বিচারের রায় বাংলায় লেখার অনুরোধ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি আইনমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতিকে এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিচারের রায় বাংলায় লেখার ব্যবস্থা নিতে হবে। এটা আমি চাই, আপনারা ব্যবস্থা নিন। আমি মনে করি এটা একান্তভাবে দরকার।’
বুধবার (৪ নভেম্বর) সকালে নবনির্মিত ঢাকা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ অনুরোধ জানান। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ঢাকা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
রায় লেখায় ব্যবহৃত অনেক শব্দ ও কথা এবং টার্ম সাধারণভাবে ব্যবহার হয় না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনেকেই রায় সহজে বুঝতে পারে না। কিন্তু বাংলায় লেখা হলে কী রায় পেলো, তা বিচারপ্রার্থী নিজে দেখতে পারবে, জানতে পারবে, বুঝতে পারবে। এ ব্যাপারে যদি কোনও ফান্ড লাগে, সেটাও ব্যবস্থা করবো। কিন্তু আমি চাই, এটা যেন হয়।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের মামলার রায়গুলো কিন্তু ইংরেজিতে দেওয়া হয়। আমাদের দেশে এখন হয়তো একটু লেখাপড়ার সংখ্যা বাড়ছে। তারপরও অনেক সময় অনেকে সেই রায়টা বুঝতে পারেন না। তার সহায়ক যে থাকেন তিনি যা বোঝান তাই বুঝতে বাধ্য হন। রায় যদি কেউ বাংলায় না লিখতে পারেন, তাতে আপত্তি নাই। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে সেটা বাংলায় ট্রান্সলেশন করে এটা যেন প্রচার হয়, সে ব্যবস্থাটা করে দিতে হবে।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমি খুব প্র্যাকটিক্যাল চিন্তা করি। দীর্ঘদিন ধরে ইংরেজিতে লিখতে লিখতে অনেকে অভ্যস্ত হয়ে গেছেন। এখন আমি যদি ওটাকে খুব চাপ দেই বাংলায় সব লিখে ফেলতে হবে তাহলেই কিন্তু এটা থেমে যেতে পারে। কাজেই সেখানে বলবো, আর এখন ট্রান্সলেশন করা এমন কোনও কঠিন কাজ না। আর অনেক প্রফেশনাল ট্রান্সলেটরও থাকে এবং তাদের আপনারা কিছু ট্রেনিং করিয়ে নিতে পারেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘মাননীয় প্রধান বিচারপতিকে আমি অনুরোধ করবো, আপনারা একটু ব্যবস্থা নেন। কারণ এটা জুডিশিয়াল ব্যাপার। কারণ এর অনেক কথা, অনেক শব্দ, অনেক টার্ম, যেগুলো আমাদের সাধারণভাবে ব্যবহার হয় না। কিন্তু সেটা সহজভাবে যেন পারা যায়, কাজেই এই ট্রান্সলেশন করার জন্য কিছু লোককে যদি আপনারা ট্রেনিং দিয়ে দেন এবং তাদের কাজই থাকবে যেটাই লেখা হোক, সঙ্গে সঙ্গে ট্রান্সলেশন হয়ে যাবে এবং সেটাই প্রচার হবে, সঙ্গে সঙ্গে সাধারণ মানুষগুলো জানতে পারবে।’
পাশাপাশি তিনি আইনমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘আইনমন্ত্রী এখানে আছেন। আর এ ব্যাপারে যদি কোনও ফান্ড লাগে, সেটাও আমি ব্যবস্থা করবো। কিন্তু আমি চাই, এটা যেন হয়। যাতে ট্রান্সলেশনের সঙ্গে সঙ্গে প্রচার হয়। আর এখন তো অনলাইনে চলে যাবে। আরও সুবিধা, মানুষ জানতে পারবে।’
দ্রুততম সময়ে বিচার নিশ্চিত করতেও বিচারকদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন- দ্রুততম সময়ে বিচার নিশ্চিত করুন: বিচারকদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী