো আমরা এক মুহূর্তের জন্যও থাকতে পারতাম না। আমাদেরকেই উচ্ছেদ করা হতো। এখন হাতিয়ার বাসিন্দাদের উচিত হবে ভোলার জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করে পুনরায় বন্দোবস্ত নেওয়া।

আরও পড়ুন: 




পঞ্চমপর্ব ঢালচরই কি চরডেমপিয়ার? 

চতুর্থ পর্ব ঢালচরের কৃষকদের ধান যায় ‘লুটেরাদের’ গোলায়

 

তৃতীয় পর্ব ভূমিহীন উচ্ছেদে ‘সরকারি’ কৌশল!

দ্বিতীয় পর্ব ভূমিহীনের চরে সাবেক সচিবের অট্টালিকা!

প্রথম পর্ব ভূমিহারা মানুষের আশ্রয়ের আকুতি! (ভিডিও)

 

/টিএন/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
৫ বছর বন্ধ সুন্দরবন টেক্সটাইল, সংকটে শ্রমিকরা
৫ বছর বন্ধ সুন্দরবন টেক্সটাইল, সংকটে শ্রমিকরা
বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা গোল্ডকাপের ফাইনাল আজ
বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা গোল্ডকাপের ফাইনাল আজ
টিভিতে আজকের খেলা (২০ এপ্রিল, ২০২৪)
টিভিতে আজকের খেলা (২০ এপ্রিল, ২০২৪)
চাটমোহরে ঐতিহ্যবাহী ঘোড় দৌড় প্রতিযোগিতা শুরু
চাটমোহরে ঐতিহ্যবাহী ঘোড় দৌড় প্রতিযোগিতা শুরু
সর্বাধিক পঠিত
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
ইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
ইস্পাহানে হামলাইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!
সংঘাত বাড়াতে চায় না ইরান, ইসরায়েলকে জানিয়েছে রাশিয়া
সংঘাত বাড়াতে চায় না ইরান, ইসরায়েলকে জানিয়েছে রাশিয়া