X
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪
২০ বৈশাখ ১৪৩১

‘মুক্তিযুদ্ধের মতো পবিত্র বিষয়কে পুঁজি করে এই আচরণ তারা করতে পারে না ’

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৫:২৭আপডেট : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৬:২৮





‘উদ্বিগ্ন নাগরিক সমাজ’ এর গোল টেবিল বক্তব্য রাখছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উদেষ্টা সুলতানা কামাল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল বলেছেন, আমরা আজকে উদ্বিগ্ন এই কারণে যে, মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের নাম করে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছেন তারা, দায়িত্ব নিয়ে সেটা পারছেন না। সেজন্য আমাদের আরও বড় করে উদ্বেগটা প্রকাশ করতে হবে। তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের মতো একটি পবিত্র বিষয়কে পুঁজি করে, আমাদের সঙ্গে এই আচরণ তারা করতে পারে না।’

সোমবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘রাষ্ট্র-নাগরিক সম্পর্ক: দায়দায়িত্ব’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন তিনি।

‘উদ্বিগ্ন নাগরিক সমাজ’ এই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে।

সুলতানা কামাল বলেন, ‘‘তাদেরকে আমাদের বারবার মনে করিয়ে দিতে হবে তারা অঙ্গীকার করে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছিলেন। আরেকটা বিষয় দেখতে পাচ্ছি যে শহিদুল আলমকে ধরে নিলো, তার স্ত্রী এতেই সন্তুষ্ট যে সে কারাগারে আছে। এই বাচ্চাগুলোকে ধরে নিলো, অনেক দিন ধরে তাদের কোনও খবর নেই। অমানবিক, নিষ্ঠুর যন্ত্রণার মধ্যে অভিভাবকরা যখন দেখলেন বাচ্চাগুলো ডিবি অফিসে আছে, সেই অভিভাবকরা এতেই সন্তুষ্ট হয়ে বলছেন, ‘তারা ডিবি অফিসে আছে, তাদের মেরে ফেলা হয়নি।’ একটা জাতি যখন শুধুমাত্র প্রাণে বেঁচে আছে, এটুকুতেই সন্তোষ প্রকাশ করে, সেই জাতির অবস্থান কোথায় গেছে? সেই জাতি কোথায় দাঁড়িয়েছে? এসব দেখলে আমার মুক্তিযুদ্ধের সময়ের কথা মনে পড়ে। সেই জায়গায় যদি মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি আমাদের নিয়ে যায়, তাহলে আমি তাদের ধিক্কার জানাই। মুক্তিযুদ্ধের মতো একটি পবিত্র বিষয়কে পুঁজি করে আমাদের সঙ্গে এই আচরণ তারা করতে পারে না।’’

শহিদুল আলমের স্ত্রী ড. রেহনুমা আহমেদ বলেন, ‘এদেশের একজন লোককে হাত ও চোখ বেঁধে নিয়ে গিয়ে আমাদের সাহসী বাহিনীর জোয়ানরা খুশি হন। আমি শুনেছি যে চারটি বাহিনীর জোয়ানরা এই অভিযানে ছিলেন। আমাদের ট্যাক্সের টাকায় তো তারা এই ট্রেনিংগুলো পান। যখন অন্য প্রশ্ন ওঠে, তখন এটার সঙ্গে এই ট্রেনিংয়ের বিষয়টিও তোলা উচিত। আরেকটি বিষয় জানতে পেরেছি, আমাদের দেশে নাকি ইসরাইল থেকে থার্ড পার্টির মাধ্যমে সফটওয়্যার আমদানি করা হচ্ছে, যার মাধ্যমে একটি সর্বগ্রাসী সার্ভিল্যান্স ব্যবস্থা চালু করা হবে।’

গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার বলেন, ‘আমাদের দেশে সাম্প্রতিক আইন এবং রাষ্ট্রের কার্যক্রম দেখে মনে হচ্ছে, রাষ্ট্র এবং নাগরিকবিরোধী একটা জিনিস তৈরি হয়ে গেছে। সরকারের মনমানসিকতা এরকম যে, নাগরিককে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এবং তার জন্য যা যা প্রয়োজন তা করতে হবে। সম্প্রতি পাস হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি বিষয় নিয়ে আসা হয়েছে, তা হলো অফিসিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্ট। এটা মূলত অনেক আগে থেকেই অকার্যকর ছিল। এর মধ্য দিয়ে সরকার আমাদের একটা বার্তা দিতে চায়। সুস্থ মানুষের পক্ষে এবং রাজনৈতিক দলের পক্ষে এই আইন করা সম্ভব না।

অধ্যাপক ড. মেজবাহ কামাল বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার কথা বলছেন যারা, তারা চেতনাটিকে কতটুকু বুঝেছেন, সেটা একটা প্রশ্নের বিষয়। যেখানে স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি নাই, সেখানে কীসের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। রাষ্ট্রকে মানবিক হতে হবে, রাষ্ট্র দিন দিন ক্রমেই দানবে পরিণত হচ্ছে।’
মানবাধিকার কর্মী খুশি কবিরের সঞ্চালনায় এবং অজয় রায়ের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী, অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ, ছাত্রনেতা বাকি বিল্লাহ, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী প্রমুখ।

/এসও/এপিএইচ/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
সবজির কেজি এখনও ৬০ টাকার বেশি, ২০০ ছাড়িয়েছে ব্রয়লার
সবজির কেজি এখনও ৬০ টাকার বেশি, ২০০ ছাড়িয়েছে ব্রয়লার
পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলে বাস দুর্ঘটনায় নিহত অন্তত ২০
পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলে বাস দুর্ঘটনায় নিহত অন্তত ২০
মুক্তির পর থেকেই মামুনুল হককে ঘিরে অনুসারীদের ভিড়
মুক্তির পর থেকেই মামুনুল হককে ঘিরে অনুসারীদের ভিড়
কেমন থাকবে আগামী কয়েকদিনের আবহাওয়া?
কেমন থাকবে আগামী কয়েকদিনের আবহাওয়া?
সর্বাধিক পঠিত
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক
কামরাঙ্গীরচরে নতুন ভবন নির্মাণের অনুমতি দিলো ডিএসসিসি
কামরাঙ্গীরচরে নতুন ভবন নির্মাণের অনুমতি দিলো ডিএসসিসি
কুমিল্লায় বজ্রাঘাতে ৪ জনের মৃত্যু
কুমিল্লায় বজ্রাঘাতে ৪ জনের মৃত্যু
আরও কমলো সোনার দাম
আরও কমলো সোনার দাম
ব্যর্থতার অভিযোগে শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে আইনি নোটিশ
ব্যর্থতার অভিযোগে শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে আইনি নোটিশ