ভারতের ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) জ্যেষ্ঠ নেতা রাম মাধব চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) বিরোধিতা করলেও দেশটির বিরোধী দল কংগ্রেসের মুখপাত্র মনিশ তেওয়ারি এই উদ্যোগে সমর্থন জানিয়েছেন।
ঢাকা গ্লোবাল ডায়ালগের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) ‘কানেক্টিং দ্য ইন্দো-প্যাসিফিক’ সেশনে কংগ্রেস নেতা মনিশ তেওয়ারি বলেন, ‘ভারতে যদি চীনের একটি ট্রাক চালিয়ে আমার পরিবারের অন্নের সংস্থান হয়, তবে ওই ট্রাক চালাতে আমার কোনও সমস্যা নেই।’
এর আগে গতকাল সোমবার রাম মাধব চীনের বিআরআইকে স্নায়ুযুদ্ধের উদ্ভবের সঙ্গে তুলনা করে এর সমালোচনা করেন।
মনিশ তেওয়ারি বলেন, ‘বাণিজ্যকে উৎসাহিত করে এমন যেকোনও পদক্ষেপ বা প্রকল্পকে ইতিবাচক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা উচিত।’
তিনি স্বীকার করেন, পাকিস্তানের কাশ্মিরে একটি বিতর্কিত প্রকল্পে বিনিয়োগের কারণে ভারত খুশি নয়। কিন্তু এ কারণে বিআরআই থেকে দূরে সরে থাকারও কোনও কারণ নেই।
চীন গত তিন দশক ধরে যে পুঁজি সংগ্রহ করেছে সেখান থেকে যদি চারপাশের দেশগুলোকে দিতে চায়, তবে কোনও সমস্যা হওয়ার কারণ নেই বলে তিনি মনে করেন।
মনিশ তেওয়ারি বলেন, ‘ভারত, চীন, আসিয়ান, দক্ষিণ এশিয়ার অতীত ভুলে গিয়ে সামনের দিকে অগ্রসর হওয়া উচিত।’
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘বিভিন্ন দেশ বিভিন্ন ধারণা নিয়ে কাজ করছে এবং দ্রুত কোনও সমাধানে পৌঁছানোর মতো সময় এখনও হয়নি।’
ইন্দো-প্যাসিফিক (আইপিএস) ধারণা এখনও পরিষ্কার নয় এবং এটি এখনও তৈরি হচ্ছে। তাই এখানে বিভ্রান্ত হওয়ার সুযোগ নেই বলে তিনি মন্তব্য করেন।
আসিয়ানের উদাহরণ দিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, তারা একটি কার্যকরী মডেল তৈরি করেছে এবং এটি করতে তাদের দুই দশক লেগেছে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত রীভা গাঙ্গুলী দাস বলেন, ‘আমরা এই অঞ্চলে উন্মুক্ত এবং সবাই আইনের শাসন মেনে চলবে, সেটি চাই।’
ইন্দো-প্যাসিফিক কোনও ক্লাব নয় এবং ভারত এটিতে সবার অংশগ্রহণ চায় বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, ‘ইন্দো-প্যাসিফিক এবং বিআরআই এক জিনিস নয়।’
চীনের ফুডান ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক মিনওয়ান লিন বলেন, ‘আইপিএস নিয়ে আমাদের অনেক প্রশ্ন আছে এবং আমরা এটিকে সন্দেহের চোখে দেখি।’
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও জাপান নিরাপত্তা সংলাপ করছে এবং অন্য কোনও দেশকে এখানে আমন্ত্রণ জানানো হয় না এবং জানি না কেন তাদের এই সংলাপের প্রয়োজন হলো।
চীনের এই অধ্যাপক প্রশ্ন তোলেন, আইপিএসে বলা হয়েছে, এটি হবে উন্মুক্ত এবং স্বাধীন। কিন্তু এই ‘উন্মুক্ত’ ও ‘স্বাধীন’ শব্দের মানে কী, তা তারা জানেন না।
আরও পড়ুন...
বিআরআই এবং ইন্দো-প্যাসিফিক একে অপরের পরিপূরক: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী