X
সোমবার, ০৬ মে ২০২৪
২৩ বৈশাখ ১৪৩১

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দফতরিদের চাকরি সরকারিকরণ অনিশ্চয়তার মুখে

এস এম আববাস
০২ অক্টোবর ২০১৭, ০৭:৪৯আপডেট : ০২ অক্টোবর ২০১৭, ১৩:২৮

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দফতরিদের চাকরি সরকারিকরণ অনিশ্চয়তার মুখে ‘অনেকের অকাল মৃত্যু হয়েছে। তাদের পরিবারের সদস্যরা দুর্বিষহ দিন কাটাচ্ছেন। তাই মমতাময়ী মায়ের কাছে ছেলে হিসেবে আমাদের আকুতি— আমরা যেন দু’বেলা দু’মুঠো ডাল-ভাত খেতে পারি; বাবা-মা, ভাই-বোন নিয়ে বাঁচতে পারি।’
কথাগুলো বলছিলেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দফতরি কাম প্রহরীরা। সরকারি স্কুলে কাজ করেও বেসরকারিভাবে নিয়োগ পাওয়া এসব কর্মচারীরা নিজেদের চাকরির সরকারিকরণের দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি জমা দেন। ওইসময় বাংলা ট্রিবিউনের কাছে নিজেদের দুঃখ-দুর্দশার কথা বলতে গিয়ে এসব কথা বলেন তারা। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানানো তাদের দাবি সহজে পূরণ হওয়ার নয় বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। প্রাথমিকভাবে তাদের জন্য নতুন করে বেতন নির্ধারণ করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানা গেছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশের ৩৬ হাজার ৯৮৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্থানীয় কমিটির মাধ্যমে বেসরকারিভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে দফতরি কাম প্রহরীরদের। সরকারি স্কুলেও তারা বেসরকারি কর্মচারী। তাই নিজেদের চাকরি সরকারি করার দাবিতে আন্দোলন করছেন এসব দফতরি কাম প্রহরীরা।
মন্ত্রণালয় বলছে, দফতরি কাম প্রহরীরা নিজেদের চাকরি সরকারি করার দাবিতে আন্দোলন করলেও এখনও তাদের পদই তৈরি হয়নি। ফলে সহজে তাদের চাকরি সরকারি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
সে কারণেই দফতরিরা সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুতি জানিয়েছেন, তিনি যেন এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেন। গত রবিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) তারা রাজধানীতে ছুটে আসেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে করেন মানববন্ধন।
বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কর্মচারী কল্যাণ সমিতির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন মোল্লা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গত বছর মারা গেছেন শরিয়তপুরের দফতরি কাম প্রহরী আক্কাস আলী ছৈয়াল। মৃত্যুর পর তার স্ত্রী আর দুই ছেলের সংসার চালাতে আমরা (উপজেলার দফতরিরা) সহায়তা করি। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রহরীর দায়িত্ব পালনকালে রাতে খুন হন যশোরের সাগর দত্ত। এ পর্যন্ত দফতরি মারা গেছেন ৩০ জন, চাকরি হারিয়েছেন ৫০ জন। ২৪ ঘণ্টা দায়িত্ব পালন করি, কিন্তু ঠিকমতো বেতন পাই না। জীবনের নিরাপত্তা নেই। এভাবে অনিশ্চয়তা নিয়ে আর কতদিন বাঁচব?’ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দফতরিদের চাকরি সরকারিকরণ অনিশ্চয়তার মুখে
কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাধন বাড়ই, ঢাকা বিভাগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলামসহ অন্যরাও একইভাবে তাদের অনিশ্চয়তার কথা তুলে ধরেন। তারা জানান, তাদের কোনও ছুটি নেই। কাজ করতে হয় ২৪ ঘণ্টা। তারা চাকরির সময়কাল আট ঘণ্টা ও সাপ্তাহিক ছুটির দাবিও জানান।
দফতরিরা জানান, স্থানীয়ভাবে তাদের মাসিক বেতন দেওয়া হয় ১৪ হাজার ৪৫০ টাকা। তবে এই বেতনও নিয়মত নয়। আর সরকারিভাবে শুধু উৎসব ভাতা দেওয়া হয়।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পিয়নের বেতনের সমান বেতন নির্ধারণ করে তাদের বেতন দেওয়ার চিন্তা-ভাবনা করছে সরকার। পরে পদ তৈরি করে পর্যাক্রমে সরকারিও করা হবে— এমন ভাবনা রয়েছে সরকারের। যদিও কবে নাগাদ তা হবে তার কোনোকিছুই ঠিক হয়নি।
দফতরি কাম প্রহরীদের আন্দোলন ও দাবির বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘স্থানীয়ভাবে দফতরি কাম প্রহরীদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয়ভাবেই তাদের বেতন দেওয়া হয়। এখনও তাদের জন্য কোনও পদ তৈরি হয়নি। তবে পিয়নের সমান বেতন ধরে তাদের বেতন দেওয়ার কথা ভাবছে সরকার।’

/টিআর/আপ-এআর/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ভৈরবে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারির অভিযোগে একজন গ্রেফতার
ভৈরবে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারির অভিযোগে একজন গ্রেফতার
গরু কিনতে যাওয়ার পথে বাবা-ছেলে নিহত
গরু কিনতে যাওয়ার পথে বাবা-ছেলে নিহত
লালমনিরহাট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে শপথবাক্য পাঠ করালেন প্রধানমন্ত্রী
লালমনিরহাট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে শপথবাক্য পাঠ করালেন প্রধানমন্ত্রী
রাফাহ শহরের একাংশ থেকে ফিলিস্তিনিদের সরে যেতে বললো ইসরায়েল
সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের প্রস্তুতি?রাফাহ শহরের একাংশ থেকে ফিলিস্তিনিদের সরে যেতে বললো ইসরায়েল
সর্বাধিক পঠিত
অভিযোগের শেষ নেই মাদ্রাসায়, চলছে শুদ্ধি অভিযান
অভিযোগের শেষ নেই মাদ্রাসায়, চলছে শুদ্ধি অভিযান
নিজেদের তৈরি ভেহিকেল পেরুকে উপহার দিলো সেনাবাহিনী
নিজেদের তৈরি ভেহিকেল পেরুকে উপহার দিলো সেনাবাহিনী
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে যা বললেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে যা বললেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী
আমার কাছে ৪৫টি বাচ্চা আছে, ডিবিকে বলেন নিয়ে যেতে: আদালতে মিল্টন সমাদ্দার
আমার কাছে ৪৫টি বাচ্চা আছে, ডিবিকে বলেন নিয়ে যেতে: আদালতে মিল্টন সমাদ্দার
কোন পথে এগোচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ?
কোন পথে এগোচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ?